বিএনএ ডেস্ক: শৃঙ্খলা একটি সুসংগঠিত বাহিনীর মেরুদণ্ড। তাই পদোন্নতির ক্ষেত্রে শৃঙ্খলার বিষয়ে কোনো প্রকার আপোস না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (২৪ জুলাই) সকালে বাংলাদেশ নৌ ও বিমানবাহিনীর নির্বাচনী পর্ষদের সভায় এই নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নৌ ও বিমান বাহিনী সদর দপ্তরের এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, নৌ ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, পেশাগত দক্ষতা, নেতৃত্বের গুণাবলী, শৃঙ্খলার মান, সততা, বিশ্বস্ততা ও আনুগত্যের উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে আইএসপিআর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নৌবাহিনীকে একটি অত্যাধুনিক, যুগোপযোগী ও ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন, হেলিকপ্টার, মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট এবং বিশেষায়িত ফোর্স সোয়াডস অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। সেইসাথে নতুন যুদ্ধজাহাজ কমিশনের পাশাপাশি নতুন নতুন ঘাঁটি নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি যা দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু টানেল, মেট্রোরেল, এলএনজি টার্মিনাল, গভীর সমুদ্র বন্দর, মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্ট, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজ এবং ঢাকার সঙ্গে বিভাগীয় শহরগুলোর সংযোগ সড়ককে এক্সপ্রেসওয়েতে রূপান্তরের কাজ বাস্তবায়ন করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রের ন্যায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আজ নারী নাবিক ও এয়ারম্যানগণ দেশে এবং বিদেশে সুনাম ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করছে। জাতিসংঘ মিশনে নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর নারী শান্তিরক্ষীরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে এবং তাঁরা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত রেখেছেন। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুহুর্তে বিশেষতঃ সম্প্রতি দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চলমান বন্যা মোকাবেলায় নৌবাহনী ও বিমান বাহিনীর সদস্যগণ স্থানীয় প্রশাসন ও অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আর্তমানবতার সেবা করেছে।
এর আগে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম শাহীন ইকবাল নৌবাহিনীর নির্বাচনী পর্ষদে প্রধানমন্ত্রীর সদয় উপস্থিতির জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে দেয়া বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বর্তমান সরকারের সময়ে নৌবাহিনীর আধুনিকায়নে গৃহীত পদক্ষেপের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
পরে বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান তাঁর বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তিনি বর্তমান সরকার কর্তৃক প্রণীত ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আওতায় নতুন নতুন ঘাঁটি, ইউনিট সৃষ্টির পাশাপাশি অবকাঠামোর সম্প্রসারণ এবং জনবল বৃদ্ধিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
নৌ ও বিমান সদর দপ্তরে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নৌবাহিনীর ক্ষেত্রে ক্যাপ্টেন হতে কমডোর, কমান্ডার হতে ক্যাপ্টেন এবং লে. কমান্ডার হতে কমান্ডার পদবিতে কর্মকর্তাদের পদোন্নতির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। নৌবাহিনীর সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দের সমন্বয়ে গঠিত এ পর্ষদ, সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে নৌবাহিনীর ভবিষ্যৎ জ্যেষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তা নির্বাচন করবেন। অপরদিকে, বিমান বাহিনীর ক্ষেত্রে এয়ার কমডোর, গ্রুপ ক্যাপ্টেন এবং উইং কমান্ডার পদে যোগ্য প্রার্থীদের পদোন্নতির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত এ পর্ষদের মাধ্যমে বিমান বাহিনীর ভবিষ্যত নেতৃত্বের জন্য মেধাবী, যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তাগণ সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে পদোন্নতি পাবেন।
বিএনএ/ এ আর