বিএনএ, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহে বিজিবি ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পে কর্তব্যরত থাকা অবস্থায় সোহরাব হোসাইন চৌধুরী (২৩) নামে এক বিজিবি সদস্য নিজের গুলিতে আত্মহত্যার করার খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার (২১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর খাগডহর এলাকার ৩৯ বিজিবি ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহরাব হোসাইন চৌধুরী ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার বাশ পাদুয়াগ্রামের আনোয়ার হোসেন চৌধুরীর ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিবি ৩৯ ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পের সহকারী পরিচালক ইউনুস আলী।
তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) পোষ্ট দিয়ে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে সোহরাব হোসাইন চৌধুরী নামে এক বিজিবি সদস্য নিজের বন্দুকের গুলিতে আত্মহত্যা করেছে। তবে, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) ফারুক বলেন, খবর পেয়ে রাতেই মরদেহ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে নিজের বন্দুকের গুলিতে নিজেই আত্মহত্যা করেছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে বলেও জানান তিনি।
মৃত্যুর কয়েক ঘন্টা আগে নিহত বিজিবি সদস্য সোহরাব হোসাইন চৌধুরী ফেসবুক পাঠকদের জন্য হুবুহু দেয়া হলো, মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্ম নিয়ে ভালো কিছু আশা করা মহাপাপ। নামে সরকারি চাকরি কিন্তু বেতনটা ঐ নামের উপরই ৭ বছর চাকুরি এখনও বাড়িতে গেলে ঠিক মতো একটু কোথাও যাওয়া হয় না। ছুটির সময়টাও চোরের মতো থাকতে হয়। গত কিছুদিন আগে আম্মু খুব অসুস্থ হয়ে পড়লো মায়ের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে গেলাম পরিক্ষা নিরক্ষার পর মায়ের জন্য ঔষধ কিনবো সে টাকা আর হাতে নেই পরে মামার কাছ থেকে ধার নিয়ে মাকে কিছু ঔষধ আর গাড়ি ভাড়া দিলাম।
এমনটা প্রতিমাসেই হতে থাকে না পারি নিজের খুশি মতো একটা জিনিস কিনতে কিনবা একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে ভালো কিছু খেতে। না পারি পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে তার মধ্যে বর্তমান বাজারের যা পরিস্থিতি এতে বাজার করা কিনবা সংসার চালানো কতটা কঠিন বুঝানোর মতো না, ছোট ভাইটা শারীরিক ভাবে কিছুটা অক্ষম তার জন্য কিছু করবো তার সুযোগ হয়নি এই জীবনে।
এমন পরিস্থিতি মানুষ প্রশ্ন করে বিয়ে করি না কেন। কিন্তু মানুষকে তো আমার সরকারি চাকরির ভেতর টা দেখাতে পারি না আমার বেতন আমার সুযোগ সুবিধা সেভিংস এই সব কিছুতে অন্য একটা মানুষকে আনা আমার জন্য মরার উপর খাঁড়ার খাঁ। তাই বিয়ে শাদীর চিন্তা করিওনা। শুধু খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে পারলে খুশি এমন চাইলাম তাও আর হয়ে উঠলো না ৭ টা বছর মানসিক যন্ত্রণা আর অভাবের সাথে যুদ্ধ করতে করতে সত্যি বড় ক্লান্ত হয়ে পড়ছি। এইবার একটু রেষ্ট দরকার।
আমার পরিবার সহকর্মী সিনিয়র জুনিয়র আমার বন্ধুদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এই নিকৃষ্ট কাজের জন্য পারলে ক্ষমা করবেন এই ছাড়া বিকল্প কোনো পথ আমার ছিল না।“
বিএনএনিউজ/হামিমুর রহমান/এইচ.এম।