বিএনএ ডেস্ক: চট্টগ্রামে নবনির্মিত পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে (পিসিটি) প্রথমবারের মত ভিড়েছে বড় জাহাজ। এর মধ্য দিয়ে টার্মিনাল উদ্বোধনের আগেই বড় জাহাজ ভেড়ানোর রেকর্ড গড়লো ২০০ মিটার দীর্ঘ ও ১০ মিটার গভীরতার বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ ‘মেঘনা ভিক্টোরি’। এর আগে, চলতি বছরের শুরুতে বন্দরের সিসিটি-১ নম্বর জেটিতে বড় জাহাজ ‘কমন এটলাস’ ভেড়ানো হয়েছিল। চট্টগ্রাম বন্দরে এতদিন নয় দশমিক পাঁচ মিটার ড্রাফট ও ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভেড়ানো হতো।
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাহাজটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাত দেশকে দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে চলেছে, যা দৃশ্যমান। আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। আশা করি ২০৪১ সালের আগেই আমরা লক্ষ্য মাত্রায় পৌঁছে যাবো।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্বে বঙ্গোপসাগরে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সমগ্র পৃথিবীতে দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। সামনে এগিয়ে যেতে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। এসব চ্যা্লেঞ্জও থাকতো না, যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে লুটপাট-দুর্নীতি শুরু হয়েছিল। দীর্ঘ ২১ বছরে তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। বিশেষ কোনো কাজ হয়নি।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধু একটি শক্ত ভিত রচনা করেছিলেন- উল্লেখ করে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু টেরিটোরিয়াল জোন ও মেরিটাইম বাউন্ডারি অ্যাক্ট প্রণয়ন করেন। বঙ্গবন্ধুর সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে শুধু মেরিটাইম খাত থেকেই ২০০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভের জন্য পেতাম।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ ‘মেঘনা ভিক্টোরি’ কানাডার ভ্যাঙ্কুভার বন্দর থেকে সাড়ে ৬২ হাজার মেট্রিক টন গম নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে কুতুবদিয়া এলাকায় পৌঁছায়। সেখানে জাহাজ থেকে কিছু পণ্য লাইটারিং করে নামিয়ে জাহাজটিকে চট্টগ্রাম বন্দরের আলফা এঙ্করেজে আনা হয়। সেখান থেকে শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব পাইলট দিয়ে ও টাগবোটের সহায়তায় পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের জেটিতে ভেড়ানো হয়। রোববার উদ্বোধনের পর জাহাজটি আবার বহির্নোঙরে নেয়া হয়। পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে বর্তমানে শুধু সরকার আমদানিকৃত চাল খালাস করা হচ্ছে। তবে টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য এখনো কোনো অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তাই চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনায়ই জাহাজে পণ্য লোড-আনলোড করা হচ্ছে। দেড়মাস পর বড় আকারের জাহাজ ভিড়লো বন্দরের নতুন টার্মিনাল পিসিটিতে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৩ জুন পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল প্রকল্পের অনুমোদন দেয় সরকার। এক হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের শেষ সময় ছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে ব্যয় আরো এক হাজার ৩৯৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাবের সঙ্গে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়ে আরডিপি বরাবর আবেদন করে প্রকল্প সংস্থা।
বিএনএ, বিএম