বিএনএ ডেস্ক: আবারও বেড়েছে মহামারি করোনা ভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। শহরগুলোর পাশাপাশি এবার জেলা পর্যায়ে ভাইরাসটির উচ্চ সংক্রমণ শুরু হয়েছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী জেলাসহ আশপাশের জেলায় সংক্রমণ বাড়ছে।মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের সংক্রমণের হার ৬ থেকে ১০ শতাংশে উঠে এসেছে।
১৭ থেকে ২৩ মে- এই এক সপ্তাহের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, ১০ থেকে ১৬ মে- এই এক সপ্তাহের তুলনায় ২২টি জেলায় নতুন রোগী বৃদ্ধির হার শতভাগ বা তার বেশি ছিল। এগুলোর মধ্যে ১৫টি জেলাই সীমান্তবর্তী।
এক সপ্তাহে ১০১ থেকে ৫০০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে এমন জেলাগুলোর মধ্যে সীমান্তবর্তী সাতটি জেলা হলো- রাজশাহী, দিনাজপুর,যশোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ,ময়মনসিংহ, কুমিল্লা ও সিলেট। এছাড়া এই তালিকায় আছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খুলনা, নোয়াখালী ও গাজীপুর।
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক সপ্তাহে (১৭–২৩ মে) ১৭৯ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। আগের সপ্তাহে শনাক্ত হয়েছিল ৭৩ জন। বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা সংক্রমণের হার ৬৩ শতাংশ এবং পার্শ্ববর্তী জেলা রাজশাহীতে এই হার ৪১ শতাংশে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় গত সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য বিশেষ লকডাউন চলছে।
সাতক্ষীরায় ঈদের আগে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ছিল ১৩ শতাংশ। গত সোমবার থেকে শনাক্তের হার ৪০ শতাংশের ওপরে।
সীমান্তবর্তী আরেক জেলা কুষ্টিয়ায় ১৮ মে থেকে সংক্রমণ বাড়ছে। এখন সেখানে রোগী শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ১৬ শতাংশ। এরমধ্যে ভারত থেকে আসা ১৪৫ জন এখন কুষ্টিয়ায় কোয়ারেন্টাইনে আছেন।
এমন পরিস্থিতি উদ্বেগজনক জানিয়ে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ১৮ মে দেশের ৩৭টি জেলাকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করেছে ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও খুলনায় বর্তমানে ৪০ শতাংশের ওপরে সংক্রমণ রয়েছে। ২০ থেকে ২৯ শতাংশ সংক্রমণ রয়েছে রাজশাহী, নাটোর ঝিনাইদহ,ঝালকাঠি, চুয়াডাঙ্গা, ফরিদপুর এবং সিলেটে। ১০ থেকে ১৯ শতাংশ সংক্রমণের হার রয়েছে সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর,রংপুর,বরিশাল, ভোলা, নড়াইল, সাতক্ষীরা, বগুড়া, গোপালগঞ্জ, যশোর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, মাগুরা, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা,টাঙ্গাইল,গাজীপুর মৌলভীবাজার, নোয়াখালী,ফেনী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারে।
এদিকে, এবারের ঈদে ঢাকা থেকে গ্রামে গেছেন কয়েক লাখ মানুষ। ফলে গ্রামগুলোতে স্বাভাবিকের থেকে কয়েকগুণ বেশি লোকসমাগম হয়েছিল। যা সংক্রমণে ঊর্ধ্বমুখীতার একটি কারণ হিসেবে দেখছেন স্বাস্থ্যবিদরা। অবশ্য ঈদের আগেই এই শঙ্কার কথা বলেছিলেন তারা।
সংক্রমণের দিকে থেকে সর্বোচ্চ দশটি জেলার চিত্রে দেখা যায়, ঢাকায় এ পর্যন্ত ৩ লাখ ২৭ হাজার ৭৮৮ শনাক্ত হয়েছে।আর চট্টগ্রামে ৪৭ হাজার ৫২৮, নারায়ণগঞ্জে ১৪ হাজার ৭৭৪, কুমিল্লায় ১৪ হাজার ৭৭৪, সিলেটে ১৩ হাজার ১৩৭, গাজীপুরে ১১ হাজার ৯৯০, কক্সবাজারে ১০ হাজার ৮৪০, বগুড়ায় ১৪ হাজার ২১৯, ফরিদপুরে ১০ হাজার ৭৩৮ এবং খুলনায় ১০ হাজার ৪৯৮ জন।
অন্যদিকে, সারা দেশের সংক্রমণশীলতার ওপর ভিত্তি করে জেলাগুলোকে ছয় ভাগে ভাগ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। যেখানে মাত্র দুটি জেলায় সর্বোচ্চ ২০ হাজারের উপরে আক্রান্ত রোগী রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত ৩ লাখ ২৬ হাজার ৩৩৩ এবং চট্টগ্রামে ৪৬ হাজার ৬১৬ জন।
বিএনএনিউজ/আরকেসি