বিএনএ, টাঙ্গাইল : জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলো টাঙ্গাইলের মধুপুর অঞ্চলে উৎপাদিত আনারস। গত ২৪ সেপ্টেম্বর মধুপুরের আনারসকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি সনদ দেয় সরকারের ভৌগলিক নির্দেশক ইউনিট।
এই স্বীকৃতির ফলে অর্থকরী ফসলটির আন্তর্জাতিকভাবে ভাবমূর্তি বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। চাষাবাদে গুণগত পরিবর্তন ও বিদেশে রপ্তানির ক্ষেত্রও তৈরি হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
জানা যায়, মধুপুরের ইদিলপুর গ্রামের ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গারো সম্প্রদায়ের মিজি দয়াময়ী সাংমা প্রথম আনারস চাষ শুরু করেন। তিনি ভারতের মেঘালয়ে আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে সেখান থেকে ৭৫০টি চারা এনে তার বাড়িতে আনারস চাষ শুরু করেন। সেই চাষকে সমৃদ্ধ করে বতর্মানে বিভিন্ন অঞ্চলে আনারস চাষ হয়ে থাকে।
কৃষক গারো বাজারের ছানোয়ার হোসেন বলেন, “মধুপুরের আনারস যেভাবে চাষাবাদ বাজারসহ প্রভৃতি হওয়ার কথা ছিল তা আশানুরূপ হচ্ছিল না। ভৌগোলিক নির্দেশক হিসেবে স্বীকৃতির সুপারিশ পাওয়ায় একটা আশার জায়গা তৈরি হলো। আনারসের ইতিহাস ঐতিহ্য দেশ এবং বিশ্বে বহুগুণ বেড়ে গেল।”
জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সাবেক সভাপতি অজয় এ মৃ বলেন, “মধুপুরের প্রথম আনারসের চাষ শুরু হয় ইদিলপুর গ্রামে। এর পর থেকেই আনারস চাষের বিস্তৃতি ঘটে। ঐতিহ্য ধরে রাখতে আনারস চাষ জৈবিক উপায়ে করার পরামর্শ তার।”
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকুরা নাম্মী বলেন, “জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া মানে ভৌগোলিক নির্দেশক। আনারস তো মধুপুর ছাড়াও সিলেট, পার্বত্য এলাকা ছাড়াও আরও বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ হয়ে থাকে। এখন আনারস মানে দেশে এবং বিশ্ব বাজারে মধুপুরের আনারস। আনারস আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির যে চেষ্টা চলছিল, সেই সম্ভাবনার দ্বার এখন খুলে গেল।”
এ ব্যাপারে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন বলেন, “আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে দেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের জিআই স্বীকৃতিলাভ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মধুপুরের আনারসের জিআই জার্নালের জন্য অনুমোদিত হওয়াটা মধুপুরবাসীর জন্য অত্যন্ত আনন্দ ও গর্বের বিষয়। মধুপুরের আনারস সারাদেশেই জনপ্রিয়। এখন বিশ্ববাসীও এর সাথে পরিচিত হলো। এর ফলে বিশ্বে মধুপুরের আনারসের বাজার সৃষ্টি হবে।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম/এইচমুন্নী