ওই দিন জহুর হোসেন এসে আমাকে বলেন, সরকার যে রাতে বহু ছাত্র, রাজনৈতিক নেতা এবং শিক্ষককে গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সেই তালিকায় আমারও নাম আছে। একথা বলে তিনি আমাকে পরামর্শ দেন, ‘আপনি আর ঢাকাতে না থেকে আজই স্টিমারে সোজা কোলকাতা চলে যান। পরে গোলমাল চুকে গেলে ফিরে আসবেন’।
আমি কিন্তু সে পরামর্শ গ্রহণ না করে তাঁকে বলি, সরকার যদি ছাত্র, শিক্ষক এবং অন্যকে গ্রেফতার করে তবে আমাকেও সেই সঙ্গে গ্রেফতার করতে পারে। কিন্তু আমি ঢাকা ত্যাগ করে কোলকাতা যাব না। সেদিন জহুর হোসেন চলে যাওয়ার অল্পক্ষণ পরই দেলোয়ার হোসেন নামে একটি ছাত্র আমার বাসায় আসে। তখন সে আমার কাছে সিএ-সএস পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে পড়তে আসত, যদিও সে সময়েও সে সরকারি অফিসে চাকরি করত।
ছেলেটি এসে আমাকে জিজ্ঞেস করে আমার কাছে জহুর হোসেন এসেছিলেন কি না। তাঁর আসার কথা এবং বক্তব্য ছাত্রটিকে বলায় সে উত্তর দেয়, আমি জহুর হোসেনকে সঠিক জবাবই দিয়েছি। কারণ আমি কোলকাতায় চলে গেলে সঙ্গে সঙ্গে সরকারি হ্যান্ডনোট বের করে বলা হতো যে আন্দোলনের একজন নেতৃস্থানীয় লোক হিন্দু হিসেবে ভারতের চর এবং সে সময় মতো ভারতে পলায়ন করেছে। সরকার এরকম একটি পরিকল্পনা তৈরি করে রেখেছিল।’
সূত্র: যারা অমর ভাষা সংগ্রামে, লেখক: এমআর মাহবুব
সম্পাদনায়: মনির ফয়সাল
পড়ুন আগের পর্ব: ভাষা সৈনিক(২) অজিত কুমার গুহ