বিএনএ, ডেস্ক : সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী, সংক্ষেপে এস কে সুর চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে অবসরে যান । তার আগেই শত কোটি টাকার মালিক বনে যান। দেশে ও বিদেশে নামে বে-নামে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। পিকে হালদার ও এস. আলম সহ বিভিন্ন শিল্পপতির, টাকা পাচারে এস. কে সুর চৌধুরীর পৃষ্টপোষকতা ছিল ওপেন- সিক্রেট।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক আলোচিত- সমালোচিত ডেপুটি গভর্নর কি সোনার চামচে খেতেন? এমন প্রশ্ন করেছেন অনেকেই। দূর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকা লকারে পেয়েছে সোনার চামচ, শার্টের বোতামসহ এক কেজি স্বর্ণালংকার, এক লাখ ৬৯ হাজার মার্কিন ডলার, ৫৫ হাজার ইউরো এবং ৭০ লাখ টাকার এফডিআর। সবমিলিয়ে যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
রোবরার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা সালেহা নুর ও দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, এস কে সুরের তিনটি লকারে, টানা সাড়ে ১০ ঘণ্টা তল্লাশি অভিযান চালায়।
সম্পদের বিবরণী দাখিল না করার অভিযোগে গত ২৩ ডিসেম্বর দায়ের করা মামলায় গত ১৪ জানুয়ারি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সহায়তায় সংস্থাটির উপপরিচালক নাজমুল হোসাইনের নেতৃত্বে একটি টিম, এসকে সুরকে গ্রেপ্তার করে। ১৯শে জানুয়ারি তার বাসায় অভিযান চালিয়ে নগদ ১৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং দুই কোটি ৬০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও বীমার নথি উদ্ধার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন ।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার দিকে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত, বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। ফিলিপাইনের একটি পত্রিকায় এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে, বিষয়টি জানাজানি হয়। সে সময়ে তৎকালীন গভর্নরের পদত্যাগ ও দুই ডেপুটি গভর্নরকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তখন আরও দুজন ডেপুটি গভর্নর ছিলেন। তারা হলেন আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান ও এসকে সুর চৌধুরী।
আলোচিত পিকে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় ২০২২ সালে এসকে সুরসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই বছরের ২৯শে মার্চ এসকে সুরকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ লুটপাটের ঘটনায়, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। কিন্তু সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে নিজেকে আড়াল করতে সমর্থ হন তিনি।
এসকে সুর চৌধুরী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্য বিভাগ থেকে অধ্যয়ন শেষ করে ১৯৮১ সালের মে মাসে সহকারী পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদান করেন। তিনি ২০০৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক, চট্টগ্রামের মহাব্যবস্থাপক ছিলেন, ২০১২ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নিযুক্ত হন।
সৈয়দ সাকিব