বিএনএ, রাবি : প্রায় আড়াই বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপর আরোপিত সকল প্রকার নিয়োগের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে আর কোনো বাঁধা থাকলো না।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শতরুপা তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মূলত, মঙ্গলবার সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শতরুপা তালুকদার স্বাক্ষরিত একটি চিঠি সাংবাদিকদের হাতে আসে। এরপরই বিষয়টি নিয়ে ক্যাম্পাসে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। পরবর্তীতে মুঠোফোনে নিয়োগের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন শতরুপা তালুকদার।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সমুন্নত রাখার স্বার্থে এ বিভাগের ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর জারিকৃত নিয়োগ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারপূর্বক সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান ও নীতিমালা অনুসরণ করে সুষ্ঠুভাবে সকল নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য অনুমতি প্রদান করা হলো।
এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম. আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা শিথিল ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিজের মেয়ে ও জামাতাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০২০ সালের ১০ ও ১৩ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পৃথক ১২টি নোটিশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের নিয়োগের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রায় আড়াই বছর ধরে নিয়োগ বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম নানাভাবে ব্যাহত হচ্ছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১ হাজার ৪৯০টি সৃজিত শিক্ষক পদের মধ্যে শূন্য ৪৩৫টি। অর্থাৎ বর্তমানে শিক্ষক রয়েছেন ১ হাজার ৫৫ জন।
তাঁদের মধ্যে আবার ৫২ জন শিক্ষক সম্প্রতি অবসরে গেছেন কিংবা মারা গেছেন। অন্যদিকে কর্মকর্তার ৭৯২টি পদের মধ্যে শূন্য ২০০টি, সহায়ক কর্মচারীর ১ হাজার ৪২টি পদের মধ্যে শূন্য ২৫১টি। এ ছাড়া সাধারণ কর্মচারীর ১ হাজার ৯০৯টি পদের মধ্যে শূন্য ৯০৯টি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা একটি পিডিএফ ফাইল পেয়েছি। কিন্তু আমাদের কাছে এখনো পর্যন্ত কোনো চিঠি আসেনি। দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার কাজে গতিশীলতা বাড়বে বলে আমরা আশাবাদী।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমরাও বিষয়টি শুনেছি। তবে আমাদের হাতে অফিসিয়ালি কোনো চিঠি আসেনি। চিঠি আসলে আমরা তা ওয়েবসাইটে জানিয়ে দিব। তবে এমন কিছু হলে তা অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ইতিবাচক।”
বিএনএ/ সৈয়দ সাকিব, ওজি/ হাসনাহেনা