চট্টগ্রাম: কর্ণফুলীর মত অর্থকরী নদী রক্ষায় সকলকে দ্রুত এগিয়ে আসতে হবে।সে সাথে নদী দখল এবং দূষণের জন্য দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায়ও আনতে হবে।
রবিবার(২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪) বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) চট্টগ্রাম, ব্লু প্ল্যানেট ইনিশিয়েটিভ, মাসিক প্রাণপ্রকৃতির আয়োজনে চট্টগ্রামের প্রাণ কর্ণফুলী নদীর তীরে নতুন ফিশারি ঘাট এলাকায় একটি মানববন্ধন এবং প্লাস্টিক বর্জ্য পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালিত হয়।
ধরা চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট কবি, লেখক, ও মাসিক প্রাণপ্রকৃতি সম্পাদক শারুদ নিজামের সঞ্চালনায় ও লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল এর জেলা ৩১৫-বি৪ এর ডিজি লায়ন কোহিনূর কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ কর্মী সৈয়দ আহমেদ বাদল।
তিনি কর্ণফুলী নদী রক্ষায় নাগরিকদের আরো যত্নশীল হবার আহবান জানান। পরিবেশকর্মী আনিসুর রহমান বাবুল বলেন, নদীমাতৃক এই দেশে নদী হচ্ছে আমাদের জাতীয় সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষায় সর্বস্তরের জনগণের এগিয়ে আসা উচিত।
পরিবেশ সংগঠক লায়ন ওবায়দুর রহমান বলেন, কর্ণফুলীর নাব্যতা হারানোর কথা উঠে আসে। তিনি চট্টগ্রামের সুয়ারেজ সিস্টেমের সমালোচনা করে বলেন, এই রূপ ড্রেনেজ সিস্টেম চালু থাকলে কর্ণফুলীর দূষণ রোধ সম্ভব নয়, বরং একসময় ঐতিহ্যবাহী এই নদী কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাবে।
একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে ডাক্তার ইফতেখার এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বলেন, নদী দূষণ রোধে আমাদের সচেতন নাগরিকদের সবার আগে এগিয়ে আসা উচিত। নদী রক্ষায় বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা খালে নদীতে না ফেলার অনুরোধ জানান।
পরিবেশ সংগঠক এ্যাড: রেহানা বেগম রানু বলেন, নদী রক্ষায় মনের আবর্জনা আগে পরিষ্কার করা উচিত। তিনি আরো বলেন, বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য ফেলার কারনে নদী দখল এবং দূষণ এর জন্য সবচেয়ে দায়ী। তবে কেন তাদের থেকে দখলমুক্ত করে, তাদের থেকে ক্ষতিপূরণ নিয়ে তাদেরকে কেন আইনের আওতায় আনা হবেনা?
ধরার অন্যতম সংগঠক ইমাম হোসেন চৌধুরী বলেন, আজকের কর্মসূচি শুধু ব্যানার নিয়ে দাঁড়ানো নয় একটা ফলাফল নিয়ে আসাই হোক আমাদের প্রত্যয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভূগোল বিভাগের প্রফেসর ইকবাল সারোয়ার প্লাস্টিক এবং মাইক্রোপ্লাস্টিক ব্যবহার বিষয়ে একদম জিরো টলারেন্স কার্যকরের অনুরোধ জানান।
মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ইদ্রিস আলী বলেন, বাংলাদেশের প্রাণ কর্ণফুলী বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। তাই আমাদের প্রত্যেককে এই অর্থকরী নদী রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে লায়ন্স ডিজি কোহিনূর কামাল সদ্য হওয়া বন্যার উদ্ধৃতি টেনে বলেন, এই বন্যার অন্যতম কারণ হলো আমাদের খাল নদী নালা গুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করা এবং প্লাস্টিক ব্যবহার না কমানো। পরিশেষে আজকের কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ধরা চট্টগ্রাম, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, ক্যাডেট ফোরাম চট্টগ্রাম, প্রাণপ্রকৃতি, লিও ক্লাব অব চিটাগাং বেঙ্গল সিটি এবং উপস্থিত সচেতন নাগরিকবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, এডভোকেট কানিজ কাওসার রীমা, শাফায়াত নুপুর, আতাউল হক সুমন, ফরমান উল্লাহ, রেজাউল করিম সেন্টু , মোহাম্মদ আকতার, ক্যাডেট ফোরাম নেতৃবৃন্দ, লিও ক্লাব অব চিটাগাং বেঙ্গল সিটির লিওবৃন্দ এবং আরো অনেক সচেতন নাগরিকবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে গান পরিবেশনা করেন অভি কিম্বেল ও তার দল।
অনুষ্ঠানের শেষে কর্ণফুলীর তীরে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়।উক্ত পরিষ্কার অভিযানে এলাকাবাসী, মাঝি ভাইয়েরা স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নেন এবং সাধুবাদ জানান। অনুষ্ঠান শেষে সঞ্চালক শারুদ নিজাম উপস্থিত এলাকাবাসী এবং সকল মাঝি-মাল্লাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
বিএনএনিউজ২৪, এসজিএন