লাইফস্টাইল ডেস্ক: দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। রঈদের দিনটি অনেকের কেটে যায় রান্নাঘরেই। রান্নার পাশাপাশি কোরবানির মাংস এখান থেকেই করা হয় বণ্টন ও সংরক্ষণ। ব্যস্ততম দিনটিতে রান্নাঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও গুছিয়ে রাখাও জরুরি
ঈদের দিনে পরিবার-আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের জন্য মাংস এবং অন্যান্য রান্না করতে হয়। ফলে প্রয়োজন হয় প্রচুর মসলা ও তৈজসপত্রের। ঈদের জন্য হাঁড়িপাতিল, ছুরি, চাকু, বঁটি, মসলা তৈরির যন্ত্রপাতি ইত্যাদি নিয়ে আগে থেকেই প্রস্তুত থাকুক আপনার রান্নাঘর। রান্নাঘরের প্রস্তুতি ও গুছিয়ে নেওয়ার কিছু কৌশল জেনে নিন।
প্রস্তুতি যেমন হওয়া চাই
কোরবানি ঈদে ঘরের যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হবে তা হলো ফ্রিজ। ঈদের আগের দিনই ফ্রিজটি পরিষ্কার করে রাখুন। পাশাপাশি মাংস সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজে যথেষ্ট জায়গা রাখুন। এ ছাড়া ছুরি, বঁটি, দা, কাঁচি, চপার বোর্ড, হাঁড়িপাতিল ইত্যাদি প্রয়োজনীয় তৈজস গুছিয়ে রাখুন। মাংস-চর্বি ইত্যাদি পরিষ্কারের জন্যও প্রস্তুতি থাকতে হবে। ময়লা ফেলার জন্য ঢাকনাওয়ালা ডাস্টবিন তৈরি রাখুন ঘরে। ওভেন, রাইসকুকার, ব্লেন্ডার ও ফুড প্রসেসরও ঠিক করে রাখা উচিত।
ধার দিন ছুরি-বঁটি-চাপাতি
ঈদের দিন সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় ঘরের দা-ছুরি-বঁটি-চাপাতিসহ কাটাকাটির যন্ত্রগুলো। এই দিনে মাংস ও হাড় কাটতে হয় বলে আগে থেকেই দা-ছুরি-বঁটি-চাপাতি ধার দিয়ে রাখা উচিত। ধার দেওয়ার জন্য এ সময় কিছু মানুষ যন্ত্র নিয়ে পাড়া-মহল্লায় ঘোরাঘুরি করে। চাইলে তাদের কাছ থেকেও ধার দিয়ে রাখতে পারেন। এ ছাড়া কামারের দোকানে গিয়েও ধার করিয়ে আনতে পারেন। কসাই মাংস কেটে দিলেও চর্বি ছাড়াতে ছুরি বা বঁটির প্রয়োজন হবে। কাটাকাটির সময় চর্বি লেগে ধার কমে গেলে লেবু দিয়ে ছুরি বা বঁটি ঘষে নিলে সুবিধা পাবেন।
রান্না ঘরে মসলা থাকা চাই পর্যাপ্ত
কোরবানির ঈদে মাংসের নানা পদ রান্না হয় বলে অন্য সময়ের তুলনায় মসলা লাগে বেশি। তাই ঈদের আগেই আদা, রসুন, পেঁয়াজ, হলুদ, মরিচ, তেজপাতা, গরম মসলা, গোলমরিচ, জায়ফল, শাহি জিরা, জয়ত্রি, পোস্তদানা, সয়াসস, তেল, টক দই ও প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে রাখা উচিত। গুঁড়া মসলাগুলো আলাদা কৌটায় আর আদা, রসুন, পেঁয়াজ বেটে রাখলে সুবিধা পাবেন। মসলা বাটা বা গুঁড়া করার জন্য ব্লেন্ডারকেও প্রস্তুত করে রাখুন। রান্নার সময় সহজেই যা ব্যবহার করতে পারবেন। বাজারে এখন আলাদা প্যাকেটজাত মসলা পাওয়া যায়, চাইলে একটু বেশি করে সংগ্রহ করে নিতে পারেন।
প্রস্তুত থাক হাঁড়িপাতিল
কোরবানির সময় মাংস রান্না ও জাল দেওয়ার জন্য প্রয়োজন নানা ধরন ও আকারের হাঁড়িপাতিল। প্রথম দিন বেশি পরিমাণে রান্না করতে হয়, ফলে দরকার হয় বড় পাতিলের। বছরজুড়ে এই বড় পাতিলগুলো তেমন একটা কাজে লাগে না বলে ময়লা হয়ে থাকে। ঈদের আগে রান্নাঘরকে প্রস্তুত করে রাখতে বড় পাতিলগুলো ধুয়ে-মুছে রাখুন। সহজে রান্নার জন্য এ সময় আপনার বেশ কাজে দেবে প্রেশার কুকার। মাংস ছাড়াও সেমাই-ফিরনি-পোলাও ইত্যাদি রান্নার জন্য অন্য পাতিলগুলোও থাকুক হাতের কাছে।
বাড়তি কিছু বাজার করে রাখা
ঈদের পরে দুয়েকদিন দোকানপাট-বাজার ইত্যাদি খোলা পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে। তাই নিত্যদিনের কিছু বাড়তি বাজার করে রাখলে সমস্যায় পড়তে হবে না। এ ছাড়া তেল, পোলাওর চাল, মাংসের মসলা, সেমাই, ফিরনি, গুঁড়া দুধ, চিনি, বাদাম, কিশমিশ, দারুচিনি, এলাচ, তেজপাতা ইত্যাদিও প্রয়োজনের তুলনায় একটু বাড়তি পরিমাণে কিনে রাখতে পারেন।
আরও যা খেয়াল রাখতে হবে
এই দিনে মাংস আর রক্তের দাগে ও গন্ধে আপনার রান্নাঘর ভরে যাবে। তাই দিনের কাজ যত দ্রুত শেষ করে ফেলা যায় ততই ভালো। নোংরা পরিষ্কারের জন্য ভিনেগার, ক্লিনার, ডেটল, স্যাভলন অথবা ব্লিচিং পাউডার হাতের কাছে রাখুন।
ঈদের আগেই রান্নাঘর কেন্দ্র করে কিছু ছোট ছোট বিষয়ে বাড়তি মনোযোগ দিলে নির্ঝঞ্ঝাট একটি দিন পার করতে পারবেন পরিবারের সবাইকে নিয়ে। ঈদের দিনটি আনন্দে কাটুক সবার।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ