29 C
আবহাওয়া
৬:১১ পূর্বাহ্ণ - এপ্রিল ২৭, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » সহজে ই-নামজারি করবেন যেভাবে

সহজে ই-নামজারি করবেন যেভাবে

ই-নামজারি

বিএনএ ডেস্ক: ঘরে বসেই দিতে পারবেন ই-নামজারির আবেদন ও নোটিশ জারি ফি। অক্টোবর থেকে রেকর্ড সংশোধন ও খতিয়ান সরবরাহ ফিও শুধুমাত্র অনলাইনের মাধ্যমে দিতে হবে। এতে ই-নামজারি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ক্যাশ লেস হচ্ছে। ফলে গ্রাহকের জন্য সহজ হবে ই-নামজারি।

ই-নামজারি কী?

জমি কিনলে বা অন্য কোনো উপায়ে জমির মালিক হয়ে থাকলে হালনাগাদ রেকর্ড সংশোধন করে নতুন মালিকের নামে জমি রেকর্ড করাকে বলা হয় নামজারি। এখন অনলাইনেও নামজারি করা যায়। আর এটিকেই ই-নামজারি বলা হয়। ২০১৬ সালে পাইলট আকারে ই-নামজারি শুরু হয়। ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে সারা দেশে একযোগে শতভাগ ই-নামজারি বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়। পার্বত্য তিন জেলা বাদে বাকি ৬১ জেলার সব উপজেলা ভূমি ও সার্কেল অফিস এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ই-নামজারি চালু রয়েছে।

ভূমি মন্ত্রণালয় জানায়, ই-নামজারি আবেদন ফি (কোর্ট ফি) ২০ টাকা ও নোটিশ ফি (নোটিশ জারি ফি) ৫০ টাকা। মোট ৭০ টাকা আবেদন করার সময়ই অনলাইনে দিতে হয়৷ আগামী ১ অক্টোবর থেকে রেকর্ড সংশোধন ফি ১ হাজার টাকা ও খতিয়ান সরবরাহ ফি ১০০ টাকা শুধুমাত্র অনলাইনে দিতে হবে। চার ধরনের ফি মিলিয়ে নামজারির জন্য প্রকৃত খরচ ১ হাজার ১৭০ টাকা অনলাইনের মাধ্যমে জমা দিতে হবে।

ই-নামজারির আবেদন করবেন কিভাবে?

ভূমির ই-নামজারি করার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ই-নামজারি যেতে হবে। এরপর অন-লাইন নামজারি সিস্টেমে ঢুকে পাশাপাশি ‘অনলাইনে আবেদন করুন’ এবং ‘আবেদন ট্র্যাকিং’ নামে দুটি অংশ দেখা যাবে। বাম পাশে ‘অনলাইনে আবেদন করুন’ অংশের নিচে ‘নামজারি আবেদনের জন্য ক্লিক করুন’ লেখায় ক্লিক করে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে।

আবেদন ফরমের প্রথমেই নামজারির জন্য আবেদিত জমিটি ক্রয়, ওয়ারিশ, হেবা, ডিক্রি, নিলাম, বন্দোবস্ত, অন্যান্য কী সূত্রে পাওয়া হয়েছে তা চিহ্নিত করতে হবে। জমির তথ্য অংশে ক্রমান্বয়ে বিভাগ, জেলা, উপজেলা সিলেক্ট করার পর মৌজা সিলেক্ট করতে হবে। মৌজার দীর্ঘ তালিকা থেকে নির্দিষ্ট মৌজাটি খুঁজে পেতে মৌজার নাম ও জেএল নম্বর স্মরণ রাখতে হবে। নামজারির আবেদন সর্বশেষ জরিপ রেকর্ডের ভিত্তিতে হবে। সেজন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার জন্য এসএ/এমআরএস, আরএস/বিএস, মহানগর, দিয়ারা, সিএস যা প্রযোজ্য জরিপটি সিলেক্ট করতে হবে।

যদি ই-নামজারির বিভিন্ন ফি নগদ না দিয়ে অনলাইনে হয়, তাহলে অনেক সুবিধা হবে। ঘর থেকেই পরিশোধ করা যাবে। অফিস ভিজিট করার দরকার নেই। নগদ টাকা দিতে গেলে এক জায়গায় যেতে হবে বা অফিসে আসতে হবে। অফিসে গেলে ওয়েটিং টাইম আছে। এটা-তো একদিকে হয়রানি আরেকদিকে সময় নষ্ট। অনলাইনের মাধ্যমে সময় বাঁচবে, আসা-যাওয়ার খরচ বেঁচে যাবে।ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) সোলেমান খান

জমির খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর, আবেদিত জমির পরিমাণ, খতিয়ানে সংশ্লিষ্ট দাগে জমির পরিমাণ টাইপ করে দিতে হবে। একইভাবে একই খতিয়ান থেকে বা একই মৌজাভুক্ত একাধিক খতিয়ান থেকে ‘আরও দাগে’ আরও জমি এ নামজারির সঙ্গে যুক্ত করতে হলে সেক্ষেত্রে ‘আরও খতিয়ান সংযুক্ত করুন’ ও ‘আরও দাগ সংযুক্ত করুন’ চেপে আরও খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর, আবেদিত জমির পরিমাণ, খতিয়ানে সংশ্লিষ্ট দাগে জমির পরিমাণ ইত্যাদি টাইপ করে দিতে হবে।

আবেদন ফরম পূরণে লাগবে যেসব তথ্য

দলিলসূত্রে জমির মালিক হলে দলিল নম্বর, দলিলের তারিখ ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নাম। খতিয়ানে রেকর্ডীয় মালিকের বা মালিকদের নাম, পিতা/স্বামীর নাম ও পূর্ণ ঠিকানা। আবেদনকারী বা আবেদনকারীদের নাম ও পূর্ণ ঠিকানা, সক্রিয় বাংলাদেশি মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর (পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র নম্বর) ও ই-মেইল এড্রেস।

আবেদনকারী যদি যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তরের (আরজেএসসি) নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান হয় তাহলে প্রতিষ্ঠানের নাম, প্রতিনিধির নাম, প্রতিনিধির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ, মোবাইল নম্বর, পদবি, প্রতিষ্ঠানের আরজেএসসি রেজিস্টেশন নং, নিবন্ধন তারিখ, জেলা, উপজেলা, ঠিকানা সরবরাহ করতে হবে।

আবেদনকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা হলে প্রতিষ্ঠানের নাম, প্রতিনিধির নাম, প্রতিনিধির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ, মোবাইল নম্বর, পদবি উল্লেখ করতে হবে।

আবেদনকারী আরজেএসসি নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্যান্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হলে প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, প্রতিনিধির নাম, প্রতিনিধির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ, মোবাইল নম্বর, পদবি।

আবেদনকারী নিজে না হয়ে প্রতিনিধির মাধ্যমে আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধির নাম ও পূর্ণ ঠিকানা, সক্রিয় বাংলাদেশি মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর (একইভাবে পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র নম্বর )ও ই-মেইল এড্রেস, বয়স ও আবেদনকারীর সঙ্গে সম্পর্কের তথ্য দিতে হবে।

জমি দাতা বা দাতা মৃত হলে তার ওয়ারিশের এবং দাতা কোনো প্রতিষ্ঠান হলে প্রতিনিধির নাম ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্ম তারিখ ও মোবাইল নম্বর, পদবি, আরজেএসসি নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন নম্বর , তারিখ, জেলা, উপজেলা, ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।

আবেদন ফি পরিশোধ করবেন যেভাবে

আবেদন জমা দেওয়ার সময় আবেদন ফি ২০ টাকা ও নোটিশ জারি ফি ৫০ টাকাসহ মোট ৭০ টাকা শুধুমাত্র অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে। এজন্য নগদ, রকেট, বিকাশ, উপায়, ভিসা কার্ড, মাস্টার কার্ডসহ অন্যান্য ইনস্ট্রুমেন্টস ব্যবহার করা যাবে। রেকর্ড সংশোধন ফি ১ হাজার টাকা ও খতিয়ান সরবরাহ ফি ১০০ টাকাও এসব মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে।

কতদিনে আবেদন নিষ্পত্তি হয়?

প্রতিটি আবেদন নিষ্পত্তি করতে বর্তমানে গড়ে ৪৩ দিন সময় লাগছে। ভবিষ্যতে এই সময় আরও কমে আসবে বলে জানিয়েছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

ই-নামজারির বিষয়ে যেকোনো অনিয়ম হলে কল সেন্টারে (১৬১২২) ফোন করে এবং ওয়েবসাইটে অভিযোগ করা যাবে।

ভূমি সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ৩০ সেপ্টেম্বরের পর থেকে নামজারি অনুমোদনের পর রেকর্ড সংশোধন ও খতিয়ান সরবরাহ ফি আর ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে (ক্যাশে) দেয়া যাবে না। এই সম্পর্কিত একটি পরিপত্র আমরা ইতোমধ্যে জারি করেছি।

সচিব বলেন, নামজারির জন্য কারও যেন কোনোভাবেই ১ হাজার ১৭০ টাকার বেশি অর্থ খরচ না হয়, তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়। এছাড়া ডিসিআর ও খতিয়ানের কোনো ত্রুটি সংশোধনের জন্য কোনো ফি নেয়া হবে না।

বিএনএ/এ আর

Loading


শিরোনাম বিএনএ