পাকিস্তানী শাসনচক্র দুনিয়াকে দেখাতে চায়, ‘হক সাহেব দুই বাংলাকে এক করতে চান, তিনি পাকিস্তানের দুশমন, তিনি রাষ্ট্রদ্রোহী। আর আমরা তাঁর এই রাষ্ট্রদোহী কাজের সাথী।’
আজ প্রকাশিত হলো পর্ব : ৩২৩
বোধহয় ২৯শে মে হবে, আমরা রাতের প্লেনে রওয়ানা করলাম। দিল্লি কলকাতা হয়ে ঢাকা পৌঁছাবে বিওএসি প্লেন। আমাদের সাথে চিফ সেক্রেটারি হাফিজ ইসহাক ও আইজিপি শামসুদ্দোহা সাহেব ঢাকা রওয়ানা করলেন। দোহা সাহেব কেন এবং কার হুকুমে করাচি গিয়েছিলেন আমার জানা ছিল না। হক সাহেব পরে আমাকে বলেছেন, তিনিই হুকুম দিয়েছেন।
কলকাতা পৌঁছাবার কিছু সময় পূর্বে জনাব দোহা হক সাহেবকে যেয়ে বললেন, “স্যার আমার মনে হয় আপনার আজ কলকাতা থাকা উচিত। কি হয় বলা যায় না, এদের ভাবসাব ভাল দেখলাম না। রাতেই ইস্কান্দার মির্জা এবং এন.এম. খান ঢাকায় মিলিটারি প্লেনে রওয়ানা হয়ে গেছেন। ঢাকা এয়ারপোর্ট কোনো ঘটনা হয়ে যেতে পারে। যদি কোনো কিছু না হয়, তবে আগামীকাল প্লেন পাঠিয়ে আপনাদের নেওয়ার বন্দোবস্ত করব।” হক সাহেব সবই বুঝতেন, তিনি নান্না মিয়াকে ও আমাকে দেখিয়ে দিয়া বললেন, “ওদের সাথে আলাপ করুন।”
আমার কাছে দোহা সাহবে এসে ঐ একই কথা বললেন। আমি তাকে পরিষ্কার বলে দিলাম, “কেন কলকাতায় নামব? কলকাতা আজ আলাদা দেশ। যা হয় ঢাকায়ই হবে।” নান্না মিয়াও একই জবাব দিলেন। আমার বুঝতে বাকি থাকল না, কেন তিনি গায়ে পড়ে এই পরামশর্ দিতে এসেছেন। তিনি যে এই পরামর্শ দিচ্ছিলেন তা করাচি থেকেই ঠিক করেই এসেছেন। পাকিস্তানী শাসনচক্র দুনিয়াকে দেখাতে চায়, ‘হক সাহেব দুই বাংলাকে এক করতে চান, তিনি পাকিস্তানের দুশমন, তিনি রাষ্ট্রদ্রোহী। আর আমরা তাঁর এই রাষ্ট্রদোহী কাজের সাথী।’
পরিকল্পনা : ইয়াসীন হীরা
গ্রন্থনা : সৈয়দ গোলাম নবী
সম্পাদনায় : মনির ফয়সাল
সূত্র: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী, প্রকাশনা- দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, পৃষ্টা নম্বর:২৬৯-২৭০।
আগের পর্ব পড়ুন : বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পর্ব : ৩২২