বিএনএ, বিশ্বডেস্ক: তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কের ৪৪ হাজার ২১৮ এবং সিরিয়ায় ৫ হাজার ৮০০ জন।
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পের আজ ১৯তম দিন। গত ১৯ ফেব্রয়ারি জীবিতদের উদ্ধারের আশা ছেড়ে দিয়ে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এএফএডি)। এখন এক্সক্যাভেটর দিয়ে সরানো হচ্ছে ধ্বংসস্তূপ। এর ফলে বেরিয়ে আসছে শত শত মরদেহ।
ভূমিকম্পে তুরস্কের ১১টি প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ৮৪ হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস হয়েছে। জাতিসংঘের উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিগত শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে দেড় কোটি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
তুর্কি কর্তৃপক্ষ আরও বলেছে, কমপক্ষে ৪ লাখ ১২ হাজার ইউনিট সম্বলিত ১ লাখ ১৮ হাজার ভবন ধসে পড়েছে কিংবা এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে, সেগুলো ভেঙে ফেলা ছাড়া উপায় নেই।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট ওই এলাকায় দুই লাখ বাড়ি তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী মার্চ মাসেই শুরু হবে এসব ভবন নির্মাণ। তবে জাতিসংঘ বলছে, এসব অঞ্চলে অন্তত ৫ লাখ নতুন বাড়ি তৈরি করা প্রয়োজন।
এর আগে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে সিরিয়া এবং তুরস্কে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর কিছুক্ষণ পর ফের ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরও একটি ভূমিকম্প হয়। এরপর গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ফের ৬ দশমিক ৪ এবং ৫ দশমিক ৮ মাত্রায় দুটি ভূমিকম্প আঘাত হানে।
প্রথম ভূমিকম্পের পর দেশটিতে ৯ হাজার ১৩৬ এর বেশি আফটারশক হয়েছে। ভূমিকম্পে দেড় লাখেরও বেশি ভবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পটিকে গত ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্যোগ বলে উল্লেখ্য করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ভূমিকম্পে ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য ১০০ কোটি ডলার সহায়তা চেয়েছে জাতিসংঘ।
এদিকে তুরস্ক সরকার জানিয়েছে, ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকায় মার্চের প্রথম দিকে ২ লাখের বেশি বাড়ি নির্মাণ শুরু করবে এবং এক বছরের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করবে।
উল্লেখ্য, ১৯৩৯ সালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে তুরস্কের পূর্ব এরজিনকান প্রদেশে ৩৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল।
বিএনএ/এমএফ