বিএনএ ডেস্ক: জলবায়ু ইস্যুতে ধনী দেশগুলোর অর্থবহ পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতাকে ‘দুঃখজনক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী দেশগুলো জোরালো বক্তব্য রাখলেও পরিস্থিতির গুরুত্বের সঙ্গে তাদের কার্যক্রম সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের (ইউএনজিএ) ফাঁকে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে শেখ হাসিনা আরও বলেন, কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলো জলবায়ু রক্ষায় কোন কাজ করে না, তারা শুধু কথা বলে। অথচ এই বিপর্যয়ের জন্য তারাই দায়ী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি- ধনী দেশগুলো আরও ধনী হতে চায়। তারা অন্যদের নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়। বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে ঘন জনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। অথচ পৃথিবী উষ্ণায়নের জন্য খুবই সামান্য পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নিৎসরণ করে বাংলাদেশ।
সরকার প্রধান বলেন, প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা করে টিকে থাকার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করতে ২০২০ সাল নাগাদ বছরে ১শ বিলিয়ন মার্কিন ডলার চাওয়া হয়। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার মতে, ওই বছর, বেসরকারি মাধ্যমসহ ৮৩.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।
এএফপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই জলবায়ু তহবিল আরও বৃদ্ধি হোক। কিন্তু, দুর্ভাগ্যজনক যে আমরা উন্নত দেশগুলার কাছ থেকে ভাল সাড়া পাচ্ছি না।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সহিংসতার কারণে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বিশ্ব বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারি ও রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের পর এ সংকট থেকে তাদের মনোযোগ সরে গেছে। শেখ হাসিনা বলেন, যতক্ষণ তারা আমাদের দেশে আছে, আমরা মনে করি তাদের দেখভাল করা আমাদের দায়িত্ব। তবে রোহিঙ্গাদের নিয়ে নানা সংকট ও সহিংসতায় বাংলাদেশী আশ্রয়দাতাদের ধৈর্য ক্ষীণ হয়ে আসছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় জনগণকে রোহিঙ্গাদের জন্য যথেষ্ট ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। আমি বলব না যে তারা ক্ষুব্ধ, তবে তারা অস্বস্তি বোধ করছে। ‘সব বোঝাই আমাদের উপর এসে পড়ছে। এটাই সমস্যা’। শেখ হাসিনা বলেন, তাদের খোলা জায়গা দেয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়, কারণ তা তাদের নিজের দেশেই রয়েছে। তারা সেখানে ফিরে যেতে চায়। আর এটাই সবার মূল অগ্রাধিকার। কেউ যদি তাদের নিতে চায়, তারা নিতে পারে বলেও জানান বাংলাদেশের সরকার প্রধান।
বিএনএ/এ আর