স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রথম পাড়ি দেন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার(২৫জুন) নিজ হাতে টোল পরিশোধ করে তিনি গাড়ি নিয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়েছেন। এদিন উদ্বোধন হলেও সাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়নি সেতু। রোববার(২৬জুন) ভোর থেকে এটি সবার চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। স্বপ্নের সেতুতে পারি দেয়ার অপেক্ষায় ছিলেন বহু মানুষ।
বাইক নিয়ে প্রথম পদ্মা পার যে পুরুষের
রোববার(২৬জুন) ভোরের আলোয় সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেয়ার পর ৫টা ৫০ মিনিটে প্রথম যানবাহন হিসেবে একটি মোটরসাইকেলকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। নির্ধারিত টোল পরিশোধ করে প্রথম গাড়ি হিসেবে ছেড়ে যায় আমিনুল ইসলামের মোটরসাইকেল। তিনি মাওয়া টোল প্লাজার ৩ নম্বর লেইনে ১০০ টাকা টোল দিয়ে পদ্মা সেতু পার হন।
এর পর একে একে প্রাইভেটকার, বাস, ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্সসহ অনুমোদিত যানগুলো টোলপ্লাজা পেরিয়ে মাওয়া প্রান্তের দিকে ছুটে চলেছে।
বাইক নিয়ে প্রথম পদ্মা পার হন যে নারী
আমজনতার মধ্যে মোটরসাইকেলে পদ্মা সেতু পাড়ি দেয়া প্রথম নারী হিসেবে নাম লিখিয়েছেন লেডি বাইকার রোবায়েত রুবা।
তিনি রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা। তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে ঢাকা থেকে সকালে পদ্মা সেতুতে যান।
রোববার ভোরে সাধারণের জন্য খুলে দিলেই জড়ো হয় কয়েক হাজার মোটরসাইকেল আরোহী। কে তার বাহন নিয়ে পদ্মা সেতুতে প্রথম উঠবেন তা ছিল অনেকটা প্রতিযোগিতার বিষয়। আর সেই সৌভাগ্যবান নারী হলেন রোবায়েত রুবা। পেশায় তিনি একজন ইউটিউবার।
সফলতার গল্প জানান এ ইউটিউবার। সাংবাদিকদের বলেন, এ অনুভূতি ব্যক্ত করার মতো না। সকালে মিরপুর শেওয়াড়াপাড়া থেকে বাইক চালিয়ে এসেছি। অনেক আনন্দ লাগছে। যদিও আমার বাড়ি ঢাকায়, তবে এই সেতু নদীর ওই পারের মানুষের জন্য বড় পাওয়া।
সেতুতে ট্রাফিক আইন মেনে সঠিকভাবে গাড়ি চালানোর আহ্বানটাও জানালেন রুবা। বললেন, সেতুতে নিয়ম অনুয়ায়ী গাড়ি চালানো উচিত। লিখে দিয়েছে ৮০ কিলোমিটার। আমি আইন মান্য করে বাইক চালিয়ে এসেছি। সবাইকেই একই অনুরোধ করব।
পায়ে হেঁটে পদ্মা পার
সবার ইচ্ছা। স্বপ্ন সেতু দেখা ও পার হওয়া। আবেগের কারণে অনেকে রোববার সকালে পায়ে হেঁটেও পদ্মা সেতু পার হয়েছেন। চালুর প্রথম দিন সকালে অনেকে এভাবেই পাড়ি দিয়েছেন পদ্মা নদী। কেউ আবার গাড়ি থামিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে কাটিয়েছেন সময়। ফ্রেমে বন্দি করেছেন মুহূর্তগুলো।
যদিও সেতু কর্তৃপক্ষ আগে এ সব নিষেধ করেছিল। প্রথমদিন বলে হয়তো শিথিল সব কিছু । পায়ে হেঁটে সেতু পার, গাড়ি দাড় করিয়ে ছবি তোলাও যাবে না। সেতু কর্তৃপক্ষ আগেই জানিয়েছিল।
সেতু পারাপারে ‘রমরমা ব্যবসা’
অনেকেই বাস, মাইক্রো, প্রাইভেটকার ভাড়া করে আনন্দ ভ্রমণে বেরিয়েছেন। কেউ বা মোটরসাইকেলে চড়ে। এসব দর্শনার্থীদের নিয়ে সেতু পারাপারে চলছে ‘রমরমা ব্যবসা’। বিশেষ করে মোটরসাইকেল চালকদের। তারা সেতু পার হতে জনপ্রতি নিচ্ছেন ২০০ টাকা।
মোটরসাইকেলের মতো মাইক্রোবাসেও বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী পরিবহন নিষিদ্ধ। কিন্তু নিয়মের তোয়াক্কা কেউ করছে না। ১১ আসনের একটি মাইক্রোবাসে নেয়া হচ্ছে ১৫ থেকে ১৭ জন যাত্রী। একেকজনের ভাড়া ২০০ টাকা। এক হাজার ৩০০ টাকা টোল দিয়ে একেক ট্রিপে লাভ থাকছে প্রায় ২ হাজার টাকা।
ভোরের দিকে মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়ে যায়। ৬টার আগে আগে সকালে সেতুর দুই প্রান্তের ১৪টি টোল গেট খুলে দেয়া হয়।
টোলপ্লাজা সূত্র জানায়, সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ৬৬০টি যানবাহন মাওয়া থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর উদ্দেশে ছেড়ে গেছে।
বিএনএনিউজ২৪, জিএন