26 C
আবহাওয়া
১:২৮ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২৫, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » গোপালগঞ্জে ফুটির বাম্পার ফলন

গোপালগঞ্জে ফুটির বাম্পার ফলন

Gopalganj Footy (Bangi)

বিএনএ গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে এবার ফুটি বা বাঙ্গির ফলন ভাল হয়েছে। ফলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। দামও ভাল পাচ্ছেন তারা। গত বছর করোনা ও লকডাউনের কারণে ফুটি বিক্রি করতে পারেন নি চাষীরা। এতে ক্ষেতের ফসল ক্ষেতেই নষ্ট হওয়ায় ব্যাপক লোকসান গুনতে হয়েছিল তাদের। তবে এবছর আগাম চাষ করার পাশাপশি ভাল দামে বিক্রি করতে পারছেন তারা।

প্রকার ভেদে প্রতি ফুটি (বাঙ্গি) ৩৫ থেকে ৪০ টাকা এবং একশ পিস ফুটি সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। এক বিঘা জমিতে ফুটি চাষে কৃষকদের খরচ হয়েছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। উৎপাদন খরচ বাদে বিঘা প্রতি ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা করে লাভ করছেন কৃষক।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কোটালীপাড়া উপজেলার তেঁতুল বাড়ি, মাছপাড়া, নলুয়া, বুরুয়া, কুমুরিয়া, চকপুকুরিয়া ও হিজল বাড়িসহ বিভিন্ন গ্রামে ফুটির চাষ করেছে  কয়েক হাজার কৃষক। এসব গ্রামের কৃষকদের একমাত্র আয়ের উৎস ফুটি চাষ। গত বছর লকডাউনের কারণে বিক্রি করতে না পাড়ায় এ বছর আগাম ফুটির চাষ করে এসব এলাকার কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকার পাশাপাশি সময়মত বীজ-সার পওয়ায় ক্ষেতে ফলনও  ভাল হয়েছে।

গোপালগঞ্জে ফুটির বাম্পার ফলন

উপজেলার চকপুকুরিয়া গ্রামের কৃষক স্বপন হালাদার জানান, এ বছর সাড়ে তিন বিঘা জমিতে  ফুটি চাষ করেছেন। ফলনও  ভাল হয়েছে। দামও ভাল পেয়েছেন বলে জানান তিনি।

কৃষক অমৃত হালদার, ক্ষিতিশ পান্ডে, বাশার কাজী বলেন, গত বছর ফুটি বিক্রির সময় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। ফলে  কোন ফসলই বিক্রি করতে পারেন নি। এতে ক্ষেতে ফসল ক্ষেতেই নষ্ট হওয়ায় লোকসান দিতে হয়েছিল। এবছর কৃষি বিভাগের পরামর্শে আগাম ফুটির চাষ করেছি। এতে ভাল ফলন পাওয়ার পাশাপাশি বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন। এতে গত বছরের ক্ষতি কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন।

কৃষক শংকর হাজরা, দীপঙ্কর রায় বলেন, এবছর ঝড়-বৃষ্টি হয়নি। এতে গাছ মারা না যাওয়া ফলন ভাল হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন পাইকরা এসে ফুটি কিনে নিয়ে যচ্ছেন। দাম ভাল পাওয়ায় ভাল লাভও হচ্ছে।

বরিশাল জেলার বানরীপাড়ার পাইকার বাদশা মিয়া বলেন, এখনকার উপাদিত ফুটি সুস্বাদু ও ভাল হওয়া এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এখানে থেকে  পিস হিসাবে ফুটি কিনে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে থাকেন তিনি।

ফুটির মৌসুমকে কেন্দ্র করে কোটালীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠেছে আড়ত। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল আড়তে নিয়ে যান। পরে ব্যবসায়ীরা আড়ত থেকে ফুটি (বাঙ্গি) কিনে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করেন। এছাড়া অনেক পাইকররা সরাসরি কৃষকেদের কাছ থেকে জমি থেকেই ফুটি কিনছেন। এ মৌ্সুমে কোটালীপাড়ায় অন্তত: কয়েকশ কোটি টাকার ফুটি বিক্রি হবে বলে আশ করা হচ্ছে।

কালিগঞ্জের আড়তদার প্রদীপ বনিক বলেন, গত বছর করোনার কারণে এসব এলাকার কৃষকরা লোকসান দিয়েছিলেন। তবে ভাল ফলন ভাল হয়েছে। এবছর কালিগঞ্জে অর্ধশতাধিক আড়ত বসেছে। কৃষকরা তাদের ফুটি জমি থেকে তুলে আড়তে নিয়ে আসছেন। সেখান থেকে পাইকররা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এবছর কৃষকরা লাভবান হয়েছেন।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর গোপালগঞ্জে ৬শ হেক্টর জমিতে ফুটি বা বাঙ্গি চাষ করা হয়েছে। সময়মতো বীজ-সার পাওয়ার পাশাপাশি আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ফুটির (বাঙ্গি) বাম্পার ফলন হয়েছে। আগাম চাষ করায় লাকডাউনের আগে বিক্রি করতে পারায় এবং ভাল দাম পেয়ে লাভবান হওয়ায় কয়েক হাজার কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, এ বছর গোপালগঞ্জে ফুটির বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছরের লোকসান কাটিয়ে ওঠার জন্য এ বছর কৃষকদের আগাম ফুটির চাষ ও বিক্রির জন্য পরামর্শ দিয়েছিল কৃষি বিভাগ। প্রথম দিকে পাইকারা এখানে এসে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে বা আড়ত থেকে ফুটি কিনেছেন। তবে আবারও লকডাউন ঘোষণা করায় অ্যাপসের মাধ্যমে কৃষক তার উৎপাদিত ফসল বিক্রি ও পাইকাররা কিনতে পারছেন। এবছর দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন বলে জানান তিনি।

বিএনএনিউজ/আরকেসি

Loading


শিরোনাম বিএনএ