বিশ্ব ডেস্ক: ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় লেবাননে অন্তত ৪৯২ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৪ জন শিশু, ৩৯ জন নারী এবং দুইজন মেডিকেল কর্মী রয়েছেন। এছাড়া, হামলায় ১৬৪৫ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ইসরায়েল সোমবার(২৩ সেপ্টেম্বর) একযোগে লেবাননের ৩০০টিরও বেশি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে।
আলজাজিরা জানায়, লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই হতাহতের তথ্য নিশ্চিত করেছে। ইসরায়েলি বাহিনী এবং লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘর্ষ বেশ কিছুদিন ধরে চলমান রয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে লেবাননের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলা চালানো হয়।
হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘হিসাব-নিকাশের লড়াই’ ঘোষণা করায় মধ্যপ্রাচ্যে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে।
হামলার আগে দক্ষিণ লেবাননের বাসিন্দাদের ফোন করে ইসরায়েলি বাহিনী হিজবুল্লাহর ব্যবহৃত যে কোনো স্থাপনা থেকে সরে যেতে বলে। এমনকি একটি স্থানীয় রেডিও হ্যাক করে এই বার্তা প্রচার করে তারা।
বিবিসির এক প্রতিনিধির মতে, ইসরায়েলি বিমান থেকে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে শত শত স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। তিনি এদিনের হামলাকে ইসরায়েল-লেবানন উত্তেজনার মধ্যে সবচেয়ে তীব্র বলে অভিহিত করেছেন।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, সোমবার সকালে হিজবুল্লাহর তিন শতাধিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, এই হামলা আরও তীব্র করা হচ্ছে এবং বাস্তুচ্যুত ইসরাইলিদের ফেরানোর লক্ষ্যে আক্রমণ চলবে যতক্ষণ না তাদের লক্ষ্য অর্জিত হয়।
গত সপ্তাহে হিজবুল্লাহর সদস্যদের ব্যবহার করা হাজার হাজার পেজার ও ওয়াকি-টকিতে বিস্ফোরণ ঘটে, যার ফলে ৪০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়, যাদের মধ্যে অন্তত ১৬ জন হিজবুল্লাহর সদস্য ছিলেন। এই ঘটনার জন্য হিজবুল্লাহ ইসরায়েলকে দায়ী করছে।
বিস্ফোরণের পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা অনেক বেড়ে গেছে। এর মাঝেই ইসরায়েলি বাহিনী সোমবার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরগুলোতে ব্যাপক বিমান হামলা চালায়।
১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হিজবুল্লাহ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে। তবে এই সংঘাতের উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের পর থেকে। হামাসের প্রতি সমর্থন জানিয়ে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে রকেট হামলা চালাতে শুরু করে, যার জবাবে ইসরায়েলও পাল্টা আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
বিএনএ,এসজিএন