বিএনএ, জামালপুর: জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের স্থগিত মেরুরচর হাসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রের পুনঃ নির্বাচন ঘোষণা করেছেন নির্বাচন কমিশন। আগামি ৭ ফেব্রুয়ারি স্থগিত ভোট কেন্দ্রের পুনঃ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে কেন্দ্রের ২ হাজার ৯৩৮ ভোটারের মধ্যে ১ হাজার ৬৯২ ভোটার মামলার আসামি।
বর্তমানে মেরুরচর হাসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রায় শতভাগ পুরুষ ভোটার পলাতক । গ্রেপ্তারের ভয়ে ৫ জানুয়ারি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে মেরুরচর গ্রামের প্রায় ৩ হাজার মানুষ।
জানা যায়, ৫ জানুয়ারি জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের মেরুরচর হাসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোট কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলছিলো। এক পর্য়ায়ে মেরুরচর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোয়ার হোসেন হকের নেতৃত্বে একদল লোক কর্তব্যরত পুলিশের উপর হামলা করে। একই সময় হামলাকারিরা চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোয়ার হোসেন হকের নির্দেশে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করার চেষ্টা করে। হামলাকারিরা পুলিশের ওয়াকিটকি ছিনতাই করে নেন। হামলাকারিরা পুলিশের একটি পিক-আপ ভ্যান ( জামালপুর-ঠ-১১-০০২৩) গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১৬০ বুলেট ও ৩২ টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। হামলায় বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আব্দুর রহিম, মামলার বাদী এসআই আবু শরীফসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর ১৯ জন সদস্য গুরুত্বর আহত হয়।
এব্যাপারে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোয়ার হোসেন হক কে হুকুমের আসামী করে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়। যার মামলা নং-২। মামলার বাদী বকশীগঞ্জ থানার এসআই আবু শরিফ। মামলায় ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৫জন ব্যাক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের ভয়ে লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। বর্তমানে মেরুরচর গ্রাম প্রায় শতভাগ পুরুষ শূন্য। মহিলাদের উপস্থিতিও খুবই কম। ৪ গ্রামের ১৫টি মসজিদের আযান বন্ধ হয়ে যায়। মসজিদে নামাজও বন্ধ ছিলো। শুক্রবারের জুম্মার নামাজও হয়নি। ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত অসুস্থতা জনিত কারণে মেরুরচর গ্রামে ৪ জনের মৃত্যু হয়। মৃত ব্যাক্তিদের দাফন কাফনে কেউ শরীক হওয়ার সাহস পাননি। বহিরাগত লোকজন মরদেহ দাফন করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রামের একজন উন্নয়নকর্মী বলেন, মামলার পর থেকে তিনি পলাতক। যাঁরা ওই ঘটনায় জড়িতও নন, তাঁরাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। পুলিশ ঘরবাড়িতে লোকজনকে খুঁজছে। প্রথম দিকে ঘরবাড়িতে নারী ও শিশুরা ছিল। পুলিশ তাঁদের কয়েকজনকে মারধর করেছে। ওই চার গ্রামে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, সাধারণ মানুষকে হয়রানির প্রশ্নই উঠে না। তাঁরা (গ্রামের লোকজন) ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য এসব বলছে। যাঁরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন, তাঁরা বাড়িতে থাকতে পারেন। একই সঙ্গে ইমামদের জানানো হয়েছে, মসজিদে আজান দেন এবং নামাজ পড়ান। তারপরও যদি কোনো পুলিশ সদস্য এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
বিএনএ/শাহীন, এমএফ