24 C
আবহাওয়া
১০:১৮ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২১, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » সিইউএফএলের দুর্নীতিবাজরা পুরস্কৃত!

সিইউএফএলের দুর্নীতিবাজরা পুরস্কৃত!

চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানা

।।এনামুল হক নাবিদ।।

অনিয়ম, দুর্নীতির শাস্তি নয় উল্টো বড় পুরস্কার পাওয়া যায় চট্টগ্রামের আনোয়ারায় অবস্থিত রাষ্ট্রায়াত্ত সার কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডে (সিইউএফএল)। বিশেষ করে শত কোটি টাকার অনিয়ম হয় কারখানা মেরামতে যন্ত্রাংশ কেনার নামে। অপর দিকে কতিপয় সিবিএ নেতার পকেট চলে বাসা বরাদ্দের লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার মাধ্যমে।

তেল বাণিজ্য, পানি বাণিজ্য, বাসা বরাদ্দে ঘুষ বাণিজ্য সব মিলিয়ে লুটপাটের এক মহোৎসব যেন এ  সার কারখানা । সিইউএফএল একটি বিসিআইসির কেপিআই১ গ্রেডের প্রতিষ্ঠান হলেও এখানে দুর্নীতি অনিয়ম চলছে সমানে।  এবার দুর্নীতি অনিয়মের দায়ে বদলি হওয়া শ্রমিকের বাসা বরাদ্দ নিয়ে ঘটেছে আরেক কাণ্ড।

সিইউএফএল সূত্রে জানা যায়, গত অক্টোবর-নভেম্বর মাসে তিন দফায় বর্তমান সিবিএর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ শ্রমিক কর্মচারীকে তাৎক্ষণিক বদলি করেছিল বিসিআইসির এক দপ্তরাদেশ। তার মধ্যে গত ১০ নভেম্বর বিসিআইসির চীফ অফ পার্সোনালের পক্ষে উপ-কর্মচারী প্রধান (প্রশাসন) মোহাম্মদ মোশতাক আহমেদ স্বাক্ষরিত দপ্তরাদেশে বদলি হয় সিইউএফএলের এসও১ শ্যামল কান্তি নাথ নামক এক শ্রমিক। তাকে বদলি করা হয় কেপিএম লিঃ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায়। যার সূত্র নং- ৩৬,০১, ০২৭,০১,০২,০২১২,২০২২/৩৫১।
তবে কি কারণে ওই সব শ্রমিক কে বদলি করা হয়েছিল সেটি দপ্তরাদেশে উল্লেখ না থাকলেও বিসিআইসি একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে কারখানায় অনিয়ম দুর্নীতি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তাদের শাস্তি হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক সিইউএফএলের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‌’তাৎক্ষণিক বদলি তো এমনি করে না এটা শাস্তিমূলক করে থাকে বিসিআইসি। বদলিকৃত এসব শ্রমিকদের আর সহজে পদোন্নতি হবে না।’

সূত্র জানায়, রাঙ্গামাটিতে বদলি হওয়া শ্যামল কান্তি নাথকে  সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ বদলির বড় পুরস্কার হিসেবে দিয়েছে বড় বাসা।

যেখানে বদলিকৃত এসব শ্রমিকদের বিসিআইসির রোলস্ অনুযায়ী এলপিসি না নিলে কোন সুযোগ সুবিধা না পাওয়ার আইন রয়েছে। সেখানে তিনি কি করে ই ১/৭ ব্লগের বাসা পায় তা নিয়ে বাসা না পাওয়া শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, এসও১ শ্যামল কান্তি নাথের পুরাতন বাসা ছিল: এফ ৫/১৫ ব্লগে। বর্তমানে সে কর্মরত রয়েছে কেপিএম লিঃ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায়। বিসিআইসির নির্দেশনা অনুযায়ী কথা ছিল সিইউএফএলের বাসা ছেড়ে দেয়া। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এফ ৫/১৫ ব্লগের বাসা পরিবর্তন করে ই ১/৭ ব্লগের নতুন বাসায় উঠে।

বদলিকৃত এসব শ্রমিকদের বাসা ছাড়ার বিষয়ে এ প্রতিবেদকের সিইউএফএলে কী মধু? শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। সেখানে বিসিআইসির চীফ অফ পার্সোনাল জাকির হোসেন বলেন, বদলিকৃত শ্রমিকদের নিজ থেকে এলপিসি নিতে হবে। যদি এলপিসি না নেয় তাহলে তারা আর কোন সুযোগ সুবিধা পাবে না।

তাহলে সচেতন শ্রমিকদের প্রশ্ন এসও১ শ্যামল কান্তি নাথ কোন অদৃশ্য এলপিসির সুবিধায় এই বড় বাসা পেয়েছে।
সিইউএফএলএ স্বল্প সংখ্যক ই ব্লগের খালি বাসা আছে। কিন্তু সিইউএফএলএ দীর্ঘ  ১৫-৩০ বছর ধরে চাকুরীরত অবস্থায় আছে এমন শ্রমিক এখনো ই ব্লগে বাসা পাইনি। অথচ শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে শাস্তি স্বরূপ বদলিকৃত শ্রমিক কেমনে ই ব্লগে বাসা পায়? নিশ্চয়ই অর্থ সকল অনর্থের ( ঘুষ) কারণ হয়েছে এমনটাই মনে করছেন সচেতন শ্রমিকরা। আর ৩০ বছর ধরে চাকুরীজীবিদের বাসা না পাওয়ার এই বোবা কান্না শোনার কেউ নেই যেন বিসিআইসিতে।

নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক জানান, সিইউএফএল বাসা বরাদ্দের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এস্টেট অফিসারসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এই অর্থ লেনদেনের কারণ ও তার চোখের ইশারায় বদলিকৃত শ্রমিক শ্যামল নাথ বড় বাসা পেয়েছে বলে মনে করেন তারা।

বর্তমানে (চলতি দায়িত্ব) এস্টেটের দায়িত্ব আছে উপ-ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কাজী আমিনুল হকের কাছে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় কোন বদলিকৃত শ্রমিক এলপিসি না নিলে সুযোগ সুবিধা পাবে না তাহলে সে কি করে বড় বাসা পায়। উত্তরে তিনি বলেন, এসব আমি জানি না এসব বিষয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মহোদয় ভালো জানেন।

বিষয়টি জানতে সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমানকে একাধিকবার মোবাইলে কল দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

এ বিষয়ে বিসিআইসির চীফ অফ পার্সোনাল জাকির হোসেন বলেন, আমি তো ঢাকায় সব বিষয় তো আমি জানি না। সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ এটা করার কোনভাবে সুযোগ নাই। একজন বদলিকৃত শ্রমিক যেখানে বাসা ছাড়ার কথা সেখানে আরো সুযোগ সুবিধা নিবে তা হবে না। আমি এখন এমডির সাথে এ বিষয়ে কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

বিএনএনিউজ২৪ডটকম 

Loading


শিরোনাম বিএনএ