বিএনএ, ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম এর নির্বাচনী হালচাল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। আজ থাকছে দিনাজপুর-৫ আসনের হালচাল।
দিনাজপুর -৫ আসন
দিনাজপুর-৫ সংসদীয় আসনটি পার্বতীপুর এবং ফুলবাড়ি উপজেলা নিয়ে গঠিত। এটি জাতীয় সংসদের ১০ নাম্বার আসন।
প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন মোহাম্মদ হামিদুজ্জামান সরকার
১৯৭৩ সালের ৭ই মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি রংপুর-১০ নামে পরিচিত ছিল। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৮ হাজার ১ শত ৮৯ জন। ভোট প্রদান করেন ৪৯ হাজার ১৯ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ হামিদুজ্জামান সরকার বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৩৮ হাজার ১ শত ৪৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান খান । তিনি পান ৫ হাজার ৩২ ভোট।
দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন মুনসুর আলী সরকার
১৯৭৯ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি পরিচিত হয় দিনাজপুর-১০ নামে। নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৩৩ হাজার ২শত ৫৯ জন। ভোট প্রদান করেন ৬৮ হাজার ১ শত ২৫ জন । বিএনপি প্রার্থী মুনসুর আলী সরকার বিজয়ী হন। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৩০ হাজার ৮শত ৯১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের খতিবর রহমান ।নৌকা প্রতীকে তিনি পান ২৬ হাজার ৬৬ ভোট।
তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন মোস্তাফিজুর রহমান
১৯৮৬ সালের ৭মে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-১০ আসনটি নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়, দিনাজপুর-৫। নির্বাচনে ভোট প্রদান করেন ৮০ হাজার ৩ শত ১২ জন। আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৩৯ হাজার ১ শত ৪৭ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির অধ্যাপক মুকবুল হোসেন। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ১৫ হাজার ২ শত ৮৬ ভোট। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি।
চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হন মোহাম্মদ শোয়েব
১৯৮৮ সালের ৩রা মার্চ অনুষ্ঠিত চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ, বিএনপিসহ পরিচিত রাজনৈতিক দল গুলো অংশগ্রহণ করেনি। নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ শোয়েব বিজয়ী হন। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৫৫ হাজার ৩ শত ৫৬ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এম. রেজাউল আলম। তিনি পান ২৬ হাজার ৮ শত ১৬ ভোট।
পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বিজয়ী
১৯৯১ সালের ২৭ই ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে এই আসনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ২৮ হাজার ৯ শত ২৭ জন। ভোট প্রদান করেন ১লাখ ৪ হাজার ১শত জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বিজয়ী হন।নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৬৬ হাজার ৫ শত ৩৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির আব্দুল ওয়াহাব সরকার। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৪১ হাজার ৩৯ ভোট।
সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান সংসদ সদস্য নির্বাচিত
১৯৯৬ সালের ১২ই জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ২৮ হাজার ৯ শত ৭৮ জন। ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৭৭ হাজার ২ শত ৮৫ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৭১ হাজার ৩ শত ৬৩ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয় পার্টির আব্দুল ওহাব সরকার। লাঙ্গল প্রতীকে তিনি পান ৪৯ হাজার ১ শত ৫৩ ভোট।
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান পুন:নির্বাচিত
২০০১ সালের ২৭ই ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৯০ হাজার ৫৬ জন। ভোট প্রদান করেন ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬ শত ৭৪ জন। নির্বাচনে এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩ শত ৩৭ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির এজেডএম রেজাওয়ানুল হক। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ৯৮ হাজার ৮ শত ৮৩ ভোট।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার নির্বাচিত
২০০৮ সালের ২৯শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ২০ হাজার ৯ শত ৯৬ জন। ভোট প্রদান করেন ২লাখ ৯৩ হাজার ৮শত ৭০ জন। আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৬৪ হাজার ৪শত ১৯ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির এজেডএম রেজাওয়ানুল হক। ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ২৬ হাজার ৫ শত ২৯ ভোট।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার পুন:নির্বাচিত
২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৫ আসনে ভোট প্রদান করেন ৯৯ হাজার ৬ শত ৬৫ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ৯৩ হাজার ৫ শত ৭৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ওয়াকার্স পার্টির আফসার আলী। হাতুড়ি প্রতীকে তিনি পান ৩ হাজার ২ শত ২৪ ভোট। কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেনি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৫ আসনে ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৯৯ হাজার ২ শত ৪৩ জন। ভোট প্রদান করেন ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৯ শত ৯৮ জন। নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন ৬ জন।
নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির এজেডএম রেজাওয়ানুল হক, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির সোলাইমান সানি, হারিকেন প্রতীকে মুসলিম লীগের শফিকুল ইসলাম, আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শওকত আলী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বিজয়ী হন। নৌকা প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ৮৬ হাজার ৮০ ভোট । তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির এজেডএম রেজাওয়ানুল হক।।ধানের শীষ প্রতীকে তিনি পান ১ লাখ ২৮ হাজার ৫ শত ৫৬ ভোট। কারচুপির অভিযোগে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে।
দিনাজপুর-৫ আসন আওয়ামী লীগের পাল্লাই ভারি
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, দিনাজপুর-৫ আসনে প্রথম, তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম, একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিজয়ী হন। শুধুমাত্র দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি, চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা বিজয়ী হন। এতে দেখা যায়, দিনাজপুর-৫ সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের পাল্লাই ভারি।
প্রতিবেদনটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন। অন্যদের জানার সুযোগ দিন। লাইক ও সাবস্ক্রাইব করে ‘বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর ’ এর সঙ্গে থাকুন।
বিএনএ/এমএফ, ওয়াইএইচ