বিএনএ ডেস্ক : জামায়াত ইসলামীর এক সময়কার মিত্র বিএনপির সঙ্গে জুলাই বিপ্লবের পর থেকে বৈরি সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি দ্রুত নির্বাচন দাবি করলেও জামায়াত ইসলামী ‘যৌক্তিক সময়’ এর মারপ্যাচে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনির্ধারিত সময় দিতে চায়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য জামায়াত ইসলামীর ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তাদের সমর্থক অনেক আমলাকে, গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়েছে ড. ইউনূস সরকার।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, জামায়াত সারাদেশে সংগঠিত হলেও নির্বাচনে প্রতিযোগীতা করে ক্ষমতায় যেতে পারবে না। এই অবস্থায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন দিয়ে ক্ষমতায় দীর্ঘদিন টিকিয়ে রেখে দলকে গণমূখী ও শক্তিশালী করতে চায়।
কিন্তু বিএনপি’র জোরালো নির্বাচনের দাবি, ভূ-রাজনীতির পরিবর্তন ও নিয়ন্ত্রণহীন দ্রব্যমূল্য, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, বাজেটের আগে অত্যাধিক ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপ করে সাড়ে ৫ মাসের মধ্যে জনগণের আস্থা হারিয়েছে বর্তমান সরকার। এই ব্যর্থতার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে আমলাদের অসহযোগীতার কথা বলা হচ্ছে। ফলে খুব দ্রুত নির্বাচন দিয়ে, সম্মান নিয়ে প্রস্থান করতে চায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এই অবস্থায় বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা ও ভোটের মাঠে পরাজিত করতে জামায়াতে ইসলামী দেশের সব রাজনৈতিক দল গুলোকে এক মঞ্চে আনতে তৎপর হয়েছে।
তারই ধারাবাহিকতায় এক সময়ের চির বৈরি, বরিশালের চরমোনাইয়ে, গিয়ে চরমোনাই পীর পরিচিত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সাথে, বৈঠক করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। বৈঠকে তারা নির্বাচনে তাদের ভোট এক বাক্সে ভরতে চান। বলেন এক আল্লাহ’র জন্য এক মঞ্চে এসেছেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিমও জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের কথার প্রতিধ্বনি করেন।
রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নাই। আজকে যে শত্রু কাল সেই মিত্র। পরিবেশ পরিস্থিতি ও ক্ষমতার মোহে, কথাও বদল হয়ে যায়। অথচ ২০১৯ সালে এক মাহফিলে, জামায়াতের সঙ্গে হেফাজত ইসলামের সখ্যতার সমালোচনা করে চরমোনাইয়ের এই পীর, কখনো ঐক্য করবে না বলে ঘোষণা দেন।
জামায়াত ইসলামীর সঙ্গে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন শুধু ঐক্য না করার অঙ্গীকার না করে ক্ষান্ত হয়নি। ২০২১ সালে এক মাহফিলে বলেন, জামায়াতের কদম যেখানে লাগবে, সেখানে ধংস হয়ে গেছে। কোনো দেশ যদি জামায়াত দখল করে নেয়, তাহলে সেখানে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হবে না।
প্রশ্ন ওঠেছে, জামায়াত ইসলামীর সঙ্গে ঐক্য গড়ে তুলে চরমোনাই পীর সৈয়দ রেজাউল করিমের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কী এবার ধংস হয়ে যাবে?
প্রসঙ্গত, পাঁচই আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর সেনাপ্রধান; জামায়াতে ইসলামী, হেফাজত ও খেলাফত মজলিসের নেতাদের সাথে বৈঠকের পর, এই ঘরানার রাজনীতি, বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে বলেও অনেকে মনে করেন। এর বাইরে ইসলামি আন্দোলন রাজনীতিতে বেশ সক্রিয়।
বিএনএ/ সৈয়দ সাকিব