32 C
আবহাওয়া
১১:০০ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ১৪, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি ১০মাস সময় কী যথেষ্ঠ নয় ?

জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি ১০মাস সময় কী যথেষ্ঠ নয় ?

ইসির সিনিয়র সচিব হলেন আখতার আহমেদ

ঢাকা: সংস্কার আগে নাকি নির্বাচন আগে, বাংলাদেশে এই প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলছিল বিতর্ক। এমন পটভূমিতে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে।প্রশ্ন হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন কতটুকু প্রস্তুত? ১০মাস সময় কী যথেষ্ঠ নয় ?
এই সময়ের মধ্যে ভোট আয়োজন করতে নির্বাচন কমিশনকে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, সীমানা নির্ধারণ ও নির্বাচনি আইনগুলোও সংস্কার করতে হবে।

কিন্তু সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব চূড়ান্ত না হওয়ায় সীমানা নির্ধারণ, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন কিংবা নির্বাচনি আইন ও বিধানগুলো পরিবর্তনের কাজ শুরু করতে পারছে না ইসি।যে কারণে ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন আয়োজন করতেও এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, আগের আইন ধরে প্রস্তুতি নেয়ার পর যদি সংস্কারের মাধ্যমে আইন ও বিধান নতুন করে ঢেলে সাজানো হয় তাহলে অনেক কিছুই নতুন করে শুরু করতে হবে।

সেক্ষেত্রে ডিসেম্বরের মধ্যে আগামী নির্বাচন আয়োজন করতে তাদের বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হবে।

এদিকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করার বিষয়ও ভাবছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, “যদি ডিসেম্বরকে সামনে রাখি তাহলে আমাদের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে সমস্ত কাজ শেষ করতে হবে এবং সেইভাবেই আমরা এগোচ্ছি।”

কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আগামী নির্বাচন প্রস্তুতি শুরু করলেও কিছু কিছু বিষয়ে এখনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে।

হালনাগাদ তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এবার এমন প্রায় সাড়ে ১৮ লাখ নাগরিক ভোটার তালিকায় যুক্ত হচ্ছেন, যারা ২০২৬ সালের দোসরা জানুয়ারি ভোটারযোগ্য হবেন।

নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট শাখার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে ভোটার তালিকা বিধিতে একটা পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। না হলে ভোটগ্রহণের তারিখ ২০২৬ সালের দোসরা জানুয়ারির পরে করতে হবে।

ঢাকা বিভাগের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ইউনুচ আলী বলেন, “নির্বাচন প্রস্তুতির সবচেয়ে বড় কাজ ভোটার তালিকা হালনাগাদ। নির্বাচন কমিশন যে নির্দেশনা দিয়েছে সেই অনুযায়ী আমরা হালনাগাদ কাজ এগিয়ে নিচ্ছি।”

ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট হলে তরুণ ভোটারদের একটা বড় অংশ আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারবে না, যেটিকে বড় একটি সংকট হিসেবে দেখছে নির্বাচন কমিশন।

সংসদীয় আসনের সীমানা জটিলতা

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিভিন্ন দাবি-আপত্তির ওপর ভিত্তি করে সংসদীয় আসনের সীমানায় নানা পরিবর্তন এনেছিল অতীতের নির্বাচন কমিশনগুলো।

গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ১০টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনা হয়।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, জাতীয় সংসদের সীমানায় সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন আনা হয় ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে।

সে সময় এটিএম শামছুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন কমবেশি শতাধিক আসনের সীমানায় পরিবর্তন এনেছিল।

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ এখনো ঘোষণা হয়নি। তবে, এরই মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪১টি সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তনের আবেদন জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে।

নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী, ভৌগোলিক অখণ্ডতা, জনসংখ্যা ও ভোটার সংখ্যার বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করতে হয়।

নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, অতীতে কোনো কোনো নির্বাচন কমিশন সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে এই নিয়মগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ না করায় সংসদীয় আসনের সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা রয়েই গেছে।

যে কারণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনি ব্যবস্থা সংস্কারে যে কমিশন গঠন করেছিল সেই কমিশন সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে নতুন আইনের প্রস্তাব করেছে।

যদিও এখনও সেই সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত না হওয়ায় সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু করতে পারছে না কমিশন।

চলতি মাসে সীমানা সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে বৈঠকে করে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশনের একজন উপ-সচিব জানিয়েছেন, আইনে সংস্কার না হলেও ভোটার সংখ্যা, জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে কোন কোন আসনে কী কী পরিবর্তন করা প্রয়োজন সেগুলোর প্রাথমিক তালিকা প্রস্তত করে রাখছে নির্বাচন কমিশন।

তিনি জানান, এরই মধ্যে পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে জনসংখ্যার তথ্যগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। এরপর উপজেলা ও ইউনিয়নভিত্তিক যে ভোটার সংখ্যা রয়েছে সেটির তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে।

তবে শেষ পর্যন্ত সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা অনুযায়ী যদি বড় কোনো পরিবর্তন আসে কিংবা আসন সংখ্যা যদি বাড়ানো হয় সেক্ষেত্রে সীমানা নির্ধারণ নিয়ে জটিলতা বাড়বে কি-না এমন প্রশ্নও ছিল নির্বাচন কমিশনের কাছে।

জবাবে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, “সংস্কারের যে প্রস্তাবনাগুলো আছে সেগুলো কতটুকু আমাদের অ্যাড্রেস করতে হবে সেটির জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। তবে আমরা বিভিন্নভাবেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।”

ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপ ঘোষণা হলে সীমানা জটিলতা নিয়ে আরও বেশি সংখ্যক আবেদন ইসিতে জমা পড়তে পারে।

বিএনএ,এসজিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ