31 C
আবহাওয়া
২:১৯ পূর্বাহ্ণ - মে ২২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » কৃত্রিম উপায়ে প্রবাল তৈরিতে চবির মেরিন সাইন্সেস

কৃত্রিম উপায়ে প্রবাল তৈরিতে চবির মেরিন সাইন্সেস


বিএনএ, চবিঃ বৈশ্বিক উষ্ণতা, জলবায়ু পরিবর্তন ও দূষণের কারণে ধীরে ধীরে নষ্ট হচ্ছে সমুদ্রের সৌন্দর্য খ্যাত ‘কোরাল’ বা প্রবাল। এটিকে কৃত্রিম উপায়ে কিভাবে প্রজনন করা যায় সেটি নিয়ে গবেষণা করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইন্সটিটিউট অব মেরিন সাইন্সসের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

‘কোরাল’ নষ্ট হওয়ার ফলে সমুদ্রের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ এবং জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে। এক্ষেত্রে কিভাবে এটিকে কৃত্রিম উপায়ে প্রজননের মাধ্যমে সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা যায় সেটাই গবেষণা করছেন ইন্সটিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

আমাদের সমুদ্রের জীবগুলোকে বাঁচাতে হলে ‘কোরাল’ বা প্রবালের ভূমিকা অপরিসীম। তাই কিভাবে এই কোরাল কৃত্রিম উপায়ে প্রজনন করা যায় এটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। ইতোমধ্যে আমরা আমাদের কাজে আংশিক সফল হয়েছি । আমাদের অনেক প্রবন্ধ বের হয়েছে। আশা করি পুরো গবেষণা শেষে এ নিয়ে আরো বিস্তারিত বলতে পারবো। তবে এতোটুকু বলতে পারি আমরা এতে সম্ভাবনা দেখছি। চবিতে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হওয়া গবেষণা উদ্ভাবন ও প্রকাশনা মেলায় এসে এভাবেই ‘কোরাল’ বা প্রবাল নিয়ে বলছিলেন এক তরুণ গবেষক।

উল্লেখ্য, প্রবাল হল অ্যান্থজোয়া শ্রেনীভূক্ত সামুদ্রিক প্রাণী। এদের নিকটাত্মীয় হল সাগর কুসুম। এরা সাগর কুসুমের মতই পলিপ তৈরি করে, তবে সাধারণত এরা কলোনি তৈরি করে বসবাস করে থাকে। কলোনির সমস্ত পলিপ জিনগত ভাবে (জেনেটিক্যালি) অভিন্ন হয়। এরা প্রাণী হলেও, জীবনের পূর্ণবয়ষ্ক অবস্থায় সাগরতলে কোন দৃঢ় তলের উপর গেড়ে বসে বাকি জীবন পার করে দেয় নিশ্চল হয়ে। প্রতিটি প্রবাল পলিপ যেখানে গেড়ে বসে সেখানে নিজের দেহের চারপাশে ক্যালসিয়াম কার্বনেট নিঃসরণের মাধ্যমে শক্ত পাথুরে খোলস বা বহিঃকঙ্কাল তৈরি করে। একটা প্রবাল পলিপের মৃত্যুর পরেও খোলসটি রয়ে যায় এবং তা অস্মীভূত হয়ে যেতে পারে। এরকম অস্মীভূত প্রবালের দেহাবশেষের উপর নতুন করে আবার প্রবাল বসতে পারে। এভাবে একটা কলোনি বহু প্রজন্ম ধরে চলার ফলে বড়সড় পাথুরে আকৃতি ধারণ করে। এভাবেই তৈরি হয় বড় প্রবাল দ্বীপ এবং প্রবাল প্রাচীর।

বিশ্বে যখন মানুষে-মানুষে দ্বন্দ্ব, মারামারি, হিংসা তখন বর্ণিল এই প্রাণীগুলো শুধু সারাটা জীবন নয়, মরণের পরও সংঘবদ্ধ হিসেবে বাস করে৷ সমাজের একটা অংশ হিসেবেই থেকে যায়৷ তবে এখানেই শেষ নয়, মৃত কোরাল’এর দেহ স্তূপাকারে জমা হয়ে নানা আকৃতির কাঠামো তৈরি করে৷ আমরা যাকে বলি ‘কোরাল রিফ’ বা প্রবাল দ্বীপ৷ অস্ট্রেলিয়ার সন্নিকটে গ্রেট ব্যারিয়ার দ্বীপপুঞ্জ পৃথিবীর বৃহত্তম প্রবালপ্রাচীর। বাংলাদেশের নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপটি একটি প্রবালদ্বীপ। অবশ্য কোরাল রিফ গঠন নির্ভর করে সাগরতলের পরিবেশের ওপর৷ বিশেষ করে তাপমাত্রা ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জীবের উপস্থিতিই জানান দেয় যে সেখানে এই ‘সাগর রত্ন’ আদৌ তৈরি হবে কিনা৷

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে গবেষণা উদ্ভাবন ও প্রকাশনা মেলা। বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও গণিতবিদ ড. জামাল নজরুল ইসলামের ৮৪ তম জন্মতিথি উদযাপন উপলক্ষে এ মেলার আয়োজন করা হয়।

এ গবেষণা মেলায় চবির ৪০টি বিভাগ, ৩৫টি ল্যাবরেটরি এবং চট্টগ্রামের আরও ২০টি প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নেয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও এতে অংশ নিয়েছে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বিসিএসআইআর, এটমিক এনার্জি কমিশন, বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফি রিসার্চ ইন্সটিটিউট, বন গবেষণা ইন্সটিটিউট, চিটাগাং রিসার্চ ইন্সটিটিউট ফর চিল্ড্রেন সার্জারি, পাসটো রিসার্চ গ্রুপ।

বিএনএ/ সুমন, এমএফ

Loading


শিরোনাম বিএনএ