বিএনএ ডেস্ক:১২ বছর আগে পিলখানায় বিডিআর জওয়ানদের গুলিতে শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের চোখের জলে স্মরণ করেছে জাতি।বৃহস্পতিবার(২৫ ফেব্রুয়ারি)সকালে বনানী কবরস্থানে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।শহীদদের কবরে রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম,প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ।
আরও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার এডমিরাল এম আবু আশরাফ, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি)র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম।শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহীদদের সম্মানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।পরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের স্বজনরা।দিবসটি স্মরণে বিজিবির সব স্থাপনায় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। কালো ব্যাজ ধারণ করেন বিজিবির সদস্যরা।
শহীদদের পরিবারের সদস্যরা তাদের হারানো স্বজনের কবরে ফাতিহা পাঠ ও মোনাজাত করেন। অশ্রুসিক্ত চোখে দিনটি স্মরণ করে আজও শোকে স্তব্ধ তারা।বনানী সামরিক কবরস্থানে ফুল হাতে বুকচাপা কান্না নিয়ে শহীদদের স্বজনরা এসেছিলেন।কারো বাবা-মা, কারো সন্তান কারো স্ত্রী চোখের জলে স্মরণ করেন প্রিয়জনকে। এই হত্যাযজ্ঞের ১২ বছরেও সব মামলার রায় না হওয়ায় এবং নেপথ্যের কারণ সামনে না আসায় হতাশ শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ কয়েকটি রাজৌনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।আগামিকাল শুক্রবার বাদ জুমা পিলখানার বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদ, বর্ডার গার্ড হাসপাতাল মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হবে।বিজিবির কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
২০০৯ সালের এই দিনে ঢাকার পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই বছরের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারির পিলখানা ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারান তৎতকালীন বিডিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিলসহ ৫৭ জন সেনাসদস্য।এছাড়াও নারী ও শিশুসহ আরও ১৭ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে জওয়ানদের বিদ্রোহ। রক্তাক্ত সেই বিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর নাম বদলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) হয়।
বিদ্রোহের মামলা বিচার হয় বাহিনীর নিজস্ব আদালতে। সেখানে ৬ হাজার জওয়ানের কারাদণ্ড দেয়া হয়। বিদ্রোহের বিচারের পর পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলার বিচার শুরু হয় সাধারণ আদালতে।ঢাকা জজ আদালত ২০১৩ সালে দেয়া রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল।পাশাপাশি ২৫৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয় আদালত।
২০১৭ সালে দেয়া রায়ে ১৩৯ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে হাইকোর্ট।১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২২৮ জনকে তিন থেকে ১০ বছরের সাজা দেয় হাইকোর্ট।
বিএনএনিউজ/আরকেসি