বিএনএ,চট্টগ্রাম: ‘কর্ণফুলীতে ২০ ফুট পলিথিনের স্তর জমেছে। ১০ বছর ড্রেজিং না করলে তো এ পরিমাণ পলিথিন জমা হওয়ারই কথা’ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো তাজুল ইসলাম। এসময় সংশ্লিষ্টদের দোষী সাব্যস্ত করা হবে বলেও হুশিয়ারি দেন তিনি।
শনিবার (২৬ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন, কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি, দখল ও দূষণ রোধে গৃহীত কার্যক্রম পর্যালোচনার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় কর্ণফুলী নদীর দু’পাশের সৌন্দর্য ও পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে বন্দরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করে মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর তাদের জায়গা লিজ দিতেই পারে। কিন্তু তাই বলে নদীর দুই পাশে কারখানা বানানোর জমি লিজ দিলেও তদারকি না করায় নদী ও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করার অধিকার তো সরকার দেয় নাই। নদীর পাড়ে এসব অবকাঠামো নির্মাণ করা হলে নদী দখল ও দূষণ বাড়বে। পরিবেশ এবং কর্ণফুলী নদীর স্বকীয়তা ও সৌন্দর্য নষ্ট হবে। যা কোনো অবস্থাতেই করতে দেয়া হবে না। কারণ এই নদীর সাথে চট্টগ্রাম বন্দর ও দেশের অর্থনীতির স্বার্থ জড়িত। কর্ণফুলী নদীর দখল ও দূষণের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন তিনি।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামকে দেশের অর্থনীতির প্রাণ ও চট্টগ্রাম শহরকে নিয়ে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে চলমান ৯ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প তদারকির জন্য বিভাগীয় কমিশনারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি চট্টগ্রামের মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করবেন। জলাবদ্ধতা নিরসনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তা শিগগিরই শেষ হবে। আর কাজ শেষ হলে নগরবাসী এর সুফল পাবে। প্রকল্পে কোনো ত্রুটি থাকলে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই সংশোধন করা হবে।
চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতার জন্য নালা-নর্দমা ভরাট, খালে ময়লা আবর্জনা ফেলা এবং মানুষের অসচেতনতা দায়ি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দুই পাড় জুড়ে যেসব কারখানা হচ্ছে তাদের অনেকগুলোর বর্জ্য শোধনের কোনো ব্যবস্থা নেই। কারখানাগুলো অপরিশোধিত অবস্থায় তাদের রাসায়নিক বর্জ্য নদীতে ফেলছে। এতে নদীর পানি নষ্ট হচ্ছে। তাই যেসব বিষয় নদী ও পরিবেশের ভারসাম্যকে হুমকির মুখে ফেলছে তা আমলে নিতে হবে এবং যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নে যথেষ্ট আন্তরিক। মহানগরীর সার্বিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহে অনেক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে যা চলমান আছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম শহর অত্যাধুনিক শহরে রুপান্তরিত হবে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী এ কে এমন ফজলুল্লাহ, সিডিএ’র চেয়ারম্যান জহিরুল আলম, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক লে. কর্নেল শাহ্ আলী প্রমুখ।
বিএনএনিউজ/মনির