।। কাইমুল ইসলাম ছোটন ।।
বিএনএ, রাঙামাটি: পবিত্র ঈদুল ফিতরের টানা ছুটি শেষ হলো গতকাল রোববার। ঈদের ছুটিতে পর্যটকে ভরপুর থাকে হ্রদ পাহাড়ের জেলা রাঙামাটিতে। কিন্তু পর্যটনের ভরা মৌসুমেও আশানুরূপ পর্যটক আসেনি রূপের রাণী রাঙামাটিতে। পর্যটকের যে খরা চলছিল ঈদের ছুটিতে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার প্রত্যাশা করলেও, সেই আশা পূরণ হয়নি ব্যবসায়ীদের। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন পর্যটক সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে পর্যটনকেন্দ্র গুলোতে দেখা যায়, লোক সমাগম থাকলেও বেশিরভাগই স্থানীয়। যারা ঈদে পরিবারের সাথে সময় কাটাতে বিনোদন কেন্দ্র গুলোতে ভীড় করেছেন। কিন্তু রাঙামাটির বাইরে থেকে আসা পর্যটকদের উপস্থিতি একেবারেই কম। অন্যান্য ঈদ মৌসুমে রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের সরব উপস্থিতি থাকলেও এবারের চিত্র যেন সম্পূর্ণ বিপরীত। যেখানে পর্যটকদের চাপে হোটেল-মোটেলে রুম না পেয়ে রাস্তায় থাকার নজির রয়েছে, সেখানে আবাসিক হোটেলগুলোর এখন প্রায় অর্ধেক খালি। শহরজুড়ে দেখা যায়নি পর্যটকদের গাড়ির চাপ কিংবা কাপ্তাই হ্রদে ভেসে বেড়ানো পর্যটকে পূর্ণ টুরিস্ট বোট। তেমন অগ্রিম বুকিং নেই বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
পর্যটক সংশ্লিষ্টরা জানান, ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের বরণ করার জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় পর্যটক আসেন নি। অন্যান্য বছরের তুলনায় হোটেল-মোটেল অগ্রীম বুকিং কম হয়েছে। কক্ষ ফাঁকা রয়েছে অনেক। এদিকে পর্যটকদের আকর্ষণের প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে কাপ্তাই হ্রদ। তারা বোটে করে কাপ্তাই হ্রদে ভ্রমণ করেন। কিন্তু পর্যটকদের হতাশাজনক উপস্থিতির প্রভাব পড়েছে রাঙামাটির টুরিস্ট বোট সংশ্লিষ্টদের উপরও। তবে তারা এই খরা কাটিয়ে ওঠবেন বলে আশাবাদী।
হোটেল নাদিশা ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ঈদের ছুটিতে আমরা সবসময় বাড়তি প্রস্তুতি নেই। কারণ এই সময়ে প্রচুর পর্যটক সমাগম হয় রাঙামাটিতে। কিন্তু এবার আমরা খুবই হতাশ। যেমন পর্যটক আশা করেছিলাম তার অর্ধেক পর্যটকও আসেনি। ছুটিতে আমাদের হোটেলের ৬০ শতাংশের মত বুকিং হয়েছে।
হোটেল গ্রীণ ক্যাসেলের ম্যানেজার মো. শরীফ বলেন, আমাদের এখানে মোট ৩৭টি রুম রয়েছে। কিন্তু রুম খালি আছে আঠারোর বেশি। সুতরাং আমাদের বুকিং ৫০ শতাংশের বেশি নয়। আমরা আরো অনেক বেশি পর্যটক সমাগম হবে আশা করেছিলাম।
একই কথা বলেন হোটেল মতি মহলের স্বত্ত্বাধিকারী মো. শফিউল আজমের। তিনি জানান, ঈদের মৌসুম যেকোন পর্যটন শহরের জন্য ব্যবসার মৌসুম। কিন্তু এবারের ঈদে পর্যটকদের উপস্থিতি সত্যিই হতাশাজনক।
রাঙামাটি পর্যটন ঘাটের ইজারাদার এবং ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান আলী বলেন, এবার আমাদের আশা অনুযায়ী পর্যটক আসেনি। তাই অনেক বোট চালকই ভাড়া না পেয়ে অলস সময় কাটাচ্ছেন।
রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৃজন কান্তি বড়ুয়া বলেন, বর্তমানে যে পরিমাণ ট্যুরিস্ট এসেছে আমরা আশা করেছিলাম এর থেকে আরও বেশি ট্যুরিস্ট আসবে। যেহেতু দাবদাহ চলছিল এবং আবহাওয়া জনিত কারণেও আশানুরূপ পর্যটক হয়নি। আশা করছি আগামীতে পর্যটক উপস্থিতি আরও বাড়বে।
এ বিষয়ে রাঙামাটি আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মো. মইন উদ্দিন সেলিম জানান, এবছর আশানুরূপ পর্যটন আসেনি। তবে আজকে দাবদাহ কমে যাওয়ার ফলে পর্যটক আসছে বলে তিনি জানান।
বিএনএ/এমএফ