বিএনএ, চবি: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, রিভার ক্লাব ও গ্রীন ভয়েসের যৌথ আয়োজনে ‘আমাদের জনজীবনে নৌপথ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হয়েছে নদী সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় লাইব্রেরি চত্বরের সামনের রাস্তায় নদী সচেতনতামূলক প্লেকার্ড সম্বলিত র্যালির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে লাইব্রেরি অডিটোরিয়ামে ইমাম হাসান সৈকত ও নওশীন তাসনিম নিঝুম এর সঞ্চালনায় এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়ার সভাপতিত্বে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে, মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রীপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক ড. কিবরীয়া বলেন, হালদা বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র, যা শুধু বাংলাদেশই নয় বিশ্বের অন্যান্য দেশেও পরিচিতি পেয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একক নদী হিসেবে সর্বোচ্চ অবদান রেখে আসছে এই হালদা নদী। একারণেই হালদা নদীকে ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ” এছাড়াও তিনি হালদা নদী সংরক্ষণে আইডিএফ, পিকেএসএফ, নৌ পুলিশ, হালদা নদী রিসার্চ ল্যাবরেটরি এবং ২০১৬ সাল থেকে নদী ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
সেমিনারে মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে কবির বিন আনোয়ার বলেন, শিক্ষার্থীদের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখতে হবে, জানতে হবে কিভাবে স্মার্ট উপায়ে নদী রক্ষা করা যাবে। আমাদের সচেতনতার মাধ্যমে রক্ষা পাবে নদী দূষণসহ নানা অনিয়ম। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক নদী সংশ্লিষ্ট কাজে। হালদা নদী রক্ষার ক্ষেত্রে সরকার বদ্ধপরিকর যে কোনো প্রয়োজনে পাশে থাকবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ- উপাচার্য বেনু কুমার দে বলেন, শিক্ষার্থীদের নদী বান্ধব হতে হবে, নদী রক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ভূমিকাই পারবে আগামীতে সুন্দর ও স্বচ্ছ ধারার নদীর প্রবহমান চিত্র বজায় রাখতে।
সেমিনারে অন্যান্য অতিথিবৃন্দরাও আলোচনা করেন, অতিথিদের আলোচনায় নদী সচেতনতার নানা দিকগুলো উঠে আসে, তাদের বক্তব্যে উপস্থাপন করেছেন সকলের সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা নদীকে রক্ষা করতে পারবো, আমরা প্রকৃতিকে রাঙিয়ে তুলতে পারবো তার স্বীয় রূপ-লাবণ্যে। তাই আমাদের উচিত যার যার অবস্থান থেকে নদী রক্ষায় ভূমিকা রাখার চেষ্টা করা।
উল্লেখ, ১৯৯৮ সাল থেকে সারা বিশ্বে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। নদীর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা এবং বাংলাদেশের নদী গুলোর সামগ্রিক অবস্থা বিবেচনায় রেখে ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশেও পালিত হয় বিশ্ব নদী দিবস। বিশ্ব নদী দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য নদী সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই নদীগুলোর উপকারিতা এবং নদীগুলো দূষণের ফলে যে দুর্যোগ নেমে আসতে পারে তা সম্পর্কে অজ্ঞ। তাই এ বিষয়ে সরকারের আরো গুরুত্বপূর্ন পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তা না হলে আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে এবং আমাদের অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়বে।
বিএনএ/ সুমন, এমএফ/এইচ এ মুন্নী