বিএনএ, সাভার : ঢাকার ধামরাইয়ে জুলেখা আক্তার (১৯) নামে এক নববধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। প্রতিবেশীদের ধারণা জুলেখার স্বামীই তাকে হত্যা করেছে।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের কাওয়ালিপাড়া গ্রামের শামসুল হকের বাড়ি থেকে নববধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী মিরাজ হোসেন শেখ পলাতক রয়েছে।
জানা যায়, জুলেখা আক্তার ও মিরাজ হোসেন শেখের সাথে তিন মাস আগে বিয়ে হয়। নিহত জুলেখা আক্তার ধামরাই উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের উত্তর বাস্তা আদর্শ গ্রামের সোনা মিয়ার ছেলে। স্বামী মো. মিরাজ হোসেন শেখ (২৩) খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের মো. হান্নান শেখের ছেলে। গাংগুটিয়া ইউনিয়নের কাওয়ালিপাড়া গ্রামের শামসুল হকের বাড়িতে ভাড়া থেকে একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে ওই স্ত্রী অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে বাড়িওয়ালা ওদের ডেকে মিটমাট করে দেয়। এরপর থেকে ভালো ভাবেই চলছিল তাদের সংসার জীবন। হঠাৎ গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে জুলেখার স্বামী ঘরে শিকল দিয়ে বের হয়ে যায়। দিন গড়িয়ে রাত হলেও তার স্বামী আর বাড়ি ফিরে আসেনি। কিন্তু ওদের এক পরিচিত সেলিম নামের এক ব্যক্তি গতকাল সন্ধ্যার দিকে জুলেখার খোঁজ করতে আসে। তখন ঘরের দরজা বাহির থেকে আটকানো দেখে সে চলে যায়। পরে আজ সকালে আবার খোঁজ করতে আসলে পাশের রুমের এক ভাড়াটিয়া দরজা খুলে দেখে জুলেখা কাঁথা গায়ে দিয়ে শুয়ে আছে। তখন শত ডাকাডাকিতে ঘুম না ভাঙলে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও থানা পুলিশে খবর দেয়া হয়। পরে পুলিশ এসে গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখে এবং প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে নববধূকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয় সেলিম হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, মিরাজ ও জুলেখা ঠান্ডুর বাসায় ভাড়া থাকতো। সেখানে আমি ও আমার স্ত্রী ভাড়া থাকি। আমার স্ত্রী ও জুলেখা একই গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। সেই সুবাধে আমাদের সাথে তাদের পরিচয়। ওরা স্বামী স্ত্রী খুব ঝগড়া করত। তাই বাড়িওয়ালা ওদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে শামসুল হকের বাড়িতে বাসা ভাড়া নেয়। গতকাল আমাকে কয়েকবার ফোন দিয়ে বলে জুলেখা অফিসে গিয়েছে কিনা। পরে আমি এসে দরজা বাহির থেকে আটকানো দেখে চলে যাই। পরে আজ সকালে ফোন দিয়ে আবার আসতে বলে। পরে আজকে এসে দেখি জুলেখা রুমে শুয়ে আছে। ভাবছি ঘুমিয়ে আছে। পরে ঘুম থেকে জাগাতে গেলে দেখি জুলেখা মারা গেছে।
বাড়িওয়ালা শামসুল হক জানান, বেশকিছু দিন পূর্বে জুলেখা ও মিরাজের মধ্যে ঝগড়া হয়। তখন ওদের ডেকে সমাধান করে দেই। কয়েকদিন আর ঝগড়া হয় নাই। গতকালেও কোন ঝগড়া হয়নি। মিরাজ গতকাল দুপুরের দিকে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। পরে আজ দেখি জুলেখা রুমের ভিতরে মরে আছে। কিভাবে কি হলো কিছুই বলতে পারবো না। গলাতে যেহেতু আঘাতের চিহ্ন রয়েছে তবে হয়তো ওর স্বামীই মারছে।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
বিএনএ/ ইমরান, এমএফ