বিএনএ: পবিত্র রমজান মাসে জনজীবনের পবিত্রতা ও শান্তি উপেক্ষা করে বিএনপির আন্দোলন ডাকার সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উন্নয়নের বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের আন্দোলনের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অন্তত এই রমজান মাসে তো জনগণকে আন্দোলন থেকে নিস্তার দেন।
সোমবার (২৭ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৫৩তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি দেশবাসীকে মনে করিয়ে দেন, রমজান মাসে বেতন বৃদ্ধির আন্দোলনে খালেদা জিয়া ১৭ শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা রমজান মাসে মানুষকে গুলি করে হত্যা করে, তারা রমজান মাসের প্রতি সম্মান দেখাবে কি করে? তাইতো তারা এই মাসে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। পবিত্র রমজান মাস ও মানুষের দুর্ভোগের প্রতি তাদের কোন অনুভূতিই নেই।’ তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কোন ইফতার পার্টি না করে রমজান মাসে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি লাঘবের জন্য তাদের মধ্যে এই অর্থ ও খাবার বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন দেখে বিশ্ব সম্প্রদায় বাংলাদেশের প্রতি সম্মান দেখাতে বাধ্য হয়েছে উল্লেক করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও উন্নয়ন না দেখা বিএনপি নেতৃবৃন্দ ও কয়েকজন তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং অব্যাহত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কারণে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত ১৪ বছরে বাংলাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
জাতির পিতাকে হত্যার পর ২১ বছর, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি’র ক্ষমতায় থাকা পাঁচ বছর এবং পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদসহ ২৯ বছর সময়কে বাংলাদেশের জন্য একটি কালো অধ্যায় হিসেবে বর্ণনা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সরকার দেশের মানুষের জন্য কালো মেঘ দূর করে একটি নতুন সূর্যের আলো নিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ সামনের দিকে যাত্রা শুরু করেছে এবং আলোর দিকে এগিয়ে যাবে।
বিএনপি-জামায়াত চক্রের আওয়ামী লীগ ও সরকারের বিরুদ্ধে চালানো অপপ্রচারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোনও মিথ্যার দ্বারা বিভ্রান্ত হবেন না। কিছু তথাকথিত স্থানীয় বুদ্ধিজীবীর পাশাপাশি অনেক আন্তর্জাতিক শক্তি রয়েছে-যারা বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও উন্নয়ন অব্যহত রাখতে চায় না।
সরকার প্রধান বলেন, ‘তারা (তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা) বাংলাদেশে কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না বলার পাশাপাশি দেশে-বিদেশে (সরকারের) বদনাম করতে ব্যস্ত। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, বিদ্যুৎ, কৃষি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ প্রতিটি খাতে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করেছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বিশ্বকে বাংলাদেশের সক্ষমতা দেখিয়েছে। পাশাপাশি মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেলসহ আরও অনেক কিছু নির্মাণ করা হচ্ছে ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে কখনোই বৃথা যেতে দেয়া হবে না। তাই, বাংলাদেশের জনগণ, আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে-যাতে জাতির পিতাকে হত্যার পর যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে, তাদের অনুসারীরা জনগণের স্বাধীনতা ও ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে।
তিনি আরো বলেন, অব্যাহত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও উন্নয়ন প্রচেষ্টার কারণে বাংলাদেশ এখন এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছেছে। ‘বাংলাদেশ এখন অদম্য গতিতে এগিয়ে যাবে এবং এই যাত্রায় কেউ বাধা দিতে পারবে না।
বিএনএনিউজ/এ আর
