বিএনএ, কক্সবাজার: কক্সবাজারে নারী পর্যটককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় ৭ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত আটটার দিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এ মামলা করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান।
মামলায় কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম ও তার প্রতিবেশী ও বন্ধু ইসরাফিল হুদা জয়া এবং হোটেল জিয়া গেস্ট ইনের ম্যানেজার রিয়াজুদ্দিন ছোটনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও আরও চারজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানান, নারী পর্যটক ধর্ষণের ঘটনায় সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলাটি ট্যুরিস্ট পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এর আগে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কক্সবাজারের হোটেল জিয়া গেস্ট ইন এর ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় র্যাব। হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ইতোমধ্যে দুই জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন- আশিকুল ইসলাম ও জয়া।
ভুক্তভোগী ওই নারী জানিয়েছেন- বুধবার বিকেলে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে তারা বেড়াতে যান। সেখানে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগলে, কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যার পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার ৮ মাসের সন্তান ও স্বামীকে সিএনজি অটোরিকশায় করে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। এ সময় আরেকটি সিএনজি অটো রিকশায় ওই নারীকে তুলে নেয় তিন যুবক। পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে তিনজন।
এরপর তাকে নেয়া হয় কলাতলীতে জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে। সেখানে ইয়াবা সেবনের পর আরেক দফা তাকে ধর্ষণ করেন ওই তিন যুবক। ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে কক্ষ বাইরে থেকে বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা।
ওই নারী আরও জানান, জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে এক যুবকের সহায়তায় কক্ষের দরজা খুলেন তিনি। তারপর পাশের অন্য একজনের সহযোগিতায় কল দেন র্যাব-১৫ ব্যাটেলিয়নকে। খবর পেয়ে র্যাব হোটেল-মোটেল জোনের জিয়া গেস্ট ইন নামে হোটেল থেকে বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে তাকে উদ্ধার করে। তার স্বামী ও সন্তানকে উদ্ধার করা হয় পর্যটন গলফ মাঠ এলাকা থেকে।
ভুক্তভোগীর স্বামী বলেন, ‘বারবার হাতে-পায়ে ধরলেও তারা আমার স্ত্রীকে ফেরত দেয়নি। বেড়াতে এসেছিলাম বেতন পেয়েছি সেই খুশিতে। এখন স্ত্রীর অবস্থা ভালো নয়।’
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর সিপিসি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান বলেন, খবর পেয়ে আমরা হোটেল থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধারের পর তার স্বামী-সন্তানকে উদ্ধার করি। এরই মধ্যে তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হোটেল জিয়া গেস্ট ইনের ম্যানেজারকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
বিএনএ/এমএফ