আদালত প্রতিবেদক: রানা প্লাজা ধসের ১০ বছর হলেও ওই ভয়াল ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার বিচার কাজের প্রাথমিক পর্যায় এখনো পার হয়নি। শেষ হয়নি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ। প্রায় ৬ শতাধিক সাক্ষীর মধ্যে এত বছরে মাত্র ৫০ জনের মত সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঢাকার সাভারে রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৩৫ জন শ্রমিক মারা যান। বিশ্বকে নাড়িয়ে দেয়া ওই ঘটনার পর দায়ের করা হত্যা মামলার বিচার এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এ মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ৫৯৪ জনকে। কবে নাগাদ নিম্ন আদালতে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যক্রম শেষ হবে তা বলতে পারছে না কেউই।
তবে দীর্ঘ সময়ক্ষেপনের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, মামলার তদন্তে সময় গেছে দুই বছর। ছয়জন সরকারি কর্মকর্তাকে অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি করার অনুমতি না পাওয়ায় দুই বছর ঝুলে ছিল কাজ। এরপর উচ্চ আদালতের নির্দেশে থমকে ছিল মামলার কার্যক্রম।
এ মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর বিমল সমাদ্দার বলেন, ‘নানাবিধ কারণে রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় হত্যা মামলার বিচার বেশি দূর এগোয়নি। তবে গত এক বছরে প্রায় ৫০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। এর আগে মামলার তদন্ত কাজ চলেছে দুই বছর, এরপর চার্জশিট দাখিলে কেটে যায় আরও কয়েক বছর। তারপর উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলার কার্যক্রম স্থগিত ছিল বেশ কয়েক বছর। সর্বশেষ সব বাধা পেরিয়ে গত বছর থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। এরমধ্যে এত বছরে রানা প্লাজার ঘটনায় আহত যাদেরকে সাক্ষী করা হয়েছিল, তারা দেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা এই সব সাক্ষীদের আদালতে আনতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। এখন সাক্ষ্য গ্রহণ যে হারে চলছে তাতে যদি নতুন করে কোনো বাধা না আসে তাহলে দ্রুত মামলা শেষ হবে।’
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে এক হাজার ১৩৫ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন হাজার খানেক শ্রমিক। এ ঘটনায় মোট তিনটি মামলা হয়।
এর মধ্যে অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে মামলাটি করে পুলিশ। ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণের অভিযোগে অপর মামলাটি করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। আর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে আরেকটি মামলা করে। এই তিন মামলার কোনোটিরই বিচার শেষ হয়নি।
হত্যা মামলায় ভবন মালিক সোহেল রানার বাবাসহ দুই আসামি মারা যাওয়ায় মামলা থেকে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। মামলার বর্তমান আসামির সংখ্যা ৩৯।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ