29 C
আবহাওয়া
৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ - মে ২২, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল:সংসদীয় আসন-২৩৫ (মৌলভীবাজার-১)

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হালচাল:সংসদীয় আসন-২৩৫ (মৌলভীবাজার-১)

মৌলভীবাজার-১

বিএনএ, ডেস্ক : বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক নির্বাচনী হালচাল প্রচার করছে। এতে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদ থেকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর আসনভিত্তিক সাংগঠনিক হালচাল তুলে ধরার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম। আজ থাকছে মৌলভীবাজার-১ আসনের হালচাল।

YouTube player

মৌলভীবাজার-১ আসন 

মৌলভীবাজার-১ সংসদীয় আসনটি বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ২৩৫ তম আসন।
বাংলাদেশের একমাত্র তরল সোনা আগর আতরের এলাকা হিসেবে পরিচিত বড়লেখা। এখানে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ সৌন্দর্য মাধবকু- জলপ্রপাত, পাশেই পরিকুন্ড জলপ্রপাত, মাধবকুন্ড ইকোপার্ক, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ও তেল, গ্যাস, ইউরেনিয়ামসহ নানা খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধ পাথারিয়া পাহাড়। দেশীয় মৎস্য ভান্ডারে ভরপুর দেশের অন্যতম বৃহত্তম হাওর হাকালুকি হাওড়। অপরদিকে রয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড়টিলায় সারি সারি মনোরম চা বাগান। রয়েছে খাসিয়া, গারোসহ অনেক নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী।

পঞ্চম সংসদ নির্বাচন: জাতীয় পার্টির এবাদুর রহমান চৌধুরী বিজয়ী হন

১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই আসনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ২০ হাজার ৫ শত ৫১ জন। ভোট প্রদান করেন ৭৩ হাজার ৫২ জন। নির্বাচনে জাতীয় পার্টির এবাদুর রহমান চৌধুরী বিজয়ী হন। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ২৭ হাজার ৯ শত ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের ইমাম উদ্দীন আহমেদ। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২৭ হাজার ৫ শত ৫৮ ভোট ।

ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: এবাদুর রহমান চৌধুরী কে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগসহ সব বিরোধী দল এই নির্বাচন শুধু বর্জন করে ক্ষান্ত হয়নি, প্রতিহতও করে। নির্বাচনে বিএনপি,ফ্রিডম পার্টি এবং কিছু নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দল, অখ্যাত ব্যক্তি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। এই নির্বাচনে বিএনপির এবাদুর রহমান চৌধুরী কে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত এই সংসদের মেয়াদ ছিল মাত্র ১১ দিন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ হওয়ার পর এই সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

সপ্তম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের শাহাব উদ্দীন বিজয়ী হন

১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৭ হাজার ৪ শত ২১ জন। ভোট প্রদান করেন ৮৩ হাজার ৭ শত ৫৭ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শাহাব উদ্দীন বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৩৩ হাজার ১ শত ৭৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির এবাদুর রহমান চৌধুরী । ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ২০ হাজার ৪৭ ভোট।

অষ্টম সংসদ নির্বাচন:এবাদুর রহমান চৌধুরী বিজয়ী হন

২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ২৮ হাজার ৭ শত ৮৭ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৩ হাজার ৫ শত ৮৭ জন। নির্বাচনে বিএনপির এবাদুর রহমান চৌধুরী বিজয়ী হন । ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৪৯ হাজার ২ শত ৮১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের শাহাব উদ্দীন । নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৪৭ হাজার ৫ শত ৩৯ ভোট।

নবম সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের শাহাব উদ্দীন বিজয়ী হন

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৩ হাজার ১ শত ৭০ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৭৯ হাজার ১ শত ৮৯ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শাহাব উদ্দীন বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৬ হাজার ৫ শত ৭১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির এবাদুর রহমান চৌধুরী । ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৬৯ হাজার ৬ শত ১৯ ভোট।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের শাহাব উদ্দীন বিজয়ী হন

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ২৮ হাজার ৪ শত ৮৪ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ১৪ হাজার ৭ শত ৭২ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শাহাব উদ্দীন বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৪ হাজার ২০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির আহমেদ রিয়াজ উদ্দীন । লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৯ হাজার ৬ শত ৪৯ ভোট। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে র্নিবাচনের দাবিতে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচন: আওয়ামী লীগের শাহাব উদ্দীন বিজয়ী হন

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৬৫ হাজার ৮ শত ১৩ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ১৫ হাজার ৮ জন।

নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৪ জন। নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের শাহাব উদ্দীন, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির নাসির উদ্দীন আহমেদ , হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গিয়াস উদ্দীন এবং মোমবাতি প্রতীকে ইসলামী ফ্রন্টের আহমেদ রিয়াজ উদ্দীন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শাহাব উদ্দীন বিজয়ী হন । নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৪৪ হাজার ৫ শত ৯৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির নাসির উদ্দীন আহমেদ । ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৬৭ হাজার ৩ শত ৪৫ ভোট। কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন ও ফলাফল প্রত্যাখান করে।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পঞ্চম সংসদে জাতীয় পার্টি , ষষ্ঠ ও অষ্টম সংসদে বিএনপি, সপ্তম, নবম, দশম ও একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়।

দৈবচয়ন পদ্ধতিতে জরিপ

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর এর গবেষণা টিম দৈবচয়ন পদ্ধতিতে সারাদেশে জরিপ চালায়। জরিপে অংশগ্রহণকারি বেশীরভাগ ভোটার ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরেপক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তারই ভিত্তিতে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর মৌলভীবাজার-১ আসনে পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম ও নবম এই ৪টি নির্বাচনের প্রদত্ত ভোটের পরিসংখ্যানকে মানদন্ড ধরে আওয়ামী লীগ,বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ইসলামীর সাংগঠনিক শক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি কল্পানুমান উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, মৌলভীবাজার-১ সংসদীয় আসনে ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৬০.৬০% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩৭.৭২%, বিএনপি ১৫.৩৭%, জাতীয় পাটি ৩৮.১৯%, জামায়াত ইসলামী ৮.৫৬% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ০.১৬% ভোট পায়।

১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৭৭.৯৭% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৩৯.৬১%, বিএনপি ২৩.৯৩% জাতীয় পাটি ১৮.৩১%, জামায়াত ইসলামী ১০.৭০% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ৭.৪৫% ভোট পায়।
২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৮০.৪৩% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৪৫.৮৯%, ৪ দলীয় জোট ৪৭.৫৭%, জাতীয় পাটি ৬.৫৩%, স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ০.০১% ভোট পায়।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৮৭.২৮% ভোটার। প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ১৪ দলীয় জোট ৬০.১০%, ৪ দলীয় জোট ৩৯.২৫% স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ০.৬৫% ভোট পায়।

মৌলভীবাজার-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও মনোনয়ন চাইবেন।তার মনোনয়ন অনেকটা নিশ্চিত। এছাড়া মনোনয়ন চাইবেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য এস এম জাকির হোসাইন এবং বড়লেখা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক বড়লেখা উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সুন্দর।

বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন সিলেট জেলা বিএনপির সহসভাপতি নাসির উদ্দিন মিঠু , কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক শরীফুল হক সাজু। ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক জামায়াতে ইসলামীর মাওলানা আমিনুল ইসলাম জোটের মনোনয়ন চাইবেন। জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইবেন জাতীয় পার্টির মৌলবীবাজার জেলা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আহমেদ রিয়াজউদ্দিন।

তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, সীমান্তবর্তী উপজেলা জুড়ী ও বড়লেখা নিয়ে গঠিত এই আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থান বেশ সুসংহত। তবে বিএনপির অবস্থানও কম শক্তিশালী নয়। যদিও গত ১৫ বছর ধরে ক্ষমতা বলয়ের বাহিরে থাকায় সাংগঠনিক তৎপরতা দৃশ্য|মান নয়। নেতাকর্মী সমর্থকরা অনেকটাই নীরব। তবে সুযোগ পেলে এই ‘নীরব’ সমর্থকেরাই ঘুরিয়ে দিতে পারেন ভোটের মোড়। জামায়াতে ইসলামী বেশ সুসংগঠিত। তাদের প্রচুর ভোট রয়েছে। যা বিএনপির বাক্মেই যাবে।

এই আসনে প্রধান ভোট ব্যাংক চা-বাগান শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। বড়লেখায় ১৮টি ও জুড়ীতে ১৬টি চা-বাগানে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার চা শ্রমিকদের ভোট রয়েছে। চা শ্রমিকদের বড় একটি অংশ আওয়ামী লীগের সমর্থক। বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সমর্থক নেহায়েত কম নয়। এই আসনে চা শ্রমিকরাই নির্ধারণ করে জয় পরাজয়।
বড়লেখা-জুড়ির উন্নয়ন বলতে গত তিনবারের সংসদ সদস্য বন, পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের হাত ধরেই হয়েছে। ২০০৮ সালে নির্বাচিত হয়ে প্রথমেই তিনি গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়নে হাত দেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত প্রায় ১৫ বছরে বড়লেখা জুড়ির বলতে গেলে আর কাঁচা রাস্তা নেই। ৬৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কুলাউড়া-শাবাজপুর রেল লাইনের কাজ তিনি শুরু করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরন্দ্রে মোদি কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। উন্নয়ন, সাংগঠনিক শক্তি ও চা শ্রমিকরাই হচ্ছে মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের ভোটের মাঠের শক্তি।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হলে জাতীয় সংসদের ২৩৫ তম সংসদীয় আসন (মৌলভীবাজার-১) আসনটিতে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিএনএ/ শাম্মী, রেহেনা, ওজি ,ওয়াইএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ