বিএনএ, কুবি : ৫ বছর পরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষক ডরমেটরিতে ফের চুরির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৫ মে) ডরমেটরি-১ এর ২য় তলায় রাত আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শারমিন সুলতানার কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারি ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডরমেটরি-১ এর ২০২ নং কক্ষের দক্ষিণ দিকের বেলকনির গ্রিল ভাঙ্গা। এ অংশে কোন সিসিটিভি না থাকায় কে বা কারা করেছে সেটি জানা যায় নি। তবে ভুক্তভোগী শিক্ষক জানান, মোবাইল ফোনের সাথে ল্যাপটপ এবং নগদ প্রায় ২০ হাজার টাকা থাকলেও সেটি চুরি হয়নি।
সে সময়ে দায়িত্বরত আনসার সদস্য আবুল কাশেম হাওলাদার বলেন, আমি তখন ডিউটিতে ছিলাম। কিন্তু ডরমেটরির পিছনের অংশে কোন আলো কিংবা যাতায়াতের সুবিধা না থাকায় সেদিকে আমাদের যাওয়ার সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক শারমিন সুলতানা বলেন, আমি রাত আড়াইটার দিকে ল্যাপটপে বসে কাজ করতেছিলাম। তখন ওয়াশরুমে গেলে ফিরে এসে দেখি মোবাইল ফোন নেই। কিন্তু সাথে ল্যাপটপ এবং ড্রয়ারে নগদ ২০ হাজার টাকার মত থাকলেও চোর সেটা নেয়নি। বিষয়টি আমাকে হতবাক করেছে। শুধুমাত্র একটি মোবাইল ফোনের জন্য কিভাবে চোর আসে। এ ঘটনায় আমি আতঙ্কিত। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় এ বিষয়ে জিডি করে এসেছি।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ডরমিটরিতে অবস্থানরত আবাসিক শিক্ষকরা, লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রভাষক ফয়জুল ইসলাম ফিরোজ বলেন, দীর্ঘদিন ডরমিটরিতে এমন ঘটনা ঘটেনি। ডরমিটরিতে অবস্থানরত আবাসিক শিক্ষকদের নিরাপত্তা সমস্যাসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভোগান্তি পোহাতে হয়। প্রশাসনের উচিত সমস্যা সমাধানে বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেয়া।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাদেক হোসেন মজুমদার বলেন, ডরমিটরিতে চুরি হয়েছে শুনে আমরা সেখানে দেখতে গিয়েছি, গ্রিল কাটছে এমন কোন আলামত দেখতে পাইনি। তবে পূর্বে থেকে গ্রিলটি ভাঙা ছিল। সেদিক দিয়ে চোর ঢুকতে পারে। আমাদের লোকবলের কোন গাফিলতি নেই। পেছনের অংশে দু’টি সিসি টিভি স্থাপনের জন্য প্রক্টর স্যার বরাবর বলা হয়েছে।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, আমি এখনো জিডির কপি হাতে পাইনি। থানায় গিয়ে দেখবো। জিডি করা হলে সে অনুযায়ী তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমরা নিরাপত্তায় থাকা আনসার সদস্য এবং শিক্ষকের সাথে কথা বলেছি। ঘটনার তদন্ত হওয়া পর্যন্ত কে বা কারা চুরি করেছে সে বিষয়ে বলতে পারছি না।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৭ সালের ৪ মার্চ ডরমেটরি-১ এর ১০১নং এবং ৩০২নং ফ্ল্যাটের তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা মো. খলিলুর রহমানের কক্ষ থেকে এক লাখ টাকা ও ১টি ল্যাপটপ এবং মো. আতিকুর রহমানের কক্ষ থেকে চল্লিশ হাজার টাকা ও একটি ল্যাপটপসহ বেশকিছু মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
বিএনএনিউজ২৪.কম/হাবিবুর রহমান হাবিব/এনএএম