বিএনএ ডেস্ক: ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ। সোমবার (২৫ অক্টোবর) রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে পুনরায় ইলিশ শিকার শুরু হবে। নদীতে নামার জন্য ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন জেলেরা। সরব হয়ে উঠেছে জেলে পল্লীগুলো।
প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখতে চলতি অক্টোবরের ৪ তারিখ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ ধরা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এই ২২ দিন দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ ছিল।
মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, এ বছর মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের অংশ হিসেবে ৪ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ৮৯২টি মোবাইল কোর্ট ও ১৫ হাজার ৩৮৮টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এবং ৮৮৪ লাখ মিটার অবৈধ জাল আটক করা হয়।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ইলিশ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে গত কয়েক বছর নেয়া পদক্ষেপগুলো আগামিতেও কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে এবং দামও কম থাকবে। দেশের মোট মাছ উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ ইলিশ থেকে আসে বলেও জানান তিনি।
মৎস্য অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, গত এক দশকে বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।
মৎস্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিশের হিসাবে, বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৬ শতাংশ এখন বাংলাদেশে আহরিত হচ্ছে। বাংলাদেশের পরই ইলিশের উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারত। ৫ বছর আগে দেশটিতে বিশ্বের প্রায় ২৫ শতাংশ ইলিশ উৎপাদিত হতো।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ইলিশ মূলত সারা বছরই ডিম ছাড়ে। তবে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর এই দুই মাসের চারটি অমাবস্যা-পূর্ণিমায় ডিম ছাড়ে বেশি। বিশেষ করে অক্টোবরের মানে আশ্বিনের দুইটি অমাবস্যা-পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। এই সময় ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে মা ইলিশ রক্ষা করা, যাতে তারা নিরাপদে নদীতে এসে ডিম ছাড়তে পারে। এই ডিম রক্ষা করতে পারলে তা থেকে জাটকার জন্ম হবে। সেই জাটকা রক্ষা করা গেলে দেশে বড় আকারের ইলিশের উৎপাদন বাড়বে। এই ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর আবার জাটকা ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আসবে বলে জানান তারা।
বিএনএনিউজ/আরকেসি