বিএনএ, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহে দুই অটোরিকশা চালক হত্যার ঘটনায় তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিন জনই পেশাদার ছিনতাইকারী ও মাদকাসক্ত ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। রোববার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভুঁঞা একথা জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মহানগরীর গোহাইলকান্দি এলাকার ভজন কুমার দে’র ছেলে অনন্ত কুমার দে (১৯), মোহাম্মদ খোকনের ছেলে মামুন (১৯), কাজী মিল্লাতের ছেলে কাজী মো. মাহিন বাদশা (১৯)। এদের মাঝে মামুন নগরীর সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ ও অনন্ত কুমার দে কর্মাস কলেজের শিক্ষার্থী।
পুলিশ সুপার বলেন, সদর উপজেলার দাপুনিয়া বাজারের চাঁন মিয়ার ছেলে অটোরিকশা সাদেক মিয়া (৩৫), একই উপজেলার চর ঘাগড়া এলাকার আক্কাস আলীর ছেলে রিকশা চালক হাবিবুর রহমান (৫১) ঈদের রাতে গাড়ি চালাতে বের হয়।
ঘটনার দিন মধ্যরাতে তিন ছিনতাইকারী গাঙ্গিনারপাড় এলাকা থেকে সাদেক মিয়ার অটোরিকশা ভাড়া করে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করে। ঘোরাফেরা করার একপর্যায়ে ভোররাত পৌনে ৪ টার দিকে গোহাইলকান্দি এলাকায় গিয়ে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। এসময় সাদেক মিয়া ছিনতাইয়ে বাধা ও টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর টাকা নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে আবার গাঙ্গিনারপাড়ে আসে।
তিনি আরও বলেন, সেখান থেকে গাঙ্গিনারপাড় এসে আবারও হাবিবুর রহমানের রিকশা ভাড়া করে ভোররাত সাড়ে ৫ টার দিকে বিপিন পার্কের বিপরিতে ডিএন চক্রবর্তী রোডে আসে। সেখানে এসে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করলে হাবিবুর রহমানও বাধা দেয়। এতে ছিনতাইকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে হাবিবুর রহমানকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
এসব ঘটনার পর স্থানীয়রা মরদেহ পরে থাকতে দেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এই ঘটনার পর তথ্য প্রযুক্তি ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ওই দিন বিকাল ৩ টার দিকে গোহাইলকান্দির জামতলা ও কাশর তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসময় গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু ও তাদের ব্যবহৃত বক্তমাখা জামা উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, তিন জনই পেশাদার ছিনতাইকারী ও মাদকাসক্ত। তারা এক সাথেই চলাফেরা করত। ঘটনার দিন ছিনতাই করার উদ্দেশে শহরের গাঙ্গিনারপাড় আসে। এর আগে তিন জন মাদক গ্রহণ করে এবং এসব হত্যাকাণ্ড ঘটায়। তাদের মাঝে অনন্ত কুমার দে’র বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে। অপর দুই জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এসব ঘটনায় কোতোয়ালী মডেল থানায় পৃথক হত্যা থানা মামলা দায়ের হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
বিএনএনিউজ/হামিমুর রহমান/এইচ.এম।