বিএনএ, চবি: ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখায় ৫০ জন মহান মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কতৃপক্ষ। আজ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
রোববার (২৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে আয়োজিত এই সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তাদেরকে সম্মানিত করা হয়। এদিন সকালে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে ও প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নূরুল আজিম সিকদার।
এছাড়া অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম, প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার, সহকারী প্রক্টর আফজালুর রহমান, রোকন উদ্দিন, সৌরভ সাহা জয়সহ আরও উপস্থিত ছিলেন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ।
সম্মাননা পাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- জাহাঙ্গীর আলম, জাহিদ হোসেন, জাহাঙ্গীর চৌধুরী, রফিক আহম্মাদ (বিল্লা), অমল মিত্র, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন শাহ আলম, মুকুল দাস, মোহাম্মদ ইসমাইল, আনোয়ারুল আজিম, প্রফেসর ডা. জাহিদ শরিফ, মোহাম্মদ ইউসুফ, এ. এইচ. এম. জিলানী চৌধুরী, মো. আবুল ফয়েজ, নির্মল চন্দ্র নাথ, ফজরুল হক ভূঁইয়া, মহিউদ্দিন আহমেদ রাশেদ, বদিউল আলম, মোহাম্মদ ইউনুস, এ কে এম সরওয়ার কামাল দুলু, মো. গোফরানুল হক ও আলহাজ্ব সুলতানুল কবির চৌধুরী (মরণোত্তর)।
অন্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে রয়েছেন- মোহাম্মদ আবু ইউসুফ চৌধুরী, রাজেন্দ্র প্রসাদ চৌধুরী, মোহাম্মদ সোলায়মান, সৈয়দ মোহাম্মদ মাহবুব উল আলম, পংকজ কুমার দস্তিদার, নাসির উদ্দীন চৌধুরী, নওশের আলী খান, এস এম কামাল উদ্দিন (মরণোত্তর), মো. ইদ্রিস (মরণোত্তর), আবুল কাশেম চিশতী, ইউসূফ সালাহউদ্দিন আহমদ, মো. ছালেহ আহমেদ, শহীদুল হক চৌধুরী (সৈয়দ), আহামদ উল্লাহ, মোহাম্মদ নূর উদ্দিন, আবু সাঈদ সরদার, শেখ সাইফুল আনোয়ার, নুরুল বশর, শাহজাহান খান, হাজী জাফর আহমদ, সৌরেন্দ্র নাথ সেন, সেলিম উল্লাহ, রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ ইলিয়াছ মিঞা, শেখ মো. নুরুজ্জামান (মরণোত্তর), ফজলুল হক ভূঁইয়া, আফছার উদ্দিন আহমদ, মোখতার আহমদ (মরণোত্তর) ও এস. এম. ফজলুল হক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের ফলস্বরূপ আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। গতবছরের ন্যায় এবারও ৫০জন মহান মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখা মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা প্রতিবছর সম্মান জানিয়ে যাব। আমাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, চবি উপ-উপাচার্য, সিন্ডিকেট সদস্য, শিক্ষক সমিতির সদস্য অধ্যাপক ড. দানেশ মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর চৌধুরী, এ. এইচ. জিলানি চৌধুরী প্রমুখ। এছাড়া জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
স্বাধীনতা যুদ্ধের অতীত স্মৃতিচারণে মুক্তিযোদ্ধা এ. এইচ. জিলানি চৌধুরী বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে এদেশের জন্য যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ি। নানা ত্যাগ স্বীকার করে আমরা নয়মাস ব্যাপী যুদ্ধ করেছি। পেয়েছি আমাদের স্বাধীন পতাকা। বর্তমান প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের সেবায় নিয়োজিত থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, গেল বছর ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান করে চবি প্রশাসন। ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা দেওয়া হয়। এই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে চবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
বিএনএ/ সুমন, এমএফ