বিশ্ব ডেস্ক: মার্কিন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা লরেন্স ফাসেট (৫৮) নামেএক ব্যক্তির দেহে জেনেটিক্যালি মডিফাইড শূকরের হৃদপিন্ড (পিগ হার্ট) ট্রান্সপ্ল্যান্ট করেছেন। তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় রোগী যার দেহে শূকরের হৃদপিন্ড প্রতিস্থাপন করা হলো। চিকিৎসকরা জানান, ট্রান্সপ্ল্যান্টের পরে ফ্যাসেট নিজে থেকে শ্বাস নিচ্ছিল এবং ‘সহায়ক যন্ত্রের কোনো সহায়তা ছাড়াই’ নতুন হৃদপিন্ড ভালভাবে কাজ করছিল। চিকিৎসা গবেষণার ক্রমবর্ধমান বিকাশের ক্ষেত্রে এটি সর্বশেষ মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
মানুষের মধ্যে পশুর অঙ্গ প্রতিস্থাপন করাকে বলা হয় জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন। এটি মানব অঙ্গ দানের দীর্ঘ সংকটের সমাধান দিতে পারে। ১,০০,০০০ এরও বেশি মার্কিন নাগরিক বর্তমানে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষার তালিকায় রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শনিবার(২৩ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে বলেছে, উভয় হার্টের প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড স্কুল অফ মেডিসিনের বিশেষজ্ঞদল। প্রথম রোগী গত বছর তার ট্রান্সপ্লান্টের দুই মাস পরে ‘অপারেশনের আগে তার স্বাস্থ্যের খারাপ অবস্থা সহ অনেক জটিলতার কারণে’ মারা গিয়েছিল।
সর্বশেষ অপারেশনটি বুধবার সম্পন্ন হয়, রোগী লরেন্স ফাসেট বিদ্যমান ভাস্কুলার রোগ এবং অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের জটিলতার কারণে দান করা মানব হৃদপিন্ড গ্রহনের জন্য অযোগ্য ছিলেন।
দুই সন্তানের বাবা এবং নৌবাহিনীর সদস্য লরেন্স ফাসেট প্রায় হৃদযন্ত্র বিকল হওয়ার মুখোমুখি হয়েছিলেন।
লরেন্স ফাসেটের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘আমার একমাত্র আসল আশা বাকি আছে শূকরের হৃদপিন্ড প্রতিস্থাপন, জেনোট্রান্সপ্লান্টের সাথে যাওয়া’। ‘অন্তত এখন আমার আশা আছে এবং আমার একটি সুযোগ আছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, ট্রান্সপ্ল্যান্টের পরে তিনি প্রচলিত এন্ট্রি-রিজেকশন ওষুধ সেবনের পাশাপাশি একটি নতুন অ্যান্টিবডি থেরাপি গ্রহণ করছিলেন যাতে তার শরীরের নতুন অঙ্গের ক্ষতি বা প্রত্যাখ্যান না হয়।
জেনোট্রান্সপ্ল্যান্ট চ্যালেঞ্জিং কারণ রোগীর ইমিউন সিস্টেম বাইরের অঙ্গ আক্রমণ করবে। বিজ্ঞানীরা জেনেটিক্যালি মডিফাইড শূকরের অঙ্গ ব্যবহার করে সমস্যাটি দূর করার চেষ্টা করছেন।
গত কয়েক বছরে, চিকিৎসকরা মস্তিষ্ক-ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত রোগীদের দেহে জেনেটিক্যালি মডিফাইড শূকর থেকে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন।
নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ল্যাঙ্গোন হাসপাতাল ট্রান্সপ্লান্ট ইনস্টিটিউট এই মাসে ঘোষণা করেছে যে, মৃত-মস্তিষ্ক রোগীর মধ্যে প্রতিস্থাপিত একটি শূকরের কিডনি রেকর্ড-ব্রেকিং ৬১ দিন ধরে কাজ করেছে।
শূকরের শরীরের অঙ্গের আকার বড় এবং দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তাই এসব মানুষের জন্য যথেষ্ট ফিট বলে বিবেচিত হয়।
সূত্র : ফক্সনিউজ
বিএনএ,জিএন/ হাসনাহেনা/এইচ এ মুন্নী
