বিএনএ, ডেস্ক: `সাতকানিয়া লোহাগাড়ায় জামায়াত-শিবির আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। ইতোমধ্যে এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী সাতকানিয়া–লোহাগাড়ায় এসে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা প্রদানকারী বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র ভারতকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেছেন। তাদের বক্তৃতা শুনে মনে হয় দেশটা ইসলামিক স্টেট হয়ে যাবে এবং সেটার সূচনা হবে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া থেকে। বর্তমান স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এম. এ মোতালেব এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ডা. আ.ম.ম মিনহাজুর রহমান জামায়াত- শিবিরকে পৃষ্টেপাষকতা করছে।’
গত ২১ মার্চ দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে এক সংবাদ সম্মেলনে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সাবেক এমপি ড. আবু রেজা নদভী এই সব অভিযোগ করেছেন।
নদভী বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর থেকে এখন সাতকানিয়া–লোহাগাড়ায় নৌকা নাই, নৌকা নাই মানে আওয়ামী লীগ নাই। স্বতন্ত্র আছে, কিন্তু আমার মনে হচ্ছে- স্বতন্ত্রও নাই, জামায়াত আছে। এখন জামায়াতের এমন কোনো ক্যাডার নাই, যারা মাঠে নাই।
সাবেক সংসদ সদস্য অভিযোগ করেন, গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বর্তমান এমপির প্রত্যক্ষ মদদে সাতকানিয়া–লোহাগাড়ায় নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করার অপরাধে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, বাড়ি–ঘর ভাঙচুর, ‘মিথ্যা’ মামলা দিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে এলাকা ছাড়া করা হয়েছে। নৌকার পক্ষে যারা কাজ করেছেন সেই সব ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাড়ি ঘরে যেতে পারছেন না। অনেকেই বিদেশে চলে যেতে চাচ্ছেন। অনেকেই ঢাকায় চলে গেছেন। অনেকেই আবার চট্টগ্রাম শহরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
চট্টগ্রাম–১৫ (সাতকানিয়া–লোহাগাড়া) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য এম এ মোতালেবকে জামায়াতের এমপি বলে সম্বোধন করে আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী বলেন, তার ১০ বছরে একটি হত্যাকান্ড ঘটেনি। সেখানে গত দুই মাসে এই পর্যন্ত ৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে। কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য সীমাহীন বেড়ে গেছে। আমার ১০ বছরের আমলে সাতাকানিয়া–লোহাগাড়ায় মানুষ রাত ২টা–৩টা পর্যন্ত নির্ভয়ে চলা ফেরা করতে পেরেছিল। এখন মানুষ রাত ১২টার পর বের হতে ভয় পায়। ছিনতাই করে, ডাকাতি করে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সীমাহীন বেড়ে গেছে। মানুষ ভয়ে চলাফেরা করতে পারে না। কিন্তু প্রশাসন নীরব।
আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী বলেন, দুটি উপজেলায় গত ১০ বছরে ৫০০ মসজিদ করেছি। হাজার হাজার নলকূপ স্থাপন করেছি। সরকারি সহায়তার বাহিরে আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশন থেকে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন করেছি। যেখানে আমি বিদেশ থেকে টাকা এনে এলাকার উন্নয়ন করেছি, সেখানে আমাকে কাবিখা প্রকল্পে দুর্নীতি কেন করতে হবে?
প্রসঙ্গত. ডা. মিনহাজ টিআর–কাবিখাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে লুটপাট করেছেন মর্মে নদভীর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন। ওই মানববন্ধনের ব্যানার ও ফেস্টুনে নদভী ও তার স্ত্রী রিজিয়ার নাম লেখা ছিল।
ডা. আ.ম.ম মিনহাজুর রহমানের প্রতি ইঙ্গিত করে সাবেক সাংসদ আবু রেজা নদভী বলেন, সাতকানিয়া–লোহাগাড়ায় আজকের এই অরাজকতার মূল নায়ক হচ্ছেন একজন সন্ত্রাসী–গডফাদার। ২০১৪ সালে তিনি আমার সঙ্গে ছিলেন। একবার আমি একটি প্রকল্প উদ্বোধন করতে গেলে তার সাঙ্গপাঙ্গরা প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে সেখানে চলে এসেছিল, তাই আমি আর তাকে আমার কাছে ঘেঁষতে দেইনি।
নদভী বলেন, ডা, মিনহাজ কেরানীহাট এলাকার মুসলিম উদ্দিন ও ব্যবসায়ী আবুল হোসেনের জমি দখলের চেষ্টা করেন। এরপর থেকে তিনি আমার পেছনে আদাজল খেয়ে নামেন। মোক্ষম সুযোগ হিসেবে নেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাঁধে ভর করে নৌকাকে ডোবান।
সংবাদ সম্মেলনে নদভী বলেন ‘আমি মিনহাজুর রহমানকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, সরকারি উন্নয়নের পাশাপাশি যে ব্যক্তি সৌদি আরবের বাদশাহর সংস্থা থেকে, ওআইসি থেকে, কুয়েতসহ নানা দেশ থেকে শত শত কোটি টাকার চ্যারিটি করছে ওই লোক কিভাবে দুর্নীতি করে? আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশনে এমন অডিট হয়, যেখানে একটি টাকা এদিক ওদিক যেতে পারে না।’
বিএনএ/ শামীমা চৌধুরী শাম্মী