বিএনএ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলী খেলায় কক্সবাজারের চকরিয়ার তারেকুল ইসলাম জীবন বলী চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। সোমবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে নগরীর লালদীঘি ময়দানের পাশে চার রাস্তার মোড় ঘেঁষে অস্থায়ী মঞ্চে বলী খেলার ১১৩তম আসর অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালে ১০৯তম আসরে কুমিল্লার শাহজালাল বলীকে হারিয়ে প্রথম শিরোপা জিতেন জীবন বলী ।
বিকেলে বলী খেলা দেখতে হাজারো দর্শক জড়ো হয়েছিল। অস্থায়ী মঞ্চ ঘিরে আশে পাশের বিভিন্ন ভবনের ছাদে উঠেও মানুষ দেখে ঐতিহ্যবাহী এ বলী খেলা। চকরিয়ার তারেকুল ইসলাম জীবন ও কুমিল্লার শাহজালা ‘র পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন দুইভাগে বিভক্ত দর্শকরা। জীবন বেশ কয়েকবার শাহজালালকে ধরাশায়ী করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। প্রায় ৩০ মিনিটের লড়াই শেষে তিন পয়েন্টে খেলার রেফারি আব্দুল মালেক বিজয়ী ঘোষণা করেন তারিকুল ইসলাম জীবনকে।
খেলায় অংশ নিয়েছিলেন বিভিন্ন বয়সী ৭২ জন বলী। তারেকুল ইসলাম জীবন ও মমিন বলী খেলার প্রথম সেমিফাইনাল মোকাবিলা করেন। এতে জীবন বলী জিতে ফাইনালে ওঠেন। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে শাহাজালাল বলীকে মোকাবেলা করেন সৃজন চাকমা। এতে জয় পেয়ে শাহাজালাল বলী ফাইনালে ওঠেন। এবার ক্রেস্টের পাশাপাশি বলী খেলার প্রথম পুরস্কার ২৫ হাজার টাকা এবং ২য় পুরস্কার ১৫ হাজার টাকা।
এর আগে ২০১৮ সালে ১০৯তম আসরে শাহজালাল বলীকে হারিয়ে প্রথম শিরোপা জিতেছিল জীবন বলী। ১৪ মিনিটের ওই খেলায় জীবন পরাজিত করতে পারেনি শাহজালালকে। ‘অবৈধ কৌশল’ অবলম্বন করায় রেফারি শাহজালালকে খেলার অযোগ্য করে জীবনকে জয়ী ঘোষণা করেছিল।
উল্লেখ্য, জব্বারের বলী খেলা এক বিশেষ ধরনের কুস্তি খেলা, যা চট্টগ্রামের লালদিঘী ময়দানে প্রতিবছরের ১২ই বৈশাখে অনুষ্ঠিত হয়। এই খেলায় অংশগ্রহণকারীদেরকে বলা হয় বলী। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কুস্তি বলীখেলা নামে পরিচিত। ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বদরপাতি এলাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর এই প্রতিযোগিতার সূচনা করেন।
তার মৃত্যুর পর এই প্রতিযোগিতা জব্বারের বলী খেলা নামে পরিচিতি লাভ করে। জব্বারের বলীখেলা একটি জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যমন্ডিত প্রতিযোগিতা হিসেবে বিবেচিত। বলীখেলাকে কেন্দ্র করে লালদিঘী ময়দানের আশে পাশে প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়ে বৈশাখী মেলার আয়োজন হয়। এটি বৃহত্তর চট্টগ্রাম এলাকার সবচেয়ে বৃহৎ বৈশাখী মেলা।
বিএনএনিউজ২৪.কম/এনএএম
Bnanews24 অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন