অভিলম্বে রাখাইনে(আরাকানে) জাতিসংঘ (জাস) শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা ছাড়া বাপদাদার ভিটেবাড়ি তথা নিজ দেশে ফেরত যাবার কোন উপায় নেই রোহিঙ্গাদের।
সারাবিশ্বে যুদ্ধ, সংঘাত, নানা মানবিক বিপর্যয় লেগেই রয়েছে। এই কারণে রোহিঙ্গা সমস্যা দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে। জাতিসংঘসহ মানবাধিকার সংস্থাগুলো মাঝে মাঝে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে কেউ আন্তরিক নয় রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে। এ পর্যন্ত কোন সংস্থাই সঠিক ও কার্যকর সমাধানের পথ দেখান নি।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী বিশ্বের সংঘাতপূর্ণ রাষ্ট্র,সম্প্রদায় এবং জাতির সমস্যা সমাধানে সফল হলেও মিয়ানমারের আরাকানে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করে সেখানে রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবেশ সৃষ্ঠি করতে পারে।
সরকারি ও জাতিসংঘের হিসেবে বাংলাদেশে ৮-১০ লাখ রোহিঙ্গা থাকার কথা বলা হলেও প্রকৃত সংখ্যা আরও ৪-৫লাখ বেশি। বর্তমানে বাংলাদেশের ভাসানচরে এবং কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয়গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের পেছনে সরকার, বিদেশি সংস্থার যে টাকা প্রতিদিন ব্যয় হচ্ছে সে টাকায় আরাকানে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করে সেখানে রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে পুনর্বাসন করা সম্ভব।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল ও বিরোধীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে বর্তমানে খুব বেকায়দায় রয়েছে। আন্তর্জাতিক মহল তাদের ভাল চোখে দেখছে না। নিজ দেশে সশস্ত্র বিদ্রোহ আর রাজনৈতিক সংঘাত সামলাতে হিমশিম খেতে ব্যস্ত এই সেনা সরকারকে এখনই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক চাপে ফেলতে পারলেই, সমস্যাটির স্থায়ী সমাধান সম্ভব বলে অনেকে মনে করেন।
প্রতিবেশিসুলভ ভদ্র আচরণ এবং কূটনৈতিক পথে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সম্ভব , সে আশায় বসে না থেকে বাংলাদেশ সরকার, ওআইসি দেশ সমূহ এবং পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশ সমূহের উচিত অবিলম্বে মিয়ানমারের আরাকানে জাতিসংঘ বাহিনী মোতায়েন করে রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত সমাধানের পথ নিশ্চিত করা। আর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হলে, জাতিসংঘ তাদের তহবিলের টাকা পয়সা অন্যদেশের উন্নয়ন ও সংকট সমাধানে খরচ করতে পারবে।
সে সাথে ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গঠন,মাদকমুক্ত(ইয়াবা) দেশ পরিচালনায় আওয়ামী লীগ সরকারের বড় অন্তরায় রোহিঙ্গা সংকট দূর হবে। মিয়ানমারের আরাকান থেকে ইয়াঙ্গুন(রেঙ্গুন) পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় শত শত ইয়াবা ও নেশা জাতীয় মাদক তৈরির কারখানা রয়েছে। যেগুলোর বেশির ভাগের মালিক মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তারা।
ভাসানচরের মত রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে দেশের ভাসমান, গৃহহীন, কর্মক্ষমতাহীন মানুষ, ভবঘুরে, পেশা যাদের ভিক্ষাবৃত্তি তাদের সেখানে আশ্রয় দান, প্রশিক্ষণ প্রদান, উৎপাদনমুখি কাজে নিয়োগ করা যেতে পারে। প্রয়োজনে সরকার সেখানে উন্নতমানের হাসপাতাল,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে উন্নত সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করবে।
আপডেট :
০১. বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা আরামে আছে, ভাল ভাল খাবার খাচ্ছে, নতুন নতুন কাপড় পাচ্ছে, এমন খবরে ভারত থেকে দলে দলে সীমান্ত পথে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢুকছে।১৭ থেকে ২৩মে ২০২২পর্যন্ত একসপ্তাহে তিনশতের বেশি রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে বলে স্থানীয় সংবাদপত্র ও টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে।
০২. আরাকান তথা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে সমুদ্র পথে মালয়শিয়া,ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ এবং থাইল্যান্ড যাবার পথে বহু রোহিঙ্গার সলিল সমাধি ঘটেছে। মে ২০২২ মাসে সমুদ্র থেকে বহু রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করেছে মিয়ানমারের উদ্ধারকর্মীরা।
-লেখক, সৈয়দ গোলাম নবী, সাংবাদিক।
(মতামতের জন্য বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি,বিএনএনিউজ২৪ কর্তৃপক্ষ দায়ি নন। লেখকের নিজস্ব মতামত)