বিএনএ ঢাকা: মহামারি করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। দেশে গণটীকা সম্পন্নের পর থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এজন্য কিছু কর্মসূচিও হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতির নির্দেশনা: প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে— সহকারী উপজেলা/থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ বিদ্যালয় পরিদর্শন এবং ওয়ার্কশিট বিতরণ শতভাগ নিশ্চিতকরণ ও যাচাই করতে হবে। শিখন ঘাটতির অবস্থা ও ফিডব্যাক নেয়া। বিদ্যালয়ের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা। শিক্ষকদের নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিতি নিশ্চিত এবং হোম ভিজিট যাচাই করা। শিক্ষার্থী প্রোফাইল শতভাগ হয়েছে কিনা তা দেখা। দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় নির্ধারণ করা। স্যাম্পল হিসেবে শিক্ষার্থীর বাড়ি যাওয়া এবং শিক্ষার্থী যোগাযোগ রেজিস্ট্রার যাচাই করা।
এছাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক ঠিক করার জন্য দ্রুত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে মাউশি। এজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের আদেশ যথাযথ পালন করতে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর আগে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও দুই মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় শিক্ষার্থীদের মাস্ক ব্যবহার, বিদ্যালয়ে সাবান বা স্যানিটাইজার ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। সেইসঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রতিটি কক্ষ, ওয়াশ ব্লক ও আঙিনা পরিষ্কার রাখাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি রাখার নির্দেশনাও ছিল।
বিদ্যালয় খুলে দেয়ার বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল বলেন, সব শিক্ষককে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকার পাশাপাশি সহকারী উপজেলা ও থানা শিক্ষা অফিসারদের এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত বিদ্যালয় পরিদর্শন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোনো সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারা যদি সমস্ত বিদ্যালয় পরিদর্শন না করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া আছে। বিদ্যালয় বন্ধ থাকলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টিকা দেয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় টিকার আওতায় এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযয়ের ৮০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী টিকার আওতায় এসেছে। সেজন্যই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
তবে করোনা সংক্রমণ পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে না আসা পর্যন্ত স্কুল পর্যায়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে না। সে হিসেবে স্কুলে ছুটি আরেক দফা বাড়তে পারে।
বিএনএনিউজ/আরকেসি