বিএনএ, ডেস্ক : ধর্ষণ ও মারধরের মামলায় কারাগারে ছিলেন আলোচিত গায়ক মাঈনুল আহসান নোবেল। তার জীবনে যেন নাটকীয়তার শেষ নেই। প্রেম, বিচ্ছেদ, মামলা—সবকিছু পেরিয়ে মাত্র কয়েক দিন আগে কারাফটকে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন তিনি। আর বিয়ের মাত্র পাঁচ দিন পরেই এসেছে নতুন এক খবর—বাবা হতে চলেছেন নোবেল।
গত ১৯ জুন কারাফটকে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে ইসরাত জাহান প্রিয়াকে বিয়ে করেন শিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল। ২৪ জুন মঙ্গলবার আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বাবা হওয়ার খবর জেনেছেন তিনি। একই দিন আদালত নোবেলকে জামিনে মুক্তি দেন।
এর আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে যখন নোবেলকে আদালতে আনা হয়, তখন বেশ খোশমেজাজেই ছিলেন তিনি।
এর কিছুক্ষণ পরই সেখানে উপস্থিত হন তার সদ্য বিবাহিত স্ত্রী ইসরাত জাহান প্রিয়া, যিনি ছিলেন নোবেলের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বাদী। আদালতে ঢুকেই প্রিয়া সোজা নোবেলের কাছে যান এবং কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা স্বামীর সঙ্গে বেশ আনন্দ নিয়ে কিছুক্ষণ আলাপ করেন ।
তাদের আইনজীবীরা জানান, আদালতের নির্দেশে গত ১৯ জুন কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে নোবেল ও প্রিয়ার বিয়ে হয়। আর সেই বিয়ের পাঁচ দিন পরই তাদের সংসারে নতুন মেহমান আসার খবরটি নিশ্চিত হয়েছে। অর্থাৎ, নোবেল ও প্রিয়া বাবা-মা হতে চলেছেন। প্রিয়া সবার কাছে তাদের নতুন জীবনের জন্য দোয়া চেয়েছেন।
এক হাজার টাকা বন্ডে জামিন পেয়েছেন নোবেল। আদালতের আদেশ ঘোষণার পর পুলিশ তাকে পুনরায় কারাগারে নিয়ে যায়। এ সময় সারাক্ষণ প্রিয়ার হাত ধরে হাঁটছিলেন গায়ক। আদালতের লিফটে ওঠার সময়ও প্রিয়াকে সঙ্গে নেন তিনি। পরে প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রিয়া তার জামিনে কোনো আপত্তি না থাকার কথা জানান। তবে গায়ক নোবেল নিজে এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি।
গত ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছিলেন প্রিয়া।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুক্তভোগী ইডেন কলেজের ছাত্রীর সঙ্গে নোবেলের পরিচয় হয়।গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক । গত বছরের ১২ নভেম্বর গায়ক নোবেল তার স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ভুক্তভোগীকে ডেমরা থানাধীন তার বাসায় নিয়ে যান। রাত আনুমানিক ৮টায় ভুক্তভোগীকে কয়েকজন আসামির সহায়তায় আটক করে রাখেন এবং তার মোবাইল নিয়ে নেন। বাদী তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার জন্য আসামিকে মোবাইল ফোন ফেরত দেওয়ার কথা বললে নোবেল ওই ছাত্রীর ২৬ হাজার টাকার রেডমি ১০ প্রো মোবাইল ফোন ভেঙে ফেলেন।
আসামি নোবেল তার বসতঘরে আটক রেখে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ভিডিও তার মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখেন। নোবেলের কথামতো বাসায় না থাকলে তার মোবাইল ফোনে ধারণ করা ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেবেন বলে জানান। তাই বাদী আসামির ভয়ে কাউকে কিছু বলার সাহস পাননি।
মামলা দায়েরের পরই নোবেলকে ডেমরা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ২০ মে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তখন থেকে কারাগারে ছিলেন ‘সারেগামাপা’-তে অংশ নেওয়ার পর রাতারাতি তারকা বনে যাওয়া নোবেল।
গত ১৮ জুন মামলার শুনানিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের বিচারক নাজমিন আক্তার বাদীকে বিয়ে করার শর্তে নোবেলকে জামিন দেন । শর্ত মোতাবেক ১৯ জুন বিয়ে করে জামিন পান নোবেল। বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন উভয় পরিবারের সাক্ষী নাজমা হোসেন, সাবিহা তারিন, মো. খলিলুর রহমান এবং মো. সাদেক উল্লাহ ভূইয়া।
বর্তমানে জামিনে মুক্ত নোবেল সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলছেন। তবে সামনে হয়তো নতুন জীবনের কথা জানিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন এই তারকা।
শামীমা চৌধুরী শাম্মী
