বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দরে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা বিপজ্জনক (ডিজি) এবং রাসায়নিক পণ্যভর্তি কন্টেইনার ও কার্গো পণ্যের জট কমাতে গুদাম ভাড়া চার গুণ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সোমবার (২৪ মার্চ) বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) এনামুল করিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষণা দেয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে আমদানি করা বিপজ্জনক ও রাসায়নিক পণ্যবাহী কন্টেইনারের ডেলিভারি বুঝে নিতে দেরি হচ্ছে। এতে ঝুঁকিতে পড়ছে বন্দর। ঝুঁকি কমাতে ও সময় বাঁচাতে পণ্যবাহী কন্টেইনার ও পণ্য দ্রুত ডেলিভারি নিতে আমদানিকারকদের অনুরোধ করা হয়েছে।
আরও বলা হয়েছে, এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। অবস্থার উন্নতি না হলে রিগুলেশন্স ফর ওয়ার্কিং অফ চিটাগং পোর্ট (কার্গো অ্যান্ড কন্টেইনার)-২০০১ এর ১৬০ ধারা অনুযায়ী গুদাম ভাড়া চার গুণ হারে বাড়ানো হবে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর বিভিন্ন ইয়ার্ড ও টার্মিনাল মিলে ২০ ফুট দীর্ঘ (টিইইউ’স) ৪৯ হাজার ১৮টি কন্টেইনার ধারণক্ষমতার বিপরীতে বুধবার (২৪ মার্চ) সকাল ৮টায় কন্টেইনার ছিল ৩৬ হাজার ২৩টি। আগের দিন ছিল ৩৪ হাজার ৭১২টি। বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় বন্দর থেকে ডেলিভারি হয়েছে ৪ হাজার ২৫৫টি। জাহাজ থেকে বন্দরে নেমেছে ৪ হাজার ৮৫০টি, জাহাজে তোলা হয়েছে ২ হাজার ২৯৮টি। বন্দরে নিলামযোগ্য কন্টেইনার আছে ৭ হাজার ৪৪১টি।
এনামুল করিম বলেন, জাহাজ থেকে প্রতিদিন যে পরিমাণ কন্টেইনার নামছে, সেই গতিতে বন্দর থেকে ছাড় না নেয়ায় বন্দরে কন্টেইনার জটের সৃষ্টি হচ্ছে। গুদামের ভাড়া বাড়ালে আমদানিকারকদের ব্যয় অনেক বেড়ে যাবে। তখন তারা দ্রুত কন্টেইনার ডেলিভারি নিতে তৎপর হবেন। এছাড়া লেবাননের বৈরুত বন্দরে বিস্ফোরণের ঘটনার মতো যেন বাংলাদেশে এমন কোনো ভয়াবহ ঘটনা না ঘটে তাই এমন সিদ্ধান্ত।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৪ আগস্ট লেবাননের রাজধানী শহর বৈরুত বন্দরে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে কমপক্ষে ১০০ জনের মৃত্যু হয় এবং ৪ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি আহত হয়। এঘটনার পর নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। দুর্ঘটনা এড়াতে দেশের সব বন্দর, স্থলবন্দর, বিমানবন্দরের আশপাশে কোনো রকম বিস্ফোরক, তরল দাহ্য পদার্থ ও কেমিকেল মজুদ না করার নির্দেশনা দিয়েছে বিস্ফোরক অধিদপ্তর।
দেশের সার কারখানার পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্প কারখানায় কাঁচামাল হিসাবে বিদেশ থেকে আনা হয় অ্যামোনিয়া নাইট্রেট, সোডিয়াম নাইট্রেট, সালফার, পটাশিয়াম ক্লোরেট, ইথানল, মিথানলের মতো উচ্চমাত্রার কেমিকেল। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে ক্ষতিকর এই কাঁচামাল মজুদ বন্ধ করতে নির্দেশনা দেয় বিস্ফোরক অধিদপ্তর।
বিএনএনিউজ/মনির