বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বকেয়া ম্যাচিং ফান্ডের ৬৩২ কোটি ১৪ লাখ ৪৩ হাজার মওকুফের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, অর্থমন্ত্রী আ.ফ.ম মোস্তফা কামাল, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের বরাবরে পৃথক চিঠি (ডিও লেটার) পাঠিয়েছেন চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। এছাড়াও চিঠি পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালউদ্দিন আহমেদ বরাবরে।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) জনসংযোগ শাখা থেকে চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। ওই চিঠিতে চসিকের আর্থিক সংকটের কথা তুলে ধরে সংকট সমাধানে মন্ত্রী ও দায়িত্বশীলদের ‘একান্ত ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ’ ও আন্তরিক সুবিবেচনা প্রত্যাশা করেছেন চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।
চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, চসিক একটি নাগরিক সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। একজন নাগরিকের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সব ধরনের নাগরিকসেবা নিশ্চিত করা সিটি করপোরেশনের মূল দায়িত্ব। দূষণমুক্ত, যানজটমুক্ত, পরিচ্ছন্ন একটি আধুনিক উন্নত নগর গঠন ও নাগরিকসেবা নিশ্চিত করতে চসিক প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এ সব প্রতিজ্ঞা পূরণে চসিক ইতোমধ্যে ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছে যা বর্তমানে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি বলেন, নিজস্ব রাজস্ব ও বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে সরকার থেকে পাওয়া বরাদ্দ দিয়ে উন্নত নাগরিকসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। মহাসড়ক, সড়ক, নর্দমা, মেরামত-সংস্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখা, মশকনিধন এবং সর্বত্র আলোকায়ন নিশ্চিত করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল কর্মযজ্ঞ। এ বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদনের জন্য পাওয়া অর্থ খুবই অপ্রতুল। আর্থিক দৈন্যের কারণে নাগরিক সেবার মান নাগরিকদের প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন,করপোরেশনের নিজস্ব রাজস্ব আয়ের স্বল্পতার কারণে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত বরাদ্দের বিপরীতে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ম্যাচিং ফান্ড নিশ্চিত করা খুবই কঠিন। এছাড়াও এক সময় নগর শুল্ক থেকে প্রাপ্ত আয় ছিল অন্যতম প্রধান রাজস্ব। কিন্তু আশির দশকে সরকার সেটি বন্ধ করে দিয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালিত আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আয় প্রসারের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় আমদানি-রপ্তানি কাজে নিয়োজিত যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে সড়ক মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সিটি করপোরেশন প্রচুর অর্থ ব্যয় করে থাকে।
বর্তমানে চসিকের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকেল্পের ম্যাচিং ফান্ড বাবদ বকেয়া ৬৩২ কোটি ১৪ লাখ টাকাসহ নিজস্ব তহবিলে উন্নয়ন কার্যক্রমের বকেয়া এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আনুতোষিক বাবদ প্রায় ৮৩০ কোটি টাকার বিশাল অর্থ ঘাটতির বোঝা নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ অবস্থান বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ম্যাচিং ফান্ড বাবদ বকেয়া ৬৩২ কোটি ১৪ লাখ টাকা মওকুফের ব্যবস্থা করলে নগরবাসীকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া এবং সরকারের প্রতিশ্রুত উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে।
বিএনএনিউজ/মনির