অধ্যাপক অজিত কুমার গুহ ১৯১৪ সালের ১৫ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন মহান ও আদর্শ শিক্ষক। ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি তথা দেশপ্রেমের এক দুর্নিবার আকর্ষণের কারণেই তিনি ভাষা-আন্দোলনের একেবারে সূচনাপর্ব থেকেই জড়িত ছিলেন। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে অনুষ্ঠিত প্রথম সাহিত্য সভায় তিনি অংশগ্রহণ করেন এবং বাংলা ভাষার পক্ষে জোরালো মতামত প্রদান করেন।
১৯৪৭ সালের ১২ নভেম্বর ফজলুল হক হলে ভাষাসংক্রান্ত আলোচনার জন্য সাহিত্যিক, ছাত্র ও শিক্ষকদের সমর্থনে একটি সাহিত্য সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভাটি ছিল বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার সমর্থনে প্রথম সাহিত্য সভা। এ সভায় কয়েকজন মন্ত্রীর উপস্থিতিতে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার আনু্ষ্ঠানিক দাবি উত্থাপন করা হয়, যা উপস্থিত মন্ত্রীরাও সমর্থন করে বক্তব্য রাখেন।
ভাষা-আন্দোলনের প্রথম সাহিত্য সভা প্রসঙ্গে অধ্যাপক অজিত কুমার গুহ বলেন, ‘১৯৪৭ সালের নভেম্বর মাসে ফজলুল হক হলে ভাষাসংক্রান্ত সব আলোচনা এবং কর্মপন্থা নির্ধারণের জন্য একটি গোপন সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভাতে উপস্থিত থাকেন রণেশ দাশগুপ্ত, আবুল কাসেম, শামসুদ্দীন আহমদ (মুন্সীগঞ্জ), শামসুল হক, অলি আহাদ, শহীদুল্লাহ কায়সার, মোহাম্মদ তোয়াহা প্রমুখ। আমি সে সময় Progressive Writers Association-এর প্রতিনিধিরূপে এ সভায় যোগদান করি।’
১৯৫২ সালের ভাষা-আন্দোলনে অজিত কুমার গুহ সাহসী ভূমিকা পালন করেন। সে সময় তিনি গ্রেফতার হয়ে প্রায় দুই বছর জেলে ছিলেন। একুশের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘আমি সে সময় হেয়ার স্ট্রিটের একটি বাড়িতে থাকতাম। পাশের বাড়িতে থাকতেন জহুর হোসেন চৌধুরী এবং খায়রুল কবীর। ২৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি সভায় এটিএম মুস্তফা এবং তার ভাই তোয়াহা আমাকে আক্রমণ করে বক্তৃতা দেন।
সূত্র: যারা অমর ভাষা সংগ্রামে, লেখক: এমআর মাহবুব
সম্পাদনায়: মনির ফয়সাল