বিএনএ ঢাকা: লালশাক ও শিম, শসা, ঢেঁড়স, পটলের মতো সবজিতে মিলছে ক্ষতিকর ভারী ধাতু। দীর্ঘদিন এসব খেলে ক্যানসারের মতো প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। রাজধানীতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আয়োজিত গবেষণার ফলাফল অবহিতকরণ সেমিনারে ৯টি সবজিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি নিয়ে করা গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করা হয়।
গবেষণার ফলাফল উপস্থাপনে বলা হয়, সম্প্রতি সবজিতে রাসায়নিকের মাত্রা নিয়ে গবেষণা করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম ও ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া। তারা বাজার থেকে ৯ ধরনের সবজি সংগ্রহ করেছিলেন। এর মধ্যে ছিল আলু, বেগুন, ঢেঁড়স, টমেটো, লালশাক, পটল, বাঁধাকপি, শসা ও মটরশুঁটি। গবেষণাটি করতে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, জামালপুর ও শেরপুর থেকে এসব সবজি সংগ্রহ করা হয়। এরপর তা থেকে খাবার অনুপযোগী পদার্থ আলাদা করে চালানো হয় নিরীক্ষা। দেখা গেছে, এসব সবজিতে লেড, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়ামসহ বেশকয়েকটি রাসায়নিকের উচ্চ মাত্রার উপস্থিতি রয়েছে। তবে এ তালিকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর মাত্রায় হেভিমেটালের উপস্থিতি পাওয়া গেছে লালশাকে। যেখানে সবজিতে ক্যাডমিয়ামের সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা প্রতি কেজিতে ১৯০ মাইক্রো গ্রাম, সেখানে লালশাকে পাওয়া গেছে ৭০৪.৩২ মাইক্রো গ্রাম। বেগুনে প্রতি কেজিতে ২৭৫.৬৬, ঢেঁড়সে ৩৪৯ ও টমেটোতে ১৯৫ মাইক্রো গ্রাম ক্যাডমিয়াম মিলেছে। ক্যাডমিয়ামের সর্বোচ্চ উপস্থিতি পাওয়া গেছে নারায়ণগঞ্জ থেকে সংগ্রহ করা নমুনায়। একইভাবে ক্রোমিয়ামের মতো ভারী ধাতুর মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি পাওয়া গেছে শিম, শসা, ঢেঁড়স, পটল ও লালশাকে। প্রতি কেজিতে যেখানে এই ধাতুর সর্বোচ্চ মাত্রা ২৩০০ মাইক্রো গ্রাম, সেখানে লালশাকে এর মাত্রা ছিল ২৮২৬ দশমিক ৮৬। ধাতুটি সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে ময়মনিসংহ জেলায় এবং সর্বনিম্ন নারায়ণগঞ্জে। লেডের মতো ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে বেগুন, বাঁধাকপি, শিম, শসা, ঢেঁড়স, পটল, টমেটো ও লালশাকসহ ৯টি সবজিতে। লেডের সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি ছিল নারায়ণগঞ্জে ও কম জামালপুরে। স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে বিশেষজ্ঞরা এসব শাক-সবজি দূষিত মাটি, পানি এবং শিল্পাঞ্চলের আশপাশে চাষ না করার পরামর্শ দিচ্ছেন।
গবেষকরা জানান, যেসব সবজিতে হেভি মেটাল রয়েছে সেগুলো দীর্ঘদিন খেলে ক্যানসারের মতো প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।ফলের গবেষণা উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন প্রধান। তার গবেষক দলের পরীক্ষায় আম, লিচু, বরই ও পেয়ারার ৩২০টি নমুনায় কীটনাশক রেসিডিউ পরীক্ষা করে গড়ে ১০ শতাংশের মধ্যে ক্ষতিকর মাত্রায় কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
বিএনএনিউজ/ আরএস