23 C
আবহাওয়া
৮:৩৬ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২৬, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ঘাস কাটছেন গোয়েন্দা সংস্থা?

ঘাস কাটছেন গোয়েন্দা সংস্থা?

ঘাস কাটছেন গোয়েন্দা সংস্থা?

বিএনএ, ঢাকা: হঠাৎ করে দেশে বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে রাজধানীতে শিক্ষার্থীদের কলেজে কলেজে মারামারি, রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের সামনে নামাজ আদায়, গরু জবাই করে কথিত জেয়াফত পালন, সনাতনী ইসকন নেতা চিন্ময় প্রভুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে করা সমাবেশে কথিত তৌহিদী জনতার হামলা, অন্যদিকে অহিংস গণ-আন্দোলনের নামে শাহবাগে গণজমায়েতের ঘটনা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এই অবস্থায় সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা জানতে চেয়েছেন গোয়েন্দা সংস্থা কী করছে? তারা নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছেন? নাকি ঘাস কাটছেন?’

বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, আওয়ামী লীগ ঘুমিয়ে নেই, নানারূপে ফিরে আসার চেষ্টা করছে। তারা প্রতিটি গ্যাঞ্জামে ঢুকে যাচ্ছে।

YouTube player

উপদেষ্টাদের দু-তিনজন ছাড়া কেউ রাজপথের নেতৃত্বে ছিলেন না দাবি করে বিন ইয়ামিন বলেন, ‘উপদেষ্টারা ব্যর্থ হচ্ছেন। আপনারা আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টির অপতৎপরতা কেন নিষিদ্ধ করতে পারছেন না, এ প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। আমরা বলেছিলাম বিপ্লবী সরকার, কিন্তু আপনারা এই রাষ্ট্রপতির কাছেই শপথ নিলেন। এখন উপদেষ্টা হয়ে বলছেন চরম গণ-অভ্যুত্থানের কথা। আপনারা তো সরকারে, তাহলে আপনারা কীভাবে গণ-অভ্যুত্থান করবেন? এটা তো সার্কাস খেলা না, এটা রাষ্ট্র পরিচালনা বলেন ছাত্র অধিকার পরিষদ সভাপতি।

এদিকে বাম ও ডান মানসিকতার কতিপয় নেতৃত্ব বা ব্যক্তি অভ্যুত্থানে এবং পরবর্তী সময়ে সরকারে নিজেদের শরিকানা নিশ্চিত না করতে পেরে উন্মত্ত হয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেছেন, তাদের উন্মত্ততা, বিপ্লবী জোশ ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড দেশটাকে অস্থির করে রেখেছে।

কয়েক দিন ধরে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা এবং কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে সোমবার দুপুরে ফেসবুকে এক পোস্টে এ কথা বলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব থেকে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে যাওয়া মাহফুজ আলম।

‘গণ-অভ্যুত্থান ও ছাত্র-তরুণবিরোধী শক্তি’ শিরোনামে দেওয়া ওই ফেসবুক পোস্টে দেশের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মাহফুজ আলম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পরের দশ-পনেরো বছরের ইতিহাস মুক্তিযোদ্ধাদের একে অপরকে হত্যার ইতিহাস। যারা চায়নি বাংলাদেশ শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়াক, তারা মুক্তিযোদ্ধাদের একে অপরকে দিয়ে হত্যা করিয়েছে। তাদের নিজেদের ভুল ছিল না তা নয়, কিন্তু আমাদের মুক্তিযোদ্ধাগণের একের পর এক হত্যা বাংলাদেশকে কীভাবে পিছিয়ে দিল, তা ইতিহাস একদিন বলবে।’

এবারের আন্দোলন সাহসী ছাত্র–তরুণদের নেতৃত্বে জনগণের আন্দোলন ছিল উল্লেখ করে মাহফুজ আলম লিখেছেন, ‘কিন্তু একটি দল এবং দেশি–বিদেশি সুযোগ সন্ধানী এস্টাবলিশমেন্ট গত তিন মাসে ছাত্রদের সম্মানহানি করেছে, বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন দিয়ে ছাত্রদের মধ্যে বিভেদ ঘটিয়েছে, অন্য একটি তরুণ দলকে লেলিয়ে দিয়েছে ছাত্রদের বিরুদ্ধে, তদুপরি ছাত্রদের সাথে সম্মানজনকভাবে ডিল তো করেইনি, বরং ছাত্রদের তারা শত্রু গণ্য করেছে।’

এসবের পরিণতি কি ভালো হচ্ছে নাকি হবে, সে প্রশ্ন তুলে মাহফুজ বলেছেন, ‘মনে রাখতে হবে, বিদেশি শক্তির কোনো সাধ্য নাই এ দেশের মানুষকে পদানত করার। কিন্তু গোলামির মানসিকতার কিছু গাদ্দার আর হঠকারীর এ শক্তি আছে। তারা গত তিন মাসে তা দেখাল। ছাত্রদের আজ সংঘাতের মুখে ঠেলে দিয়ে হত্যার মাধ্যমে ছাত্রদের বৈধতার সংকট হলে যারা লাভবান হবে, তারা সবাই এ উসকানি ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার সাথে জড়িত। ধীরে ধীরে আমরা সবই বলব। অথবা আপনারা চোখ খুললেই দেখতে পাবেন।’

অনেক মিত্রই আজ হঠকারীর ভূমিকায় উল্লেখ করে মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমরা আমাদের ব্যর্থতা স্বীকার করি। আমরা শিখেছি এবং ব্যর্থতা কাটানোর চেষ্টাও করছি। আমরা আরও চেষ্টা করব সবাইকে নিয়ে এগোনোর। কিন্তু হঠকারিতা এবং ছাত্রদের অন্যায্যতার চেষ্টা এ জাতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’

তিনি বলেছেন, ‘হঠকারিতা, উসকানি, ছাত্র-তরুণদের মধ্যে বিভেদ ও বিরোধ তৈরি, অভ্যুত্থানের শক্তিকে প্রতিক্রিয়াশীল করে তোলার অপচেষ্টা—সবই ব্যর্থ করে দেওয়া হবে, ইনশাআল্লাহ।’

৫ আগস্টের সকালের মতো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিকে অগ্রসর হওয়ার কথা তুলে ধরে মাহফুজ আলম বলেন, ‘এবারের সাংগঠনিকভাবে গড়ে ওঠা ঐক্য দীর্ঘস্থায়ী মুক্তির সুযোগ তৈরি করবে, ইনশাআল্লাহ।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম দেশের সার্বিক পরিস্থিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, একটি মহল পরিকল্পিতভাবে দেশে অস্থিরতা তৈরি করছে।

সারাদেশ যখন অস্থিরতার আগুনে জ্বলছে, তখন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে একটি স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসে বিএনপি মহাসচিব লেখেন, United we stand, divided we fall, যার বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘একতায় উত্থান, বিভেদে পতন।’ সেই স্ট্যাটাস দেওয়ার পর সেটিকে ঘিরে নানা ধরনের আলোচনা-কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে মন্তব্য করেছেন, তাহলে কী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সম্ভাব্য কোনো বিপদ টের পাচ্ছেন!

বিএনএনিউজ/ সৈয়দ সাকিব/ বিএম/এইচমুন্নী

Loading


শিরোনাম বিএনএ