বিএনএ কক্সবাজার: কক্সবাজারে ধর্ষণের শিকার হওয়া ওই জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়নি। এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি জিল্লুর রহমান। ধর্ষণে অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
শনিবার( ২৫ ডিসেম্বর) জিল্লুর রহমান সাংবাদিকদের আরও বলেন, ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়া বা চার-পাঁচজন মিলে জোর করে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটনা ঘটেনি। ওই নারী কক্সবাজারে তিন মাস ধরে টানা অবস্থান করছেন। কল লিস্ট পরীক্ষা করেও তার অবস্থান নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বিভিন্ন হোটেলে থেকেছেন। ওই নারী কেন কক্সবাজারে অবস্থান করছেন, পুলিশকে তা জানিয়েছেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি বলেন, ওই নারীর কক্সবাজারে অবস্থানের সঙ্গে ধর্ষণের বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা। সম্মতি ছাড়া এই ঘটনা ঘটেছে বলে ভুক্তভোগী দাবি করেছেন। ধর্ষণকারীরা তার পূর্ব পরিচিত এবং ৯৯৯ এ কল দেয়ার বিষয়টিও সত্য নয়।
জিল্লুর রহমান বলেন, ধর্ষণ মামলাটি থানায় রুজু হওয়ার পর তদন্ত করার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশকে দেয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ ভিকটিম নারীর মেডিকেল রিপোর্টসহ নানা প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করেছে। মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে। সব বিষয় মাথায় রেখে মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এর আগে ওই নারী কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হামীমুন তানজীনের আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে ওই নারী জানান, তার ৮ মাস বয়সী শিশুর হার্টে ছিদ্র রয়েছে। তার চিকিৎসায় ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। টাকা জোগাড় করতে কক্সবাজার এসেছেন তিনি। গত ৩ মাস ধরে শহরের অন্তত ৭টি হোটেলে অবস্থান করেছেন।
উল্লেখ্য, আলোচিত এই ধর্ষণের ঘটনায় গত ২৩ ডিসেম্বর রাতে কক্সবাজার সদর থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগীর স্বামী। এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন আশিকুর রহমান এবং তার তিন সহযোগী ইস্রাফিল খোদা ওরফে জয়, মেহেদী হাসান ওরফে বাবু ও রিয়াজ উদ্দিন ছোটন।
মামলার তদন্তভার দেয়া হয়েছে টুরিস্ট পুলিশকে। আসামিদের মধ্যে জিয়া গেস্ট ইনের ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে বৃহস্পতিবার রাতেই গ্রেফতার করে র্যাব। এদের মধ্যে প্রধান আসামি আশিকের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, ইয়াবা, অস্ত্রসহ ১৭টি মামলা রয়েছে। ইস্রাফিল খোদা জয়ের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা আছে।
এদিকে, ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার জিয়া গেস্ট ইন হোটেল ম্যানেজার রিয়াজুদ্দিন ছোটনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রিয়াজুদ্দিনকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হামীমুন তানজিনের আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমাণ্ডে নেয়ার আবেদন করে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ। শুনানি শেষে এই আদেশ দেন বিচারক।
সংবাদ মাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক রুহুল আমিন।
বিএনএনিউজ/আরকেসি