বিএনএ ডেস্ক : আজ ২৩ জুন ঐতিহাসিক পলাশী দিবস। এখন থেকে ২৬৫ বছর আগে ১৭৫৭ সালের এ দিনে পলাশীর আম বাগানে ইংরেজদের সঙ্গে এক যুদ্ধে বাংলা বিহার ও উড়িষ্যার নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে অস্তমিত হয় বাংলার স্বাধীনতার শেষ সূর্য। ইংরেজদের খুশি করে বিশ্বাসঘাতক মীর জাফরের ক্ষমতা গ্রহণ এবং পরাজয়ের পর নবাব সিরাজের বেদনাদায়ক মৃত্যু হলেও উপমহাদেশের মানুষ এখনো দিবসটিতে নবাবকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে থাকে। সেদিন দেশের সঙ্গে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। ইতিহাস থেকে জানা যায়, নবাবের সেনা বাহিনীর তুলনায় ইংরেজদের সেনা সংখ্যা ছিল অনেক কম। নবাবের বিজয় ছিল প্রায় সুনিশ্চিত। সেখানে বিশ্বাসঘাতকতা করে ইংরেজদের বিজয়ী করা হয়।
ইতিহাসে দেখা যায়, ১৭৫৭ সালের ২৩ এপ্রিল ইংরেজরা নবাবকে সিংহাসনচ্যুত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এটা কার্যকর করতে ইংরেজ সেনাপতি লর্ড ক্লাইভ রাজদরবারের অভিজাত সদস্য উমিচাঁদকে ‘এজেন্ট’ নিযুক্ত করেন। এ ষড়যন্ত্রের নেপথ্য নায়ক মীর জাফর তা বুঝতে পেরে নবাব তাকে প্রধান সেনাপতির পদ থেকে অপসারণ করে আব্দুল হাদীকে ওই পদে অভিষিক্ত করেন। কূটচালে পারদর্শী বিশ্বাসঘাতক মীর জাফর পবিত্র কুরআন শরীফ ছুঁয়ে শপথ করায় নবাবের মন জয় করে এবং মীর জাফরকে প্রধান সেনাপতি পদে পুনর্বহাল করেন। সিরাজের এই ভুল সিদ্ধান্তই বাংলার আকাশে কালো মেঘের আবির্ভাব ঘটায়।
ইংরেজদের পূর্ণিয়ার শওকত জঙ্গকে সাহায্য করা, মীরজাফরের সিংহাসন লাভের বাসনা ও ইংরেজদের পুতুল নবাব বানানোর পরিকল্পনা, ঘষেটি বেগমের সাথে ইংরেজদের যোগাযোগ, নবাবের নিষেধ সত্ত্বেও ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ সংস্কার, কৃষ্ণ বল্লভকে কোর্ট উইলিয়ামে আশ্রয় দান ইত্যাদি। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশীর আমবাগানে ইংরেজ ও নবাবের মধ্যে যুদ্ধ হয়। মীর মদন ও মোহন লাল বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে ইংরেজদের কোনঠাসা করলেও বিশ্বাসঘাতক জগৎশেঠ, রায় দুর্লভ, উর্মিচাঁদ, ইয়ার লতিফ প্রমুখ কুচক্রী প্রাসাদ ষড়যন্ত্রকারীদের বিশ্বাসঘাতকতার ফলে নবাবের পরাজয় ঘটে। সেই সাথে বাংলার স্বাধীনতার লাল সূর্য পৌনে দু’শ বছরের জন্য অস্তমিত হয়।