29 C
আবহাওয়া
১:০৯ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ১৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-১১ (দিনাজপুর-৬)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল: সংসদীয় আসন-১১ (দিনাজপুর-৬)


বিএনএ, ঢাকা: বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল  প্রকাশ করছে। আজ থাকছে দিনাজপুর-৬ আসনের  হালচাল।

দিনাজপুর -৬ আসন

দিনাজপুর-৬ সংসদীয় আসনটি নবাবপুর, বিরামপুর, হাকিমপুর এবং ঘোড়াঘাট  উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ১১ নাম্বার আসন।

প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এম মতিউর রহমান বিজয়ী

১৯৭৩ সালের ৭ই মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি রংপুর-১১ নামে পরিচিত ছিল। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ১২ হাজার ৭৪ জন। ভোট প্রদান করেন ৫৩ হাজার ৪ শত ১৯ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এম মতিউর রহমান বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪৩ হাজার ২ শত ১২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ন্যাপ মোজাফফরের আব্দুল হালিম। কুঁড়েঘর প্রতীকে তিনি পান  ৮ হাজার ১ শত  ৬৭ ভোট।

 

YouTube player

দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় পেল বিএনপি প্রার্থী আতিউর রহমান

১৯৭৯ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি পরিচিতি হয় দিনাজপুর-১১ নামে। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৫১ হাজার ১শত ৭৭  জন। ভোট প্রদান করেন ৭১ হাজার ৭ শত ৪৮ জন। বিএনপি প্রার্থী আতিউর রহমান বিজয়ী হন।ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৪০ হাজার ৫৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ আব্দুস সামাদ। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১৬ হাজার ৩ শত ৩৬ ভোট।

তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে ন্যাপের লুৎফর রহমান চৌধুরী বিজয়ী

১৯৮৬ সালের ৭মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-১১ আসনটি নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় দিনাজপুর-৬। নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন  ৮৯ হাজার ৬ শত ৬১ জন। ন্যাপের লুৎফর রহমান চৌধুরী বিজয়ী হন।। তিনি পান ৫২ হাজার ৯ শত ৪৭ ভোট। নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির ডাক্তার মোস্তফা আলী খান। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৩১ হাজার ৮ শত ১ ভোট। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি।

চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুস সাত্তার চৌধুরী নির্বাচিত

১৯৮৮ সালের ৩রা মার্চ অনুষ্ঠিত চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ, বিএনপিসহ পরিচিত রাজনৈতিক দল গুলো অংশগ্রহণ করেনি। প্রতিদ্বন্দ্বীতা বিহীন এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুস সাত্তার চৌধুরী বিজয়ী হন। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৪৮ হাজার ৯ শত ৯৪ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ফ্রিডম পার্টির প্রার্থী  কামরুজ্জামান। কুড়াল প্রতীকে তিনি পান ১৪ হাজার ৪ শত ২০ ভোট।

পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ইসলামীর আজিজুর রহমান চৌধুরী বিজয়ী

১৯৯১ সালের ২৭ই ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে এই আসনে ভোটার ছিলেন  ২ লাখ ৬৩ হাজার ৪ শত ৬২ জন। ভোট প্রদান করেন ১লাখ ৫৪ হাজার ৩শত ৭৫ জন। নির্বাচনে  জামায়াত ইসলামীর আজিজুর রহমান চৌধুরী বিজয়ী হন। দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে তিনি পান ৪৩ হাজার ৯ শত ৮৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন  আব্দুস সালাম আমান। তিনি পান ৩৭ হাজার ২ শত ৬৭ ভোট।

সপ্তম সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার 

১৯৯৬ সালের ১২ই জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন  ২ লাখ ৬৬ হাজার  ২ শত ৫১ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৬ হাজার ৬ শত ১৯ জন। নির্বাচনে  আওয়ামী লীগের এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৭৫ হাজার ২ শত ৬৮ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির আতিউর রহমান। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৬২ হাজার ৪ শত ৯৫ ভোট।

অষ্টম সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন জামায়াত ইসলামীর আজিজুর রহমান চৌধুরী

২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন  ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৯ শত ৬২ জন । ভোট প্রদান করেন  ২ লাখ ৭৮ হাজার ১ শত ৭ জন। নির্বাচনে   জামায়াত ইসলামীর আজিজুর রহমান চৌধুরী বিজয়ী হন। দাড়িপাল্লা প্রতীকে তিনি পান   ১ লাখ ১০ হাজার ৫ শত ৯৮ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজু।  নৌকা  প্রতীকে তিনি পান ৮৮ হাজার ৯ শত ৪৩ ভোট।

নবম সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের আজিজুল হক চৌধুরী

২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৭৪ হাজার ১ শত ৭ জন। ভোট প্রদান করেন ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৭শত ৪৪ জন। আওয়ামী লীগের আজিজুল হক চৌধুরী বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬ শত ১০ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জামায়াত ইসলামীর আনোয়ারুল হক। দাড়িপাল্লা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৩২ হাজার ৭ শত ৫২  ভোট।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিবলি সাদিক নির্বাচিত

২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৬ আসনে ভোটার ছিলেন ৪ লাখ ১৩ হাজার ৫ শত ৮০ জন । ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ২০ হাজার ৪ শত ৪৯ জন । নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিবলি সাদিক বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ১৫ হাজার ৩৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ওয়াকার্স পার্টির রবীন্দ্র নাথ সরেন। হাতুড়ি প্রতীকে তিনি পান  ৩ হাজার ৪ শত ৯৯ ভোট।কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিবলী সাদিক পুন:নির্বাচিত

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৬ আসনে ভোটার ছিলেন ৪ লাখ ৬৬ হাজার ১ শত ৭২ জন। ভোট প্রদান করেন ৩ লাখ ৬১ হাজার ৮ শত ৫৯ জন। নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন  ৪ জন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের সিবলী সাদিক, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির আনোয়ারুল ইসলাম, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী  আন্দোলন বাংলাদেশের নুর আলম সিদ্দিক,  আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শাহিদা খাতুন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।  নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সিবলী সাদিক বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২ লাখ ৮১ হাজার ৮ শত ৯১ ভোট । তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির  মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম।ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৬৯ হাজার ৭ শত ৬৯  ভোট। কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে।

দিনাজপুর-৬ আসনে আওয়ামী লীগ বিরোধী ভোট বেশি

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, দিনাজপুর-৬ আসনে প্রথম, সপ্তম, নবম, দশম, একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা জয়ী হয়। দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি, তৃতীয় সংসদে ন্যাপ,  চতুর্থ সংসদে জাতীয় পার্টি, পঞ্চম ও অষ্টম সংসদে জামায়াত ইসলামী প্রার্থীরা বিজয়ী হন।

এতে দেখা যায়, এই আসনে আওয়ামী লীগ বিরোধী ভোট বেশি। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা শক্তিশালী নয়। জামায়াত ইসলামীর সংগঠনিক অবস্থা দৃশ্যত মজবুত না হলেও তাদের প্রচুর ভোটার রয়েছে। নির্বাচন কমিশন জামায়াত ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেছে। এ অবস্থায় তাদের ভোটারা আওয়ামী লীগ বিরোধী জোটকে জিতিয়ে আনার চেষ্ঠা করবে।

বিএনএ/ শিরীন,ওজি,ওয়াইএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ